দুর্ঘটনা কমাতে সড়কে সুশাসন প্রতিষ্ঠা জরুরি: হোসেন জিল্লুর রহমান
‘দেশে সড়ক দুর্ঘটনা ও প্রাণহানি কমাতে সড়কে সুশাসন প্রতিষ্ঠা জরুরি। সড়ক দুর্ঘটনা পূর্ণাঙ্গ ডাটাব্যাংক তৈরির পাশাপাশি ক্ষতিগ্রস্তদের আর্থিক সহায়তা তহবিলের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি থাকতে হবে। একই সঙ্গে মানুষের সচেতনতা, সাধারণ মানুষকে দুর্ঘটনা আক্রান্তদের উদ্ধার তৎপরতা সম্পৃক্ত করা জরুরি।’
রোববার (১১ ফেব্রুয়ারি) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে এক আলোচনা সভায় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা, সড়ক নিরাপত্তা জোট শ্রোতার সভাপতি অর্থনীতিবিদ ড. হোসেন জিল্লুর রহমান এসব কথা বলেন। বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতি ‘এসডিজির লক্ষ্য অর্জনে সরকারি উদ্যোগে প্রাথমিক উৎস থেকে সড়ক দুর্ঘটনার পূর্ণাঙ্গ ডাটাব্যাংক চাই’ শীর্ষক এই আলোচনা সভার আয়োজন করে।
হোসেন জিল্লুর রহমান বলেন বলেন, ‘সড়ক দুর্ঘটনা প্রতিরোধে সরকার মূল দায়িত্বপ্রাপ্ত, কিন্তু একক দায়িত্বপ্রাপ্ত নন। তাই সরকারি-বেসরকারি সবাইকে সঙ্গে নিয়ে কাজ করা গেলে এর কাঙ্ক্ষিত ফলাফল পাওয়া যেতো। আমাদের সড়কের অবকাঠামোগত বিস্তার ঘটছে, গাড়ি বাড়ছে, কিন্তু সড়ক নিরাপত্তা ইস্যুটি বরাবরই উপেক্ষিত থাকছে।’
আলোচনা সভায় বক্তারা ইসরায়েল-হামাস ভয়াবহ যুদ্ধের সঙ্গে বাংলাদেশে সড়ক দুর্ঘটনায় আহত ও নিহতের সংখ্যা তুলনা করেন। বক্তারা জানান, ফিলিস্তিনের গাজায় এ পর্যন্ত ২৮ হাজার মানুষ নিহত হয়েছেন। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার রিপোর্ট অনুযায়ী, দেশে সড়ক দুর্ঘটনায় বছরে ৩১ হাজার ৫৭৮ জনের প্রাণহানি ঘটে। এ যুদ্ধে এ পর্যন্ত আহত হয়েছেন ৫৮ হাজার। দেশে সড়ক দুর্ঘটনায় আহত হচ্ছেন আড়াই থেকে তিন লাখ মানুষ। এহেন ভয়াবহ মহামারি সড়ক দুর্ঘটনা, প্রাণহানি ও ক্ষয়ক্ষতি কমিয়ে এসডিজি’র লক্ষ্য অর্জনে সরকারি উদ্যোগে বিআরটিএ’র অধীন প্রাথমিক উৎস থেকে সড়ক দুর্ঘটনার পূর্ণাঙ্গ ডাটাব্যাংক চালুর দাবি জানায় বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতি।
সভায় যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব মোজাম্মেল হক চৌধুরী দেশের সড়কে হাজার হাজার মানুষের মৃত্যু ঠেকাতে সড়ক পরিবহনের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিআরটিএ’র চলমান গতানুগতিক কার্যক্রম অডিট করে প্রাতিষ্ঠানিক দুর্বলতা চিহ্নিত ও প্রাতিষ্ঠানিক অকার্যকারিতা সংস্কার করা জরুরি বলে দাবি করেন।
তিনি বলেন, ‘সড়ক দুর্ঘটনা, প্রাণহানির চিত্র দেখলে মনে হয় দেশের সড়কে একটি ভয়াবহ যুদ্ধ চলছে। আমাদের সীমিত সামর্থ্যের কারণে প্রাথমিক উৎস থেকে সড়ক দুর্ঘটনার ডাটাবেজ সংগ্রহ করা সম্ভব হয় না। তাই সংবাদপত্র তথা সেকেন্ডারি উৎস থেকে সড়ক দুর্ঘটনার প্রতিবেদন তৈরি করছি। ফলে সংঘটিত সড়ক দুর্ঘটনার প্রকৃত চিত্র আমাদের প্রতিবেদনে উঠে আসে না। আমরা মনে করি, দেশের গণমাধ্যমে সংঘটিত সড়ক দুর্ঘটনার ৩০ থেকে ৩৫ শতাংশ পর্যন্ত স্থান পায়। সব সংবাদপত্র আমরা মনিটরিং করতে পারি না, তাই ২০ থেকে ২৫ শতাংশের চিত্র তুলে ধরতে পারি। বিআরটিএ এই সেকেন্ডারি সোর্সের তথ্যকে অতিরঞ্জিত বলে বিভিন্ন সময় প্রশ্নবিদ্ধ করার চেষ্টা করছে। কিন্তু প্রাথমিক উৎসগুলোতে সড়ক দুর্ঘটনার প্রকৃত অবস্থা কী বা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রতিবেদনে সত্যতা কী তা খতিয়ে দেখার প্রয়োজন মনে করছে না। ফলে সরকারের কাছে সড়ক দুর্ঘটনার সঠিক চিত্র পৌঁছায় না। এ কারণে সরকার সড়ক দুর্ঘটনা নিয়ন্ত্রণে সঠিক পদক্ষেপ নিতে পারছে না।
আলোচনা সভায় গণপরিবহন বিশেষজ্ঞ আব্দুল হক, বিশিষ্ট সাংবাদিক হারুন অর রশিদ, সাংবাদিক মনজুরুল আলম পান্না, যাত্রী কল্যাণ সমিতির সহ-সভাপতি তাওহিদুল হক লিটন, এম মনিরুল হক প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
এমএমএ/ইএ/জিকেএস
সর্বশেষ - জাতীয়
- ১ গুমের সঙ্গে জড়িত সেনা-পুলিশের ২০ কর্মকর্তার দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা
- ২ শেখ হাসিনা ও তার পরিবারের দুর্নীতি অনুসন্ধানে ৫ কর্মকর্তা নিয়োগ
- ৩ প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে কায়রোতে মালয়েশিয়ার মন্ত্রীর সাক্ষাৎ
- ৪ রেমিট্যান্সযোদ্ধাদের হাসিমুখে বরণ করুন: রাষ্ট্রদূত মুশফিক
- ৫ কৃষিজমিতে রাসায়নিক সারের ব্যবহার ভয়াবহ অবস্থায় পৌঁছেছে