ভিডিও EN
  1. Home/
  2. জাতীয়

২০২৩ সালে ৯৯৩৯ মাদককারবারি গ্রেফতার, ৯৫ লাখ ইয়াবা উদ্ধার

নিজস্ব প্রতিবেদক | প্রকাশিত: ০৫:৩৬ পিএম, ১৬ জানুয়ারি ২০২৪

বিদায়ী বছর ২০২৩ সালে প্রায় ১০ হাজার মাদককারবারিকে আইনের আওতায় নিয়ে এসেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব)। এছাড়া বিপুল পরিমাণ মাদকদ্রব্য জব্দ করা হয়েছে।

মঙ্গলবার (১৬ জানুয়ারি) বিকেলে র‌্যাব সদরদপ্তরে সংস্থাটির লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন এসব তথ্য জানান।

তিনি বলেন, প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে এ পর্যন্ত র‌্যাব মাদকবিরোধী অভিযানে প্রায় দেড় লাখ মাদক কারবারি ও মাদক সংশ্লিষ্ট অপরাধীদের গ্রেফতারসহ বিপুল পরিমাণ মাদকদ্রব্য উদ্ধার করেছে। উদ্ধারকৃত মাদকের আনুমানিক মূল্য প্রায় ছয় হাজার কোটি টাকা।

এরই ধারাবাহিকতায় র‌্যাব ২০২৩ সালে সারাদেশে চার হাজার ৪৫৩টি অভিযান পরিচালনা করে নয় হাজার ৯৩৯ জন মাদককারবারিকে আইনের আওতায় নিয়ে এসেছে। এসব অভিযানে ৯৫ লাখ ২৯ হাজার ৪১৯ পিস ইয়াবা, ১২৭.২৫০ কেজি হেরোইন, এক লাখ ২৩ হাজার ৫৪ বোতল ফেনসিডিল, ১৪ হাজার ৭০০ বোতল বিদেশি মদ, ৭৮ হাজার ২৪২.৩৮ লিটার চোলাই মদ, ২৫ হাজার ৮৫৩.৩৫ কেজি গাঁজা, ছয় হাজার ৭৫৬ বোতল বিয়ার, ১১.৪৪৫ কেজি আফিম, ৭০ হাজার ৫২৭ পিস নেশাজাতীয় ইনজেকশন, দুই লাখ ১৮ হাজার ৯৮৩ পিস ড্রাগ ট্যাবলেটসহ অন্যান্য মাদকদ্রব্য উদ্ধার করা হয়।

খন্দকার আল মঈন বলেন, মাদকাসক্তি দেশের তরুণ সম্প্রদায় তথা ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য হুমকিস্বরূপ। মাদক যেখানে রয়েছে সেখানে অবৈধ অস্ত্র, চোরাচালান, নারীপাচার, ছিনতাই, চুরি-ডাকাতিসহ অন্যান্য অপরাধের উপস্থিতি লক্ষ করা যায়। ইয়াবা, ফেনসিডিল, গাঁজা, হেরোইনের পাশাপাশি বর্তমানে আইস, এলএসডিসহ নতুন কিছু মাদকের প্রচলন দেখা যায়। প্রধানমন্ত্রীর ‘মাদকের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স’ নীতির আলোকে র‌্যাব ‘চলো যাই যুদ্ধে, মাদকের বিরুদ্ধে’ স্লোগানকে সামনে রেখে প্রতিনিয়ত মাদকের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা ও গোয়েন্দা নজরদারি অব্যাহত রাখছে।

আরও পড়ুন>> ১৪ বছর পর গ্রেফতার যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামি

তিনি বলেন, ইয়াবা, ফেনসিডিল, গাঁজা, হেরোইনের পাশাপাশি বর্তমান সময়ে সবচেয়ে আলোচিত মাদকের মধ্যে আইস বা ক্রিস্টাল মেথ, এলএসডিসহ নতুন কিছু মাদকের প্রচলন দেখা যায়। র‌্যাব এরই মধ্যে ৬১ কেজির বেশি আইস উদ্ধার করে। ক্রিস্টাল মেথ বা আইসে ইয়াবার মূল উপাদানে এমফিটামিনের পরিমাণ অনেক বেশি থাকে। তাই মানবদেহে ইয়াবার চেয়েও বহুগুণ ক্ষতিসাধন করে এই আইস। এটি সেবনের ফলে অনিদ্রা, অতি উত্তেজনা, স্মৃতিভ্রম, মস্তিস্ক বিকৃতি, স্ট্রোক, হৃদরোগ, কিডনি ও লিভার জটিলতা এবং মানসিক অবসাদ ও বিষন্নতার ফলে আত্মহত্যার প্রবণতা বৃদ্ধি পায়। শারীরিক ও মানসিক উভয় ক্ষেত্রে মাদকের নেতিবাচক প্রভাব রয়েছে। এই মাদকের প্রচলনের ফলে তরুণ-তরুণীদের মানসিক বিকাশ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে এবং অস্বাভাবিক আচরণ পরিলক্ষিত হয়। এই মাদকে আসক্ত হয়ে মাদকাসক্তরা নানা অপরাধে জড়িত হয়ে পড়ছে।

২০২৩ সালে উল্লেখযোগ্য মাদকবিরোধী অভিযান

২০২৩ সালের ২ ফেব্রুয়ারি রাতে র‌্যাব সদরদপ্তরের গোয়েন্দা শাখা ও র‌্যাব-১২ এর একটি আভিযানিক দল গাজীপুরের কালিয়াকৈর এবং নওগাঁ এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে পাঁচ কোটি টাকা মূল্যের পাঁচ কেজি ৪০০ গ্রাম হেরোইনসহ চক্রের অন্যতম মূলহোতা শাকিবুর রহমান ও তার সহযোগী রাজিয়া খাতুন, সেলিনা খাতুন ওরফে শিরিনাকে গ্রেফতার করা হয়।

৬ মে রাতে র‌্যাব-১৫ এর একটি আভিযানিক দল কক্সবাজারের উখিয়ার পালংখালির সফিউল্ল্যাহ কাটা সংলগ্ন এলাকার ইরান মাঝির আস্তানায় অভিযান পরিচালনা করে বিশেষ কায়দায় লুকায়িত অবস্থায় আনুমানিক ১২০ কোটি টাকা মূল্যমানের ২৪.২ কেজি আইসসহ কক্সবাজারকেন্দ্রিক আইস চোরাচালানের অন্যতম হোতা ইমরান ওরফে ইরান মাঝি ও তার সহযোগী রুবেল ওরফে ডাকাত রুবেল, আলাউদ্দিন এবং জয়নাল আবেদীন ওরফে কালা বদাকে গ্রেফতার করা হয়।

২১ মে র‌্যাব-৯ এর একটি আভিযানিক দল হবিগঞ্জের মাধবপুর এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে ২০২ কেজি গাঁজাসহ দুজন মাদক কারবারিকে গ্রেফতার করে।

২৯ মে র‌্যাব ফোর্সেস সদরদপ্তরের গোয়েন্দা শাখা ও র‌্যাব-১৫ এর আভিযানিক দল কক্সবাজারের টেকনাফ এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে একজন নারীসহ পাঁচ মাদক কারবারিকে গ্রেফতার করে। উদ্ধার করা হয় নয় লাখ পিস ইয়াবা।

২০ নভেম্বর র‌্যাব-১৫ এর একটি আভিযানিক দল বান্দরবান সদরের হাফেজ ঘোনা এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে তিন কোটি টাকা মূল্যের ৩.২ কেজি আফিম উদ্ধারসহ একজন মাদককারবারিকে গ্রেফতার করে।

২১ নভেম্বর র‌্যাব-১৩ এর একটি আভিযানিক দল গাইবান্ধার খামার কামারজানি প্রত্যন্ত চর এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে এক হাজার ৬৯২ বোতল বিদেশি মদ উদ্ধার করে।

১৪ ডিসেম্বর র‌্যাব-৫ এর একটি আভিযানিক দল চাঁপাইনবাবগঞ্জের চরবাগডাঙ্গা এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে মাদক সম্রাট মো. শরিফুল ইসলাম ওরফে ধুলু মিয়া, তার ছেলে মো. মোমিনুল ইসলামকে গ্রেফতার করে। গ্রেফতারদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী তাদের বাড়ির পেছনে বাঁশঝারে মাটির গর্তে প্লাস্টিকের ড্রামে অভিনব কৌশলে লুকানো অবস্থায় ১০ কেজি হেরোইন উদ্ধার করা হয়।

টিটি/ইএ/এএসএম