ভিডিও EN
  1. Home/
  2. জাতীয়

২৫ দিন শেকলে বেঁধে তরুণীকে ধর্ষণ, লোমহর্ষক বর্ণনা দিলো পুলিশ

নিজস্ব প্রতিবেদক | প্রকাশিত: ০৩:৫৪ পিএম, ০১ এপ্রিল ২০২৪

রাজধানীর মোহাম্মদপুর নবীনগর হাউজিংযের একটি ভবন থেকে শেকলবন্দি অবস্থায় এক তরুণীকে উদ্ধার করেছে থানা পুলিশ। জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯ এর ফোনকলে ওই তরুণীকে উদ্ধার করা হয়।

পুলিশ বলছে, ভুক্তভোগী তরুণীর সঙ্গে ব্যারিস্টার মাসুদ নামের এক আইনজীবীর প্রেমের সম্পর্ক ছিল। মাসুদের অনুপস্থিতিতে সান নামের এক ছেলের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কে জড়ানোয় ক্ষিপ্ত হয় মাসুদ। প্রতিশোধ নিতে টাকার প্রলোভন দেখিয়ে সান ও তার বন্ধুদের দিয়ে ভুক্তভোগী তরুণীকে শেকলে বেঁধে শারীরিক ও যৌন নির্যাতন চালানো হয়। এতে সহযোগিতা করেন মোছা. সালমা ওরফে ঝুমুর নামের এক নারী। তিনি নির্যাতন ও বিকৃত যৌনাচারের ভিডিও ধারণ করে ব্যারিস্টার মাসুদের কাছে পাঠাতেন।

২৩ বছর বয়সী এ তরুণীকে বন্দি অবস্থায় ধর্ষণ, নির্যাতন ও ভিডিও ধারণের ঘটনায় জড়িত চারজনকে গ্রেফতার করেছে মোহাম্মদপুর থানা পুলিশ।গ্রেফতাররা হলেন- ভুক্তভোগী তরুণীর বর্তমান প্রেমিক সান ও তার দুই বন্ধু হিমেল, রকি এবং সালমা ওরফে ঝুমুর। রোববার (৩১ মার্চ) রাতভর টানা অভিযান চালিয়ে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়।

সোমবার (১ এপ্রিল) দুপুরে রাজধানীর শ্যামলীর নিজ কার্যালয়ে এ কথা বলেন ডিএমপির তেজগাঁও বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) এইচ এম আজিমুল হক।

ঘটনার বিবরণ দিয়ে তিনি বলেন, বাবা-মায়ের মধ্যে বিচ্ছেদ এবং পরে তারা অন্যত্র বিয়ে করায় ভুক্তভোগী তরুণী তার বড় বোনের বাসায় থাকতেন। সে সময় ভগ্নিপতির মাধ্যমে ব্যারিস্টার মাসুদ নামের এক আইনজীবী সঙ্গে পরিচয় হয় ওই তরুণীর। মাসুদের সঙ্গে লিভ-টুগেদার করতেন ওই তরুণী। মাসুদ বেশিরভাগ সময় বিদেশে থাকতেন। সে দেশে এলে ওই তরুণীর সঙ্গে থাকতেন। পরে মাসুদের মাধ্যমে এক প্রবাসীর স্ত্রী সালমা ওরফে ঝুমুরের সঙ্গে পরিচয় হয় ওই তরুণীর। একপর্যায়ে সালমার সঙ্গে মোহাম্মদপুরের নবীনগরের ভাড়া ফ্ল্যাটে ওঠেন ওই তরুণী। যার সব খরচ বহন করতেন মাসুদ। পরে ঝুমুরের মাধ্যমে সান নামের এক যুবকের সঙ্গে পরিচয়ের সূত্র ধরে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। আর এতেই ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে মাসুদ।

২৫ দিন শেকলে বেঁধে তরুণীকে ধর্ষণ, লোহমর্ষক বর্ণনা দিলো পুলিশ

পরবর্তীতে মাসুদ ভুক্তভোগী তরুণীকে শায়েস্তা করতে তার বর্তমান প্রেমিক সানের সঙ্গে হাত মেলায়। সালমাকে দিয়ে তাদের টাকার প্রলোভন দেখিয়ে মাসুদের নির্দেশনায় কাজ করায়। তরুণীর রুমে বসানো হয় গোপনীয় ক্যামেরা। বিভিন্ন সময় সান ও তার বন্ধু হিমেল ভুক্তভোগী তরুণীর সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করার দৃশ্য গোপনে ধারণ করে পাঠানো হতো মাসুদের কাছে। দীর্ঘদিন ধরে তারা এভাবে ভিডিও পাঠাতেন।

আরও পড়ুন : 

তেজগাঁও বিভাগের ডিসি বলেন, গোপনে ভিডিও করার বিষয়টি ভুক্তভোগী তরুণী জেনে যাওয়ায় তার ওপর নেমে আসে অমানুষিক নির্যাতন। শুরু হয় শেকলে বেঁধে নির্যাতন। হাত-পা ও মুখ বেঁধে যৌন নির্যাতন চালাতেন সান ও তার বন্ধুরা। যার প্রতিটি মুহূর্ত ভিডিও ধারণ করে পাঠানো হতো মাসুদের কাছে।

২৫ দিন পর যেভাবে বন্দিদশা থেকে উদ্ধার


এইচ এম আজিমুল হক বলেন, গত ২৯ মার্ট রাত ১১টার দিকে জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯ এর কলের মাধ্যমে ভুক্তভোগী তরুণীকে শেকলে বাঁধা অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। ওইদিন সন্ধ্যায় তরুণীকে ঘুমের ওষুধ খাওয়ানো হয়। ভুক্তভোগী তরুণী ঘুমিয়ে গেলে বাইরে যায় সালমা, সান ও অন্যরা। কিছুক্ষণ পর ভুক্তভোগীর ঘুম ভেঙে গেলে বাসায় কেউ না থাকার সুযোগে চিৎকার দিলে একজন পথচারী ৯৯৯ নম্বরে কল দিয়ে পুলিশকে জানায়। পরে পুলিশ গিয়ে নবীনগরের একটি বহুতল ভবনের চারতলা থেকে উদ্ধার করে ওই তরুণীকে। বর্তমানে ভুক্তভোগী তরুণী ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

তেজগাঁও বিভাগের ডিসি বলেন, ভুক্তভোগী তরুণীকে নির্যাতনের বেশিরভাগ ভিডিও ও ছবি সালমার মোবাইলে ধারণ করা হয়। কিন্তু সেই মোবাইলটি লুকিয়ে ফেলে হয়েছে। মোবাইলটি উদ্ধারের চেষ্টা চলছে।

টিটি/এমএএইচ/এএসএম

আরও পড়ুন