মেডিকেল-নার্সিং কলেজ
আসবাবপত্র কিনতেই ৩২ কোটি, ব্যয় নিয়ে প্রশ্ন কমিশনে
পরিকল্পনা কমিশনে ‘রাঙ্গামাটি মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল এবং নার্সিং কলেজ স্থাপন’ প্রকল্পের প্রস্তাব করেছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। প্রকল্পের মোট প্রস্তাবিত ব্যয় এক হাজার ৩৪২ কোটি ২৫ লাখ ৫৩ হাজার টাকা। প্রকল্পের আওতায় মোট ১৬ হাজার ৩৮৫টি আসবাবপত্রের জন্য ৩২ কোটি ৫৫ লাখ টাকা প্রাক্কলন করা হয়েছে, যা অত্যধিক বলে দাবি করেছে কমিশন। এটি পুনরায় যাচাই করে যৌক্তিক প্রাক্কলন করা সমীচীন হবে বলেও মতামত দেওয়া হয়েছে।
এক্ষেত্রে গণপূর্ত অধিদপ্তরের কাঠের কারখানা বিভাগের দর অনুসরণের বিষয়ে আলোচনা করা যেতে পারে বলে জানিয়েছে কমিশন। আসবাবপত্র খাতে বাংলাদেশ বনশিল্প উন্নয়ন করপোরেশনের (বিএফআইডিসি) মূল্যতালিকা ২০১৯-২০ অনুযায়ী, প্রকল্প কার্যালয়ে ৫১টি, মেডিকেল কলেজে ৭ হাজার ৫৭৪টি, নার্সিং কলেজে ২ হাজার ৭২টি ও মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে ৬ হাজার ৬৮৮টিসহ মোট ১৬ হাজার ৩৮৫টি আসবাবপত্র ৩২ কোটি ৫৫ লাখ টাকায় কেনা হবে। এ ব্যয় প্রস্তাবকে অন্য মেডিকেল কলেজগুলোর তুলনায় অনেক বেশি বলে মনে করেছে কমিশন।
অনুমোদন পেলে রাঙ্গামাটি সদর পৌরসভার এ প্রকল্পটি ডিসেম্বর ২০২৭ নাগাদ বাস্তবায়ন করতে চায় স্বাস্থ্য অধিদদপ্তর। তবে প্রস্তাবিত প্রকল্পে কিছু খাতের ব্যয় নিয়ে নানা প্রশ্ন তুলেছে কমিশন। সম্প্রতি প্রকল্পটি নিয়ে পরিকল্পনা কমিশনে প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটির (পিইসি) সভা হয়েছে। সভায় প্রকল্পের নানা খাতের ব্যয় প্রস্তাবে অসঙ্গতি ধরা পড়েছে কমিশনের চোখে।
বিএফআইডিসির মূল্যতালিকা ২০১৯-২০ অনুযায়ী, প্রকল্প কার্যালয়ে ৫১টি, মেডিকেল কলেজে ৭ হাজার ৫৭৪টি, নার্সিং কলেজে ২ হাজার ৭২টি ও মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে ৬ হাজার ৬৮৮টিসহ মোট ১৬ হাজার ৩৮৫টি আসবাবপত্র ৩২ কোটি ৫৫ লাখ টাকায় কেনা হবে। এ ব্যয় প্রস্তাবকে অন্য মেডিকেল কলেজগুলোর তুলনায় অনেক বেশি বলে মনে করেছে কমিশন
এ প্রসঙ্গে আর্থ-সামাজিক অবকাঠামো বিভাগের প্রধান (অতিরিক্ত সচিব) মো. আব্দুর রউফ জাগো নিউজকে বলেন, ‘রাঙ্গামাটি মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল এবং নার্সিং কলেজ স্থাপন’ প্রকল্পের পিইসি সভা হয়েছে। আমরা প্রকল্পের কিছু ব্যয় সম্পর্কে জানতে চেয়েছি। এ বিষয়ে রেজুলেশন তৈরি হচ্ছে। আমরা স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে রেজুলেশন পাঠাবো। সে মোতাবেক প্রকল্পের ডিপিপি (উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাব) পুনর্গঠন করা হবে। এরপরই আমরা পরবর্তী পদক্ষেপ নেবো।
