প্রধানমন্ত্রীর উদ্বোধন
চট্টগ্রামে সরকারি চাকরিজীবীদের আবাসন সংকট মেটাবে ৬৮৪ ফ্ল্যাট
অবশেষে আলো ফুটলো চট্টগ্রামের সিজিএস কলোসিতে নির্মিত সরকারি ৬৮৪ ফ্ল্যাটের। প্রায় ৪৮৩ কোটি টাকা ব্যয়ে ২০ তলার ৯টি ভবনে এসব ফ্ল্যাট নির্মাণ এরই মধ্যে সম্পন্ন হয়েছে। ‘চট্টগ্রামের আগ্রাবাদ সিজিএস কলোনিতে জরাজীর