ভিডিও EN
  1. Home/
  2. জাতীয়

২ কর্মকর্তার ব্যবহারে অতিষ্ঠ হয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিবের কাছে অভিযোগ

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক | প্রকাশিত: ০৮:২৪ পিএম, ২৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৪

মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের দুজন কর্মকর্তার ব্যবহারে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছেন অধীনস্থ কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। তাই অভিযোগ জানিয়ে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে আবেদন জানিয়েছেন মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ কর্মকর্তা-কর্মচারী কল্যাণ সমিতি।

সম্প্রতি মন্ত্রিপরিষদ সচিব বরাবর এ অভিযোগ দেন সমিতির সাধারণ সম্পাদক মনিরুল ইসলাম। এর আগে ওই দুই কর্মকর্তার ব্যবহারে অতিষ্ঠ কর্মকর্তা-কর্মচারীরা অভিযোগ জানিয়ে সমিতিতে চিঠি দেন।

এ দুই কর্মকর্তা হলেন মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের মন্ত্রিসভা ও রিপোর্ট অনুবিভাগের অতিরিক্ত সচিব সৈয়দা সালমা জাফরীন এবং যুগ্মসচিব ইয়াসমিন বেগম।

অভিযোগের চিঠিতে বলা হয়েছে, ‘গত এক বছরে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের মন্ত্রিসভা ও রিপোর্ট অনুবিভাগের বিভিন্ন শাখায় কর্মরত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সঙ্গে কিছু ঘটনার সৃষ্টি হয়েছে, যা একদিকে যেমন অগ্রহণযোগ্য তেমনি অপেশাদারিত্বের চরম দৃষ্টান্ত। এ অনুবিভাগের অতিরিক্ত সচিব সৈয়দা সালমা জাফরীন এবং মন্ত্রিসভা-রিপোর্ট ও রেকর্ড অধিশাখার যুগ্মসচিব, ইয়াসমিন বেগম বরাবরই তাদের অধীনস্থদের প্রতি রূঢ় আচরণ করেন। সামান্যতম ভুল যেন এ অনুবিভাগের কারও জন্য জীবন দুর্বিষহ করার নামান্তর। দীর্ঘদিন যাবৎ আমাদের সঙ্গে নানা অগ্রহণযোগ্য আচরণ করলেও বর্তমানে প্রতিমুহূর্তে তাদের এ আচরণ সীমা ছাড়িয়ে যাচ্ছে। তাদের এরূপ রূঢ় আচরণের ফলে আমরা আতঙ্কে দিন পার করছি। যা দিনে দিনে আমাদের মানসিকভাবে বিপর্যস্ত করে ফেলছে।’

‘আমাদের ওপর বিভিন্ন সময়ে ঘটে যাওয়া বিরূপ আচরণের নমুনা হলো- ‘বস্তি’ কিংবা ‘রাস্তা’র পরিবার থেকে উঠিয়ে এনে চাকরি দেওয়া হয়েছে, এছাড়া ব্যক্তিগত আক্রমণের মধ্যে পরিবারকে ‘ছোটলোকের বংশধর’ বলে হেয় প্রতিপন্ন করে আসছেন। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে চাকরি কে দিয়েছে এমনকি নিয়োগ প্রক্রিয়ায় সম্পৃক্ত কর্মকর্তাদের নৈতিকতা এবং স্বচ্ছতা নিয়ে প্রতিনিয়ত প্রশ্নবিদ্ধ করেন। তৎকালীন নিয়োগকারী কর্মকর্তাদের দেখে নেবেন বলেও হুমকি দেন। ‘কেরানির বাচ্চা’, ‘ক্রিমিনাল’, ‘বেয়াদবের বাচ্চা’ এমন অপ্রত্যাশিত এবং অগ্রহণযোগ্য শব্দচয়ন যেন তাদের নিত্য-নৈমিত্তিক ব্যাপার। এছাড়া অপ্রয়োজনে ইচ্ছাকৃতভাবে অফিস সময়ের পরে অফিসে আটকে রেখে হেনস্তা করার ঘটনা প্রাত্যহিক ঘটনায় পরিণত হয়েছে।’’

চিঠিতে আরও বলা হয়, ‘আমাদের তুচ্ছ তাচ্ছিল্য করে বিভিন্ন উপনামে, যেমন ‘বেবি এলিফ্যান্ট’, ‘হাঁদা ভোঁদা’, ‘জমিদারের বাচ্চা’, ‘নবাবপুত্র’ ইত্যাদি ডাকা প্রতিদিনকার ঘটনা। সবসময় চাররিচ্যুত করার হুমকি দেন এবং মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে চাকরির অযোগ্য বলে চাকরি ছেড়ে বাড়ি চলে যেতে বলেন। সম্প্রতি ‘চাকরিচ্যুত হলে পরিবারের হাল কি হবে সে বিষয়ে ভেবে দেখ’ এবং দাখিলকৃত এসিআর ফেরত নিয়ে বিরূপ মন্তব্য করে ক্যারিয়ার ধ্বংস করে দেবেন বলে হুমকি দিচ্ছেন।’

‘এছাড়া এমন কিছু ঘটনার অবতারণা হয়, যেখানে তারা আমাদের ওপর চড়াও হয়ে মানসিকভাবে হেনস্তা করেন। তাদের এরূপ আচরণ আমাদের এ আধুনিক যুগেও দাস-মনিবের কথা স্মরণ করিয়ে দেয়, যেখানে দাসের কর্তব্য শুধুই সহ্য করা এবং মৌলিক অধিকারহীন থাকা। ব্যক্তির কর্মস্থলে করা ভুল একান্তই তার, এখানে তার পরিবারকে হীন-নিচ করার প্রচেষ্টা কোনোভাবেই সুস্থ মস্তিষ্কপ্রসূত আচরণ হতে পারে না।’

গুটিকয়েক স্বেচ্ছাচারী কর্মকর্তার অপেশাদারিত্ব সুলভ আচরণ ও কর্মকাণ্ডের কারণে কর্মপরিবেশ বিষাক্ত হয়ে উঠেছে জানিয়ে আবেদনে বলা হয়, ‘তাদের অগ্রহণযোগ্য এরূপ আচরণ কর্মচারীদের শারীরিক ও মানসিকভাবে অসুস্থ করে তুলছে। যা কোনোভাবেই কাম্য হতে পারে না। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ সব সরকারি দপ্তর বা সংস্থার কাছে রোল মডেল হিসেবে ধরা হয়। এমন স্থানে এরূপ অগ্রহণযোগ্য আচরণ এ বিভাগের সুনাম ও ঐতিহ্য ক্ষুণ্ণ করছে।’

তাই সুস্থ কর্মপরিবেশ এবং ন্যায়বিচার নিশ্চিতের আবেদন জানান মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।

আরএমএম/জেডএইচ/এমএস