আরও পড়ুন
হাসপাতাল নির্মাণে ৩৩ লাখ টাকা সম্মানী ভাতা আবদার
ভবঘুরে নিবাস নির্মাণ প্রস্তাবে পরামর্শক ব্যয় ২০ কোটি
পরিকল্পনা কমিশন জানায়, প্রকল্পের আওতায় চার বছরের জন্য চারজনের (১৯২ জনমাস) প্রেষণে নিয়োগ এবং তিনটি (১৪৪ জনমাস) আউটসোর্সিং সেবাসহ জনবল প্রস্তাব করা হয়েছে। এক্ষেত্রে জনবলের বিষয়ে অর্থ বিভাগের সুপারিশ ডিপিপিতে (উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাবনা) সংযুক্ত নেই। প্রকল্পের আর্থিক ও অর্থনৈতিক বিশ্লেষণ করা হয়নি। এক্ষেত্রে পূর্ণাঙ্গ সম্ভাব্যতা যাচাই প্রতিবেদন ডিপিপিতে সংযুক্ত করা প্রয়োজন। প্রকল্পের যৌক্তিকতার লক্ষ্যে উপযুক্ত মানদণ্ডের ভিত্তিতে আর্থিক ও অর্থনৈতিক বিশ্লেষণ করা সমীচীন হবে।
প্রকল্পটি রেড ক্যাটাগরিভুক্ত হলেও প্রকল্পের বিষয়ে পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র ডিপিপিতে নেই। পরিবেশ সংরক্ষণ আইন-১৯৯৫ (সংশোধিত ২০১০) অনুযায়ী, এ সংক্রান্ত ছাড়পত্র সংগ্রহ এবং এজন্য সুনির্দিষ্ট কোডে অর্থ বরাদ্দ রাখা প্রয়োজন। মোটরযান ক্রয়ের আওতায় চারটি মাইক্রোবাস, তিনটি অ্যাম্বুলেন্স এবং একটি মিনিবাস কেনার জন্য চার কোটি ৩৭ লাখ টাকা প্রস্তাব করা হয়েছে।
অর্থ বিভাগের পরিপত্রে যানবাহন ক্রয়ে বিধি-নিষেধ থাকায় মোটরযান ক্রয় প্রস্তাব এবং সেই সংশ্লিষ্ট পেট্রোল ওয়েল অ্যান্ড লুব্রিকেন্ট, গ্যাস ও জ্বালানি এবং মোটরযান মেরামত খাতসমূহ বাদ দিয়ে ডিপিপি পুনর্গঠন করা যৌক্তিক হবে। রোগী সেবার স্বার্থে মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জন্য অ্যাম্বুলেন্স সংগ্রহ এবং তা টিওঅ্যান্ডই (টেবিল অব অফিসিয়াল অ্যান্ড ইক্যুপমেন্ট) ভুক্তকরণের প্রস্তাব বিবেচনা করা যেতে পারে।
নির্মাণ ও পূর্ত কাজের আওতায় ২৭ দশমিক ৭৮ একর জায়গায় মেডিকেল কলেজের একাডেমিক ভবন, হাসপাতাল ভবন, নার্সিং কলেজ, হোস্টেল ও ডরমিটরিসহ প্রায় ২২টি আবাসিক/অনাবাসিক ভবনের ফ্লোর প্ল্যান দেওয়া হয়েছে। এক্ষেত্রে সম্পূর্ণ কমপ্লেক্সের পূর্ণাঙ্গ লে-আউট প্ল্যান ডিপিপিতে সংযোজন করা প্রয়োজন
প্রকল্পে হায়ারিং চার্জ (একটি মাইক্রোবাস ও একটি ট্রাক-১৬৮ জনমাস) বাবদ ৮২ লাখ ৮০ হাজার টাকা প্রস্তাব করা হলেও পরিবহন সেবার বিষয়ে অর্থ বিভাগের সুপারিশ নেই। এক্ষেত্রে অর্থ বিভাগের সুপারিশ গ্রহণ করে সে অনুযায়ী হায়ারিং খাতের সংস্থান করা সমীচীন হবে।
