ভিডিও EN
  1. Home/
  2. জাতীয়

বিতর্কিত নয় নিরপেক্ষ শিক্ষক-কর্মকর্তা দিয়ে ভোটগ্রহণ: ইসি

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক | প্রকাশিত: ০৮:৪৬ এএম, ২৭ নভেম্বর ২০২৩

বিতর্কিত কোনো কর্মকর্তা বা শিক্ষককে ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা পদে নিয়োগ না দিতে রিটার্নিং কর্মকর্তাদের নির্দেশনা দিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। ভোটগ্রহণ কর্মকর্তাদের নিরপেক্ষ ও সৎ হতে হবে। একই সঙ্গে প্রিসাইডিং কর্মকর্তা পদে সংশ্লিষ্ট উপজেলায় কর্মরতদের নিয়োগ না দিতে বলেছে সংস্থাটি। রোববার (২৬ নভেম্বর) ইসির নির্বাচন ব্যবস্থাপনা শাখার উপ-সচিব মো. আতিয়ার রহমান সংশ্লিষ্টদের কাছে এ নির্দেশনাটি পাঠান।

এতে বলা হয়েছে, যদি কোনো ব্যক্তি প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর চাকরিতে নিয়োজিত থাকেন, অথবা অতীতে কোনো সময় নিয়োজিত ছিলেন, তবে তাকে প্রিসাইডিং অফিসার অথবা সহকারী প্রিসাইডিং অফিসার অথবা পোলিং অফিসার নিয়োগ করা যাবে না। প্যানেলভুক্ত তালিকায় এ ধরনের কোনো কর্মকর্তা-কর্মচারীর নাম থাকলে তাকে ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগ দেওয়া যাবে না। এমনকি ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগদান করার পরও কাউকে এ ধরনের পাওয়া গেলে তার নিয়োগ বাতিল করতে হবে। এছাড়া যেসব কর্মকর্তা অথবা শিক্ষক বিতর্কিত বা তাদের সম্পর্কে সংশয় ও মতবিরোধ রয়েছে, সেসব কর্মকর্তা অথবা শিক্ষককে ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগ করা যাবে না। কোনো রাজনৈতিক দলের সদস্যকে ভোটগ্রহণকারী কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগ করা যাবে না।

নির্দেশনায় আরও বলা হয়েছে, প্রিসাইডিং অফিসার, সহকারী প্রিসাইডিং অফিসার এবং পোলিং অফিসার নিয়োগের সময় ওই সব কর্মকর্তার কর্মক্ষমতা, দক্ষতা, সততা, সাহস এবং নিরপেক্ষতার দিকে অবশ্যই লক্ষ্য রাখতে হবে। প্রতিটি ভোটকেন্দ্রে প্রিসাইডিং অফিসার, সহকারী প্রিসাইডিং অফিসার ও পোলিং অফিসারদের সব প্রকার প্রভাবের ঊর্ধ্বে থেকে নিরপেক্ষভাবে ভোটগ্রহণ সম্পন্ন করতে হবে।

প্রার্থিতা চূড়ান্তকরণের পর যদি দেখা যায় যে, সরকারি গেজেটে প্রকাশিত কোনো ভোটকেন্দ্র কোনো প্রার্থীর মালিকানাধীন বা নিয়ন্ত্রণে রয়েছে, তাহলে নির্বাচন কমিশন যে কোনো সময়ে তা পরিবর্তন করতে পারবে। ভোটকেন্দ্রের গেজেট প্রকাশের পরও বিষয়টি পরিলক্ষিত হলে তা তাৎক্ষণিকভাবে কমিশনকে অবহিত করার নির্দেশনা দিয়েছে ইসি।

এছাড়া নির্দেশনায় আরও বলা হয়েছে, প্যানেলভুক্ত কর্মকর্তাদের মধ্য থেকে রিটার্নিং অফিসাররা ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা নিয়োগের কার্যক্রম চূড়ান্ত করবেন। সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত অফিস বা প্রতিষ্ঠান এবং সরকারি অনুদানপ্রাপ্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারীর মধ্য থেকে ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা নিয়োগ করতে হবে। বিশেষ প্রয়োজন না হলে বা সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত, সরকারি অনুদানপ্রাপ্ত অফিস বা প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা-কর্মচারী বা শিক্ষকদের মধ্য থেকে ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা নিয়োগ সম্ভব না হলেই কেবল বেসরকারি অফিস থেকে ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা নিয়োগ দেওয়া যাবে। তবে ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগের জন্য যত সংখ্যক কর্মকর্তা-কর্মচারী ও শিক্ষকের প্রয়োজন হবে তার চেয়ে শতকরা ১০ শতাংশ বেশি সংখ্যক কর্মকর্তা-কর্মচারী ও শিক্ষককে প্যানেলভুক্ত করতে হবে।

ভোটকেন্দ্রে প্রিসাইডিং অফিসার, সহকারী প্রিসাইডিং অফিসার ও পোলিং অফিসার হিসেবে নিয়োগ দেওয়ার সময় লক্ষ্য রাখতে হবে যে, একই ভোটকেন্দ্রে প্রিসাইডিং অফিসার হিসেবে দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তার পদমর্যাদা বা বেতন স্কেল যেন সহকারী প্রিসাইডিং অফিসার থেকে নিম্ন না হয়। অনুরূপভাবে সহকারী প্রিসাইডিং অফিসার হিসেবে দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তার পদমর্যাদা যেন পোলিং অফিসার থেকে নিম্নে না হয়। তবে ভিন্ন ভিন্ন ভোটকেন্দ্রে দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে তা বাধা হবে না। অর্থাৎ কোনো একটি ভোটকেন্দ্রে প্রিসাইডিং অফিসার অন্য কোনো ভোটকেন্দ্রের সহকারী প্রিসাইডিং অফিসার থেকে নিম্ন পদমর্যাদার হলেও অসামঞ্জস্য হবে না।

