নৌ প্রতিমন্ত্রী
আন্তর্জাতিক চাপে নাবিকরা মুক্ত, মুক্তিপণ দেওয়ার তথ্য নেই
আন্তর্জাতিক চাপ ও আলোচনার মাধ্যমে সোমালিয়ার জলদস্যুদের হাত থেকে জিম্মি বাংলাদেশি জাহাজ এমভি আবদুল্লাহ ও এর ২৩ নাবিক মুক্ত হয়েছেন বলে জানিয়েছেন নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী। জলদস্যুদের মুক্তিপণ দেওয়ার বিষয়ে কোন তথ্য তার জানা নেই বলেও জানয়েছেন প্রতিমন্ত্রী।
রোববার (১৪ এপ্রিল) রাজধানীর মিন্টু রোডে প্রতিমন্ত্রী নিজ বাসভবনে সাংবাদিকদের এ কথা জানান। ৩১ দিন পর মুক্তি পেয়েছেন বাংলাদেশি নাবিকরা। গত ১২ মার্চ বাংলাদেশ সময় দুপুর ১টার দিকে ভারত মহাসাগরে সোমালিয়ান জলদস্যুদের কবলে পড়ে বাংলাদেশি জাহাজ ও নাবিকরা।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘টাকা-পয়সা কিংবা মুক্তিপণের সঙ্গে আমাদের কোনো ইনভলমেন্ট নাই। টাকা দিয়ে জাহাজ ছাড়িয়ে আনা হয়েছে, এমন কোনো তথ্য আমাদের কাছে নেই। অনেকেই বিভিন্ন ধরনের ছবি দেখাচ্ছেন, এ সব ছবির কোনো সত্যতা নেই। ছবিগুলো কোথা থেকে আসতেছে, কীভাবে আসতেছে- সেটা আমরা জানি না।’
প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘এটা যতটুকু হয়েছে আমাদের ডিপার্টমেন্ট অব শিপিং আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংস্থা ইউরোপিয়ান নেভাল, ভারতীয় নৌ-বাহিনী, সোমালিয়ান পুলিশ... আমি সোমালিয়া পান্টল্যান্ড পুলিশকে ধন্যবাদ দিতে চাই, তারা সার্বক্ষণিকভাবে আমাদের সহযোগিতা করেছে। আন্তর্জাতিক মেরিটাইমের যে উইংগুলো রয়েছে, তারা আমাদের খুবই সহায়তা করেছে।’
তাহলে মুক্তিপণ লাগেনি- এ বিষয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা তাদের সঙ্গে নেগোসিয়েশন করেছি দীর্ঘদিন। এখানে মুক্তিপণের কোনো বিষয় নেই। আমাদের আলাপ-আলোচনা এবং বিভিন্ন ধরনের চাপ আছে। সেই চাপগুলোও এখানে কাজে দিয়েছে।’
‘জলদস্যুরা একেবারে সর্বশক্তিমান, ব্যাপারটা তো এমন নয় তো। তারা ভীষণ চাপের মধ্যে ছিল, সোমালিয়ান পুলিশের বিরাট একটা চাপ ছিল। জলদস্যুরা একটি দেশের ইমেজ নষ্ট হচ্ছে, এটা তারা (সোমালিয়ান পুলিশ) উপলব্ধি করছে, সেই উপলব্ধি থেকে তারা খুবই সজাগ ছিল এবং জলদস্যুদের তাদের নিয়ন্ত্রণে নেওয়ার জন্য তারা খুবই তৎপর ছিল।’
আরও পড়ুন:
- জলদস্যুদের হাতে জিম্মি বাংলাদেশি ২৩ নাবিক মুক্ত
- সোমালিয়ান জলদস্যুদের দখলে বাংলাদেশি জাহাজ, ২৩ নাবিক জিম্মি
- জলদস্যুরা সোমালিয়ায় নিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশি জাহাজ
তাহলে কি মুক্তিপণ ছাড়া আন্তর্জাতিক চাপের মাধ্যমে জাহাজ এবং নাবিকদের মুক্ত করা হলো- এ বিষয় দৃষ্টি আকর্ষণ করলে খালিদ মাহমুদ বলেন, ‘আন্তর্জাতিক চাপ এবং নেগোসিয়েশনও আছে। তাদেরও (জলদস্যু) জীবনের নিরাপত্তার ব্যাপার ছিল। চাপটা তো তাদের ওপর সার্বক্ষণিকই ছিল।’
খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ‘একটা চরম পর্যায়ে গিয়েছিল, সেই কারণেই তারা সেখান (জাহাজ) থেকে নেমে গেছে। চাপটা এত ছিল, তারা যখন জাহাজটা নিয়ন্ত্রণে নেয় সেখানে ২০ জন ছিল জলদস্যু, গতকালকে তারা যখন জাহাজ ছেড়ে যায় ইতিমধ্যে প্রায় ৬৫ জন জলদস্যু জাহাজে অবস্থান নিয়েছিল। মূল ভূখণ্ডে তাদের কী পরিমাণ চাপ ছিল, সেটা বুঝতে হবে। গতকালকে সবাই একসঙ্গে সেখান (জাহাজ) থেকে চলে গেছে। দুই নটিক্যাল মাইলের মধ্যে তাদের ঘিরে ফেলা হয়েছিল। অন্যান্য ফ্লিকগুলো (বিভিন্ন বাহিনী) অবস্থান করছিল যখন তারা চলে যায় সেই মুহূর্তে। তারা বুঝতে পেরেছিল আমাদের জীবন নিরাপদ না।’
‘আমাদের সমুদ্র পরিবহন অধিদপ্তর সেই মুহূর্তে তাদের সঙ্গে কথা বলে ফ্লিকগুলোকে একটু দূরে দিয়ে তাদের যেতে সহায়তা করেছে। আমি জানি না ভুল ভূখণ্ডে যাওয়ার পর জলদস্যুদের কি অবস্থা হয়েছে না হয়েছে।’
এটা একটা বিশাল কর্মযজ্ঞ ছিল জানিয়ে নৌপ্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘যতগুলো মেইল করেছি সেগুলো এক জায়গায় করলে বড় একটা বাস্কেট ভরে যাবে। প্রতি মুহূর্তে আমাদের করেসপন্ডেন্ট রাখতে হয়েছে। আমরা এত তৎপর এবং এত সিরিয়াস ছিলাম- এটা সবাই উপলব্ধি করেছে।’
ভবিষ্যতে যাতে এমন অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা না ঘটতে পারে সেজন্য সমুদ্র পরিবহন অধিদপ্তর পদক্ষেপ নেবে বলেও জানিয়েছেন প্রতিমন্ত্রী।
আরএমএম/জেএইচ/জেআইএম
সর্বশেষ - জাতীয়
- ১ গুমের সঙ্গে জড়িত সেনা-পুলিশের ২০ কর্মকর্তার দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা
- ২ শেখ হাসিনা ও তার পরিবারের দুর্নীতি অনুসন্ধানে ৫ কর্মকর্তা নিয়োগ
- ৩ প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে কায়রোতে মালয়েশিয়ার মন্ত্রীর সাক্ষাৎ
- ৪ রেমিট্যান্সযোদ্ধাদের হাসিমুখে বরণ করুন: রাষ্ট্রদূত মুশফিক
- ৫ কৃষিজমিতে রাসায়নিক সারের ব্যবহার ভয়াবহ অবস্থায় পৌঁছেছে