ভিডিও EN
  1. Home/
  2. জাতীয়

ব্যাংক কর্মকর্তা সেজে এটিএম কার্ডের টাকা হাতিয়ে নিতেন তারা

নিজস্ব প্রতিবেদক | প্রকাশিত: ০৭:৪৮ পিএম, ০৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৪

ব্যাংকের কর্মকর্তা সেজে মাস্টার ও ভিসা কার্ড ব্যবহারকারীদের কাছে ফোন দেয় একটি চক্র। এরপর তথ্য হালনাগাদ, কার্ডের পিন নম্বর ও মেইল আপডেট না করার কারণে কার্ড বন্ধ হয়ে গেছে বলে জানানো হয় ওই গ্রাহককে। এতে কোনো কোনো গ্রাহক আতঙ্কিত হয়ে প্রতারকদের কথা মতো কাজ করতে থাকেন।

এই সুযোগে ১৬ ডিজিটের কার্ডের নম্বর, কার্ডের মেয়াদোত্তীর্ণের তারিখ, কার্ডের বিপরীত পাশে উল্লিখিত ৩ ডিজিটের (সিকিউরিটি পিন নম্বর) সিভিভি নম্বর সংরক্ষণ করেন চক্রের সদস্যরা।

পরবর্তীতে গ্রাহকের কাছে ওটিপি কোড পাঠান তারা। এরপর কৌশলে আসল ওটিপি কোড সংগ্রহ করে বিকাশ অ্যাপের মাধ্যমে ‘অ্যাড মানি’ করে টাকা হাতিয়ে নেন চক্রের সদস্যরা। এভাবে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন তারা।

এমনই একটি প্রতারণা চক্রের দুই সদস্যকে গ্রেফতার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) সাইবার ক্রাইম ইউনিট। দিনাজপুর থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়।

তারা হলেন মো. রবিউল মিয়া এবং নজরুল ইসলাম। তাদের কাছ থেকে পাঁচটি মোবাইল এবং ১০টি সিম জব্দ করা হয়েছে। এসব সিমের অধিকাংশই ভুয়া ব্যক্তিদের নামে নিবন্ধিত।

শুক্রবার (৯ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় সিআইডির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (পুলিশ সুপার পদে পদোন্নতিপ্রাপ্ত) আজাদ রহমান জাগো নিউজকে এসব তথ্য জানান।

তিনি বলেন, ভিসা ও মাস্টার কার্ড ব্যবহার করে পৃথিবীর যে কোনো দেশে পেমেন্ট, কেনাকাটা, এটিএম বুথ থেকে টাকা উত্তোলন ও মোবাইল রিচার্জসহ বিভিন্ন কাজ করা যায়। এই কার্ড ব্যবহার করে বিকাশ অ্যাকাউন্টে টাকা অ্যাড করা যায়। আর এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে কার্ড ব্যবহারকারীদের অ্যাকাউন্ট হ্যাক করে অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছিল প্রতারক চক্র।

এ ধরনের কয়েকটি ঘটনায় ঢাকা মহানগরীর বিভিন্ন থানায় একাধিক মামলা হয়। সেই মামলার ছায়া তদন্ত শুরু করে সিআইডির সাইবার ইন্টেলিজেন্স টিম। এরপর চক্রের সদস্যদের শনাক্ত করা হয়। পরবর্তীতে দিনাজপুরে এলাকায় অভিযান চালিয়ে গ্রেফতার করা হয় দুজনকে। তাদের স্থায়ী ঠিকানা ফরিদপুরের ভাঙ্গায়। গ্রেফতার দুজন সম্পর্কে আত্মীয়। পুলিশের চোখ ফাকি দিতেই তারা দিনাজপুরে বাসাভাড়া নিয়ে প্রতারণার কাজ করে আসছিলেন।

প্রতারণার কৌশল সম্পর্কে সিআইডির এই কর্মকর্তা জানান, চক্রের এক সদস্য বিভিন্ন কার্ডধারীদের মোবাইল নম্বর সংগ্রহ করেন। এরপর এসব নম্বর অন্য আরেক সহযোগীর কাছে পাঠান। এরপর তারা কমিউনিটি ব্যাংক, স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংক ও ব্র্যাক ব্যাংকসহ বিভিন্ন ব্যাংকের কার্ড ডিভিশনের কর্মকর্তা সেজে কার্ড ব্যবহারকারীদের নম্বরে ফোন দেন। এসময় তারা তথ্য হালনাগাদ, কার্ডের পিন নম্বর চার ডিজিটের পরিবর্তে ছয় ডিজিট ও মেইল আপডেট না করার কারণে কার্ড বন্ধ হয়েছে বলে জানান। অনেক গ্রাহকদের অ্যাকাউন্টে বড় অংকের ব্যালেন্স থাকায় তারা আতঙ্কিত হয়ে তাদের কথা অনুযায়ী কাজ করতে থাকেন।

‘এভাবে ১৬ ডিজিটের কার্ডের নম্বর, কার্ডের মেয়াদোত্তীর্ণের তারিখ, কার্ডের বিপরীত পাশে উল্লিখিত ৩ ডিজিটের সিভিভি নম্বর সংরক্ষণ করেন তারা। পরবর্তীতে গ্রাহকদের কাছে ওটিপি কোড পাঠান। কৌশলে পাঠানো ওটিপি কোড সংগ্রহ করে বিকাশের মাধ্যমে টাকা আত্মসাৎ করে নেন।’

গ্রাহকদের সচেতন করে পুলিশ সুপার আজাদ রহমান বলেন, মাস্টার বা ভিসা কার্ড প্রতারণায় একাধিক ধাপে কয়েকটি তথ্যের প্রয়োজন হয়। যেমন- কার্ড নম্বর, মেয়াদোত্তীর্ণের তারিখ, পিন নম্বর, ওটিপি কোড ইত্যাদি। এ ধরনের গুরুত্বপূর্ণ তথ্য, নিজের পাসওয়ার্ড ও ওটিপি কোড কখনোই কারো সঙ্গে এমনকি সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানের সঙ্গেও শেয়ার করা উচিত নয়।

গ্রেফতারদের রমনা থানার মামলায় আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে বলেও জানান সিআইডির এই কর্মকর্তা।

টিটি/জেডএইচ/এএসএম