নির্দেশনায় আরও বলা হয়েছে, ভোটগ্রহণ কর্মকর্তাদের চূড়ান্ত নিয়োগের সময় লক্ষ্য রাখতে হবে যেসব প্রতিষ্ঠানে ভোটকেন্দ্র স্থাপিত হবে সেসব প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের যেন ওই ভোটকেন্দ্রে দায়িত্ব দেওয়া না হয়। ভোটকেন্দ্র হিসেবে ব্যবহৃত প্রতিষ্ঠানের যে কোনো একজনকে ওই ভোটকেন্দ্রের ভোটার না হলে পোলিং অফিসার হিসেবে নিয়োগ দেওয়া যাবে। কোনো প্রার্থী কর্তৃক কোনো ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা যাতে প্রভাবিত হতে না পারে, সেজন্য প্রিসাইডিং অফিসার নিয়োগের ক্ষেত্রে যারা যে উপজেলা বা থানার বাসিন্দা, তাকে যতদূর সম্ভব যেন উক্ত উপজেলা বা থানার কোনো ভোটকেন্দ্রে দায়িত্ব দেওয়া না হয়। তবে কোনো কোনো নির্বাচনী এলাকায় বিশেষ করে যেসব নির্বাচনী এলাকা একটি মাত্র উপজেলা নিয়ে গঠিত, সেসব নির্বাচনী এলাকায় উক্ত নির্দেশনার আলোকে প্রিসাইডিং অফিসার নিয়োগ সম্ভব নাও হতে পারে। সেক্ষেত্রে প্রিসাইডিং অফিসারদের নিজ উপজেলাস্থ ভোটকেন্দ্রে দায়িত্ব দেওয়া যাবে। চাকরি বা পেশাগত কারণে অস্থায়ীভাবে কোনো এলাকায় বসবাসের ক্ষেত্রে ওই এলাকার বাসিন্দা বলে বিবেচিত হবে না।

নির্দেশনায় বলা হয়েছে, সহকারী প্রিসাইডিং অফিসার এবং পোলিং অফিসার যে ভোটকেন্দ্রের ভোটার সেই ভোটকেন্দ্রে দায়িত্ব দেওয়া যাবে না এবং বিশেষ কোনো পরিস্থিতি ছাড়া ভোটকেন্দ্র হিসেবে স্থাপিত প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ওই ভোটকেন্দ্রের জন্য ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগ করা যাবে না। কোনো অবস্থাতেই চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীদের ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা নিয়োগ দেওয়া যাবে না অথবা ভোটগ্রহণের কোনো দায়িত্ব দেওয়া যাবে না।

প্রিসাইডিং অফিসারসহ কোনো ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা যেন প্রার্থীর প্রভাবে প্রভাবান্বিত হতে না পারে, অথবা পক্ষপাতমূলক আচরণের সুযোগ না পায়, বা কারও বিরুদ্ধে এ ধরনের অভিযোগ উত্থাপনের সুযোগ সৃষ্টি না হয়, সেসব বিষয় বিবেচনা করে ভোটকেন্দ্রভিত্তিক প্রিসাইডিং অফিসারসহ অন্যান্য ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা নিয়োগ করতে হবে বলে নির্দেশনায় বলা হয়েছে।

ভোটগ্রহণের দিন এবং ভোটগ্রহণের আগে ও পরের দিন সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের অফিস কক্ষ, কমন রুম, আসবাবপত্রসহ বিভিন্ন দ্রব্যাদি ব্যবহার ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় সহায়তা গ্রহণের লক্ষ্যে উক্ত প্রতিষ্ঠানের প্রধান বা সহকারী প্রধান ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োজিত না হলে প্রিসাইডিং অফিসারকে সার্বক্ষণিক সহায়তা দেওয়ার জন্য ওই প্রতিষ্ঠানের প্রধান বা সহকারী প্রধানকে নির্দেশ দিতে হবে। প্রতিষ্ঠানের প্রধান বা সহকারী প্রধান উভয়ই ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োজিত হলে, ওই প্রতিষ্ঠানের যে কর্মকর্তা বা শিক্ষক ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োজিত হবেন না তাকে ওই দায়িত্ব দিতে হবে। যদি কোনো প্রতিষ্ঠানের প্রধানসহ সব কর্মকর্তা-কর্মচারী বা শিক্ষককে ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়, তাহলে অভিজ্ঞ ও দায়িত্বশীল কোনো চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীকে ভোটগ্রহণের দিনে প্রিসাইডিং অফিসারকে সহায়তা দেওয়ার লক্ষ্যে দায়িত্ব দেওয়া যাবে। অথবা অন্য কোনো বিকল্প ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। এজন্য স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানের এবং ওই এলাকাধীন সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের সহায়তা গ্রহণ করতে হবে। তবে এ বিষয়ে কোনোক্রমেই কোনো প্রার্থী বা রাজনৈতিক দলের সংশ্লিষ্টতা বা সহায়তা গ্রহণ করা যাবে না।

নির্দেশনায় আরও বলা হয়েছে, নারী ভোটকেন্দ্রে ভোটগ্রহণের জন্য যথা সম্ভব নারী সহকারী প্রিসাইডিং অফিসার এবং নারী পোলিং অফিসার নিয়োগ করবেন। নারী ভোটাররা যাতে স্বচ্ছন্দে ও নির্বিঘ্নে ভোট দিতে সমর্থ হন।

এমওএস/জেডএইচ/জেআইএম