পরিকল্পনা কমিশন আরও জানায়, নির্মাণ ও পূর্ত কাজের আওতায় ২৭ দশমিক ৭৮ একর জায়গায় মেডিকেল কলেজের একাডেমিক ভবন, হাসপাতাল ভবন, নার্সিং কলেজ, হোস্টেল ও ডরমিটরিসহ প্রায় ২২টি আবাসিক/অনাবাসিক ভবনের ফ্লোর প্ল্যান দেওয়া হয়েছে। এক্ষেত্রে সম্পূর্ণ কমপ্লেক্সের পূর্ণাঙ্গ লে-আউট প্ল্যান ডিপিপিতে সংযোজন করা প্রয়োজন। এছাড়া মসজিদ, বৌদ্ধ মন্দির, বর্জ্য পরিশোধন প্ল্যান্ট, অক্সিজেন ট্যাঙ্ক, মর্গ, অ্যাম্ফিথিয়েটার, ব্রিজ, সাব-স্টেশনসহ অন্যান্য ভবন ও আনুষঙ্গিক কাজের বিবরণ, প্ল্যান/নকশা ডিপিপিতে সংযুক্ত নেই, যা সংযুক্ত করা জরুরি।
কমিশন বলছে, ডিপিপির প্রাক্কলন এবং ডিটেইল্ড ফ্লোর প্ল্যানে হসপিটাল ভবন ও একাডেমিক ভবনের জন্য সাত তলা ভবন নির্মাণের কথা থাকলেও অনুমোদিত মাস্টার প্ল্যানে ছয় তলা ভিতে ছয় তলা ভবন নির্মাণের বিষয় উল্লেখ রয়েছে, যা সামঞ্জস্যপূর্ণ করা দরকার। অন্যদিকে, বৌদ্ধ মন্দিরের জন্য অনুমোদিত মাস্টার প্ল্যানে তিন তলা ভিতে তিন তলা ভবন নির্মাণের কথা থাকলেও ডিপিপিতে দুই তলা ভিতে দুই তলা ভবন নির্মাণের প্রাক্কলন করা হয়েছে। এটিও সামঞ্জস্যপূর্ণ করা প্রয়োজন বলে সভায় আলোচনা হয়েছে।
আরও পড়ুন
প্রকল্পের আনুষঙ্গিক কাজের আওতায় সংস্থানকৃত চারটি ব্রিজসহ রোড, অ্যাপ্রোচ রোড এবং পার্কিং ইত্যাদি কাজের দৈর্ঘ্য ও প্রস্থসহ বিস্তারিত নকশা ও লে-আউট প্ল্যান ডিপিপিতে সংযোজন করা প্রয়োজন। প্রস্তাবিত সব ভবনের (২ তলা পর্যন্ত) পাইল ফাউন্ডেশন প্রস্তাব করা হয়েছে। এক্ষেত্রে এর যৌক্তিকতা জানা প্রয়োজন। প্রি- কাস্ট পাইলের ক্ষেত্রে লোড টেস্টের সংস্থান রাখা প্রয়োজন। এছাড়া এসটিপিতে (স্যুয়ারেজ ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট) ৮ কোটি ৫৯ লাখ এবং মেডিকেল বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় ৬ কোটি টাকা প্রস্তাব করা হয়েছে। নির্মাণ দর প্রাক্কলনের ভিত্তি জানা দরকার বলে মনে করে কমিশন।
প্রকল্পের আওতায় অগ্নিনির্বাপণ প্রতিরোধ ব্যবস্থায় ৮ কোটি, মেডিকেল গ্যাস পাইপ লাইনে ৯ কোটি, অগ্নিনির্বাপণ ওয়াটার রিজার্ভার পানি সরবরাহ লাইন/রেইন ওয়াটার হার্ভেস্টিংয়ে ৭ কোটি ২৪ লাখ এবং ডিপ-টিউবওয়েল খাতে ৯৬ লাখ ইত্যাদি ব্যয় প্রাক্কলনের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট উপযুক্ত সংস্থার ব্যয় প্রাক্কলন বা ডিমান্ড নোট ডিপিপিতে সংযুক্ত করা দরকার।
পিইসি সভায় পরিকল্পনা কমিশন কিছু সিদ্ধান্ত দিয়েছে। সেটা রিভাইজড করে পুনরায় কমিশনে পাঠানো হবে। কিছু খাতের ব্যয় সম্পর্কে কমিশন জানতে চেয়েছে, সেগুলো জানানো হবে। কমিশনের মিটিংয়ের সিদ্ধান্ত মোতাবেক আমরা ডিপিপি রিভাইজড করবো। এরপরই তা কমিশনে পাঠাবো। আমরা চাই দ্রুত সময়ে প্রকল্পটি অনুমোদন পাক। কারণ, এ প্রকল্প আমাদের দেশের প্রেক্ষাপটে খুবই গুরুত্বপূর্ণ
