ভিডিও EN
  1. Home/
  2. জাতীয়

নির্বাচনী পোস্টার-লিফলেট ছাপা শুরু হলেও চাপ কম প্রেসপাড়ায়

রায়হান আহমেদ | প্রকাশিত: ০২:১৯ পিএম, ০৬ ডিসেম্বর ২০২৩

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রতীক বরাদ্দ হবে ১৮ ডিসেম্বর। প্রার্থীরা জোরেশোরে প্রচারণার জন্য সময় পাবেন দুই সপ্তাহের বেশি। প্রতীক না পেলেও দলীয় প্রার্থীরা এরই মধ্যে শুরু করেছেন পোস্টার, ব্যানার, লিফলেট ছাপানোর অল্প-বিস্তর কাজ। তবে ব্যস্ততা বাড়েনি প্রেসপাড়ার। মালিকরা বলছেন, এবার এখন পর্যন্ত সব দল নির্বাচনে না আসায় কাজ তুলনামূলক কম হবে। আবার কাগজ-কালির দাম মাত্রাতিরিক্ত বাড়ায় খরচ বেড়ে লাভও কমেছে ছাপাখানার ব্যবসায়।

রাজধানীর প্রেসপাড়া খ্যাত ফকিরাপুল ও আরামবাগের ছাপাখানা ঘুরে দেখা যায়, জাতীয় নির্বাচন কেন্দ্র করে ছাপাখানাগুলোতে অল্প-বিস্তর শুরু হয়েছে পোস্টার-লিফলেট ছাপানোর কাজ। একই সঙ্গে চলছে প্রার্থীদের ব্যানার-পোস্টার ডিজাইনের কাজ। নির্বাচন উপলক্ষে তেমন ব্যস্ততা নেই ছাপাখানায়। প্রতিদ্বন্দ্বী কম থাকায় এ মৌসুমের ব্যবসা নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন ছাপাখানার কর্মীরা। তবে প্রতীক বরাদ্দের পর থেকে কাজ কিছুটা বাড়বে বলে মনে কনেন প্রেস মালিকরা।

আরও পড়ুন>> আসছে নির্বাচন, প্রস্তুত হচ্ছে ছাপাখানা

ফকিরাপুলের ছাপাখানা ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, এবার নির্বাচন উপলক্ষে হৈ-হুল্লোড় কম। বিএনপি-জামায়াত নির্বাচনে নেই। আগে পোস্টার ছাপানোর হিড়িক পড়তো। এবছর এখনো কাজের চাপ আসেনি। নতুন বছর উপলক্ষে ক্যালেন্ডার, ডায়েরি, শুভেচ্ছাকার্ডের কাজ চলছে।

নির্বাচনী পোস্টার-লিফলেট ছাপা শুরু হলেও চাপ কম প্রেসপাড়ায়

ব্যবসায়ীরা বলেন, এখন অনলাইন প্রচারণার যুগ। তাই পোস্টারনির্ভর প্রচারণা থেকে মানুষ সরে যাচ্ছে। নেতাকর্মীরা সোশ্যাল মিডিয়ায় বেশি প্রচারণা চালাচ্ছেন। নির্বাচনে সব দলের অংশগ্রহণ থাকলে তখন আমেজটা বেশি হতো। প্রতিটি আসনের প্রার্থী প্রতিযোগিতা করে পোস্টার ছাপাতেন। এখন সেই পরিস্থিতি নেই।

আরও পড়ুন>> চমক নিয়ে আসছে আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহার

কুমিল্লা-৮ আসনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী আবু জাফর রাশেদ নামে এক প্রার্থীর কিছু কাজ পেয়েছি। ২০১৮ সালের নির্বাচনে বিএনপিও ছিল। তখন দু-তিন মাস আগে থেকেই স্টিকার, ভোটার লিস্ট, ভোটার স্লিপসহ নানা ধরনের উপকরণের কাজ ছিল। এবার এরকম কোনো অর্ডার পাইনি এখনো।

তারা বলেন, ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন, উপজেলা নির্বাচন ও সিটি করপোরেশন নির্বাচন উপলক্ষে পোস্টার ছাপানোর একটা হিড়িক থাকে। ছাপাখানায় ব্যস্ততা থাকে। কিন্তু জাতীয় নির্বাচনে এবছর এখনো প্রার্থীদের দেখা নেই। ২০১৮ সালের নির্বাচনে প্রার্থীরা নমিনেশন পাওয়ার আগেই পোস্টার ছাপানো শুরু করছিলেন।

সূচনা লেমিনেশনের স্বত্বাধিকারী ফারুক আলম জাগো নিউজকে বলেন, ‘কুমিল্লা-৮ আসনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী আবু জাফর রাশেদ নামে এক প্রার্থীর কিছু কাজ পেয়েছি। ২০১৮ সালের নির্বাচনে বিএনপিও ছিল। তখন দু-তিন মাস আগে থেকেই স্টিকার, ভোটার লিস্ট, ভোটার স্লিপসহ নানা ধরনের উপকরণের কাজ ছিল। এবার এরকম কোনো অর্ডার পাইনি এখনো।’

নির্বাচনী পোস্টার-লিফলেট ছাপা শুরু হলেও চাপ কম প্রেসপাড়ায়

ঝরনা প্রিন্টার্সের স্বত্বাধিকারী আবুল কালাম জাগো নিউজকে বলেন, ‘এবারের নির্বাচন ভিন্ন। দেখানোর জন্য হলেও প্রার্থীরা প্রচারণা করবেন। আমরা সাবেক মন্ত্রী শাজাহান খানের পোস্টার ডিজাইন করছি। শিগগির ছাপানো শুরু হবে।’

এ এস প্রিন্টার্সের স্বত্বাধিকারী নুরুল হক জাগো নিউজকে বলেন, ‘এখনো অর্ডার পাইনি। কিছু কিছু দোকান পেয়েছে। প্রতীক বরাদ্দ হলে স্বতন্ত্র প্রার্থীরা আসবেন হয়তো। তবে কাগজ-কালির দাম বাড়ায় এখন খরচ বেশি, লাভ কম।’

আরও পড়ুন>> শরিকদের বেকায়দায় ফেলে এগোচ্ছে আওয়ামী লীগ!

আরেক ব্যবসায়ী বলেন, ‘কালির দাম বেড়েছে প্রায় দ্বিগুণ। প্রাইট কালি এক ডিব্বা আগে ছিল ২ হাজার থেকে ২২শ টাকা, সেটি এখন সাড়ে ৩ হাজার থেকে ৪ হাজার টাকা। এখন অনেক কাগজের কোম্পানি ও বড় বড় প্রেস মালিক নমিনেশনপ্রাপ্ত ব্যক্তিকে পোস্টার, লিফলেট ছাপিয়ে দেন। ফলে তাদের ছাপাখানায় আসতে হয় না।’

১৮/২৩ মাপের একটি পোস্টার ছাপাতে সব মিলিয়ে ৭ টাকা খরচ পড়ে। লিফলেট ছোটগুলো বানাতে খরচ পড়ে ১ টাকা থেকে ১ টাকা ৫০ পয়সা। তবে কাগজ-কালির মান ও সংখ্যা হিসাব করে দাম নির্ধারণ করা হয়। সর্বনিম্ন দুই হাজারের নিচে পোস্টার ছাপানো হয় না।

পোস্টার ছাপানোর খরচ সম্পর্কে জানতে চাইলে ছাপাখানা কর্মীরা বলেন, ‘১৮/২৩ মাপের একটি পোস্টার ছাপাতে সব মিলিয়ে ৭ টাকা খরচ পড়ে। লিফলেট ছোটগুলো বানাতে খরচ পড়ে ১ টাকা থেকে ১ টাকা ৫০ পয়সা। তবে কাগজ-কালির মান ও সংখ্যা হিসাব করে দাম নির্ধারণ করা হয়। সর্বনিম্ন দুই হাজারের নিচে পোস্টার ছাপানো হয় না।’

নির্বাচনী পোস্টার-লিফলেট ছাপা শুরু হলেও চাপ কম প্রেসপাড়ায়

কাগজের দাম বাড়ায় পোস্টার ছাপানোর খরচ বেড়েছে বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। নির্বাচন ও নতুন বছরের ডায়েরি, ক্যালেন্ডার, স্টেশনারি ও লিফলেট ছাপানো কেন্দ্র করে কাগজের বাজার অস্থিতিশীল। তারা জানান, পাইকারিতে হোয়াইট ও নিউজ প্রিন্ট কাগজের মানভেদে টনপ্রতি দাম এখন ১ লাখ ২০ হাজার থেকে ১ লাখ ৬০ হাজার টাকার মধ্যে। অথচ এক বছর আগেও প্রতি টন ৮০ থেকে ৯০ হাজার টাকায় বিক্রি হতো। এক রিম কাগজ এখন ৩২শ থেকে ৩৫শ টাকা। ফলে ছাপাখানায় এর প্রভাব পড়ছে।

মুদ্রণ শিল্প সমিতির সাধারণ সম্পাদক জহুরুল ইসলাম জাগো নিউজকে বলেন, ‘এখন বছরের শেষ। ছাপাখানা এখন ক্যালেন্ডারসহ যাবতীয় কার্যক্রম নিয়ে ব্যস্ত। পোস্টার ছাপানোর কাজ অনেক প্রেস শুরু করেছে। প্রার্থী যত বেশি হবে কাজ তত বাড়বে। এবছর আসনপ্রতি প্রার্থী কম। ছাপখানায় এর কিছু প্রভাব থাকবে।

আরএএস/এএসএ/জেআইএম