লঞ্চে ফিরতে শুরু করেছে মানুষ, কর্মচঞ্চল সদরঘাট
প্রিয়জনের সঙ্গে ঈদ কাটিয়ে ঢাকায় ফিরতে শুরু করেছে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ। ঈদুল ফিতরের ছুটির পর সোমবার (১৫ এপ্রিল) থেকে অফিস-আদালত খোলার কথা রয়েছে বলে রাজধানীতে পেশাজীবী শ্রমজীবী মানুষ ফিরতে শুরু করেছে। পরিবার নিয়ে গ্রামে ঈদ কাটিয়ে হাসিমুখে মানুষ কর্মস্থলের উদ্দেশ্যে রাজধানী ঢাকায় ফিরছেন। ফাঁকা ঢাকা ফের সরগরম ও কর্মচঞ্চল হতে শুরু করেছে বুড়িগঙ্গার তীরবর্তী সদরঘাট।
মানুষ ঢাকামুখী হওয়ায় ধীরে ধীরে চিরচেনা রাজধানী তার পুরনো চেহারায় ফিরছে। ঈদের পর ঘর থেকে শহরে ফেরা মানুষে আবারো কর্মচঞ্চল হয়ে উঠতে যাচ্ছে দক্ষিণবঙ্গের মানুষজনের চিরচেনা নৌপথ সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনাল। লঞ্চের হর্ন ও যাত্রীদের পদচারণায় সদরঘাট যেন আবার পূরনো রুপে ফিরেছে। কালবৈশাখী শঙ্কা থাকলেও তেমন পরিবেশ সৃষ্টি না হওয়ায় নিরাপদে ফিরতে পেরে আনন্দিত যাত্রীরা।
ঈদের তৃতীয় দিনে রোববার (১৪ এপ্রিল) সকালে খুব বেশি যাত্রীয় লঞ্চ টার্মিনালে না ফিরলেও, বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ভোলা, বরিশাল, কালীগঞ্জ, চাঁদপুর থেকে রাজধানী মুখী যাত্রী নিয়ে লঞ্চ ঢাকায় ফিরতে শুরু করেছে। টার্মিনালে লোকজনের সাথে কথা বলে জানা গেছে, পহেলা বৈশাখে রাজধানী ঢাকার বাইরে সদরঘাট থেকে যাত্রীসহ লঞ্চ খুব কমই গেছে। তবে এদিন বাইরে থেকে ফিরতি যাত্রী ঢাকায় আসা শুরু করেছে। সকালে ঘর মুখো মানুষ ঢাকায় খুব বেশি না ফিরলেও দুপুর থেকে লঞ্চ ভর্তি যাত্রী ফিরতে শুরু করেছে।
দুপুরে সরজমিন ঘুরে দেখা গেছে, ভোলা থেকে ছেড়ে আসা ঈগল-৪ লঞ্চটি ঘাটে ভেড়ার সাথে সাথে যাত্রীরা হুড়োহুরি করে নামতে শুরু করে। যাত্রীদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, রোববার ছুটি শেষ, সোমবার, অফিস-আদালত মার্কেট সবকিছু খোলা হবে, তাই চলে আসলাম। ভাড়া কেমন নিয়েছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এখন তো মাত্র ফিরা শুরু হয়েছে মানুষের চাে কম, ভাড়া বেশি নেয়নি।
ভোলা থেকে আসা বেসরকারি একটি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন, পরিবারের সঙ্গে ঈদ কাটিয়ে আবার ঢাকায় ফিরলাম। আসতে তেমন কোন ভোগান্তি হয়নি। ঝড় নিয়ে আতঙ্ক ছিল, কী হয় না হয়। ভালোভাবে পৌঁছে গেছি। একই ঘাটে পাশেই চাঁদপুর থেকে এমবি কর্ণফুলী লঞ্চটি তার সাত আট মিনিট আগে ঘাটে ভীড়ে। সেই লঞ্চ থেকেও থেকেও যাত্রী নেমে আসছে ঘাটে।
এদিকে চাঁদপুরগামী গ্রীন লাইন মাঝারি পাকৃতির লঞ্চটি যাত্রী নিয়ে ছেড়ে গেছে। আর এমভি জামান -৯ লঞ্চে তোলার জন্য যাত্রীদের ডাকছে। এই লঞ্চের কর্মচারী শামসুল ইসলাম বলেন, আজ যাত্রী ঢাকা ছাড়ার অবস্থা আগের মতো স্বাভাবিক। ঈদের কয়েকদিন আগে এবং ঈদের পরের দিন যাচ্ছি ঢাকা ছাড়া যে চাপ ছিল সেটি এখন আর নেই। আজ ঢাকায় ফিরতে শুরু করেছে মানুষজন। এখন যাত্রী না পেলেও আমরা আমরা সদরঘাট ছাড়বো যাত্রী নিয়ে ঢাকায় ফিরব।
রাজধানীর সদর ঘাট লঞ্চ টার্মিনালে গিয়ে দেখা যায়, ঈদের টানা ছুটি শেষে রাজধানীমুখী যাত্রীদের পদচারণায় সদরঘাট যেন কিছুটা স্বরূপে ফিরে এসেছে। হকারদের হাক ডাক, লঞ্চের হর্ন, রিকশা, সিএনজি চালকদের হাক ডাকে কর্মচঞ্চলতা ফিরে পেয়েছে। এদিন দুপুট থেকে বরিশাল, ভোলা, ঝালকাঠি, পিরোজপুর, বরগুনা, চরফ্যাশন, হুলারহাট, ভান্ডারিয়া, লালমোহনসহ দেশের বিভিন্ন রুটের যাত্রী বোঝাই লঞ্চ টার্মিনালে ভিড়তে থাকে। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে টার্মিনালে লঞ্চ ও যাত্রীও বাড়তে থাকে।
নৌ যান সংশ্লিষ্টরা বলছেন, রোববার ঘাটে ঈদের পরের দিনের তুলনায় লঞ্চ ও যাত্রী দুটোই কম। তবে এখন ঢাকায় ফেরার পালা। অফিস পুরোদমে শুরু হবে। ফলে সকাল থেকেই ঘাটে লঞ্চ আসতে শুরু করেছে, কিছু লঞ্চ ছেড়েও গেছে। পুলিশ বাহিনী সার্বক্ষণিক সতর্ক আছে। পরিস্থিতি আমাদের নিয়ন্ত্রণে আছে।
এফএইচ/এমআইএইচএস