প্রকল্পের ক্রয় পরিকল্পনায় পণ্যের ক্ষেত্রে ১৬টি, ই/এম পণ্য ৯টি পূর্তকাজে ২৩টি এবং সেবা কার্যক্রমে তিনটিসহ মোট ৫১টি প্যাকেজ প্রস্তাব করা হয়েছে। এক্ষেত্রে সমজাতীয় আইটেমসমূহ একই প্যাকেজে রেখে প্যাকেজের সংখ্যা যৌক্তিকভাবে কমানো যেতে পারে, বলছে কমিশন।
এ প্রসঙ্গে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (পরিকল্পনা ও উন্নয়ন) মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা জাগো নিউজকে বলেন, প্রকল্পের পিইসি (প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটি) সভা হয়েছে। সভায় পরিকল্পনা কমিশন কিছু সিদ্ধান্ত দিয়েছে। সেটা রিভাইজড করে পুনরায় কমিশনে পাঠানো হবে। কিছু খাতের ব্যয় সম্পর্কে কমিশন জানতে চেয়েছে, সেগুলো জানানো হবে। কমিশনের মিটিংয়ের সিদ্ধান্ত মোতাবেক আমরা ডিপিপি রিভাইজড করবো। এরপরই তা কমিশনে পাঠাবো। আমরা চাই দ্রুত সময়ে প্রকল্পটি অনুমোদন পাক। কারণ, এ প্রকল্প আমাদের দেশের প্রেক্ষাপটে খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
প্রকল্পের উদ্দেশ্য
মানসম্পন্ন চিকিৎসক ও নার্স তৈরি করে দেশের স্বাস্থ্য জনবল চাহিদা পূরণ এবং প্রকল্পের আওতায় সৃষ্ট সুবিধাদির সহায়তায় রাঙ্গামাটি এবং তার পার্শ্ববর্তী জেলাসমূহের জনসাধারণকে উন্নতমানের সাধারণ ও বিশেষায়িত চিকিৎসাসেবা দেওয়ার মাধ্যমে মানব স্বাস্থ্যের উন্নতি করা।
মানসম্পন্ন চিকিৎসক ও নার্স তৈরি; রাঙ্গামাটি ও আশপাশের জেলাসমূহের জনসাধারণের জন্য আধুনিক ও বিশেষায়িত সেবা প্রদানের প্রয়োজনীয় সুবিধাদি সৃষ্টি; সৃষ্ট সুবিধাদির মাধ্যমে রাঙ্গামাটি এবং তার পার্শ্ববর্তী জেলার জনসাধারণকে উন্নতমানের সাধারণ ও বিশেষায়িত চিকিৎসাসেবা দেওয়ার মাধ্যমে মানুষের অসুস্থতা ও মৃত্যুহার কমানো; জীবনমান উন্নয়ন; চিকিৎসক, নার্স এবং অন্য স্বাস্থ্যবিষয়ক কারিগরি জনবলের শিক্ষা, দক্ষতা বৃদ্ধি এবং কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করা।
প্রকল্পের লক্ষ্য
৬০০ শয্যাবিশিষ্ট একটি ৭ তলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ভবন নির্মাণ; মেডিকেল কলেজের একটি ৭ তলাবিশিষ্ট একাডেমিক ভবন নির্মাণ; ছয় তলাবিশিষ্ট একটি নার্সিং কলেজ ভবন এবং একটি নার্সিং হোস্টেল নির্মাণ; মেডিকেল কলেজের ছাত্র ও ছাত্রীদের জন্য দুটি করে ৬ তলা হোস্টেল নির্মাণ।
এছাড়াও ৬ তলাবিশিষ্ট দুটি করে ইন্টার্ন ডক্টরস ডরমিটরি (নারী ও পুরুষ) নির্মাণ; অধ্যক্ষ ও পরিচালকের জন্য একটি করে দোতলা আবাসিক ভবন নির্মাণ; ছয় তলাবিশিষ্ট দুটি ইমার্জেন্সি স্টাফ ডরমিটরি নির্মাণ (নারী ও পুরুষ) করা হবে।
আরও পড়ুন
- কেনার কথা ছিল মরদেহবাহী গাড়ি, কেনা হলো মাইক্রোবাস
- ভিত্তি স্থাপনের ৫ বছরেও শুরু হয়নি হাসপাতাল নির্মাণ
প্রকল্পের আওতায় ছয় তলাবিশিষ্ট একটি করে নার্স ডরমিটরি নির্মাণ (নারী ও পুরুষ); ছয় তলাবিশিষ্ট দুটি সিনিয়র টিচার একোমোডেশন ভবন নির্মাণ (নারী ও পুরুষ); নভেম্বর ২০২৭ সালের মধ্যে যন্ত্রপাতি ও আসবাবপত্র সংগ্রহ এবং ডিসেম্বর ২০২৭ সালের মধ্যে দুই হাজার ২৯১ জন জনবল নিয়োগ দেওয়া হবে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, বর্তমানে বাংলাদেশে ৩৭টি সরকারি মেডিকেল কলেজসহ মোট ১১৩টি মেডিকেল কলেজ রয়েছে। প্রতি বছর মেডিকেল কলেজে ১০ হাজার ২৯৯ জন ছাত্রছাত্রী ভর্তি হন। বিশাল জনসংখ্যার এ দেশে চিকিৎসা শিক্ষার সীমিত সুযোগের কারণে বাংলাদেশে চিকিৎসকের অনুপাত প্রতি ১০ হাজার জনসংখ্যার মাত্র ৬:৩ এবং রেজিস্ট্রার্ড নার্স ও মিডওয়াইফের অনুপাত প্রতি ১০ হাজার জনসংখ্যায় ৪:১। যা আন্তর্জাতিক মানদণ্ডের তুলনায় অনেক কম।
এছাড়া দেশে প্রতি ১০ হাজার জনসংখ্যার জন্য হাসপাতালে শয্যা সংখ্যার অনুপাত ৮:৮, যার মধ্যে সরকারি ৩:৩ ও বেসরকারি ৫:৫। সর্বোপরি দেশের বিভিন্ন জায়গায় বিশেষায়িত হাসপাতাল না থাকায় বিভিন্ন জটিল রোগের গুণগত মানের স্বাস্থ্যসেবা প্রদানের হার প্রত্যাশার তুলনায় অপ্রতুল। মেডিকেল ও নার্সিং গ্র্যাজুয়েটের চরম সংকট থেকে উত্তরণের লক্ষ্যে নতুন মেডিকেল কলেজ এবং নার্সিং কলেজ স্থাপন করে ছাত্রছাত্রী ভর্তির সংখ্যা বাড়ানো প্রয়োজন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর মনে করে, জনসংখ্যা বৃদ্ধি, অর্থনৈতিক অবস্থা, অসংক্রামক ব্যাধির ক্রমবৃদ্ধি বিবেচনায় তৃতীয় পর্যায়ের নিরাময় চিকিৎসা সুগম করতে সরকারি মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল স্থাপনও জরুরি। রাঙ্গামাটি ও এর পার্শ্ববর্তী জেলাসমূহে মেডিকেল ও নার্সিং গ্রাজুয়েট ভর্তি এবং বিশেষায়িত হাসপাতালের শয্যা সংখ্যা বাড়ানোর মাধ্যমে স্বাস্থ্যসেবা প্রদানের সক্ষমতা বাড়াতে স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের আওতায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর প্রকল্পটি হাতে নিতে যাচ্ছে।
এমওএস/এমকেআর/এমএস
সর্বশেষ - জাতীয়
- ১ ‘গণঅভ্যুত্থানে আহতরা চিকিৎসা পাচ্ছেন না, রাষ্ট্র কি ঘুমিয়ে আছে?’
- ২ পর্তুগালে ইউএনএওসি গ্লোবাল ফোরামে অংশ নেবেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা
- ৩ এলডিসি দেশগুলোকে ২০০ বিলিয়ন ডলার বরাদ্দে সমর্থন চাইলো বাংলাদেশ
- ৪ চট্টগ্রামে বিদেশি পিস্তলসহ ৩ কারবারি গ্রেফতার
- ৫ ৪ ঘণ্টা পর ঢাকা থেকে পদ্মা সেতু হয়ে ট্রেন চলাচল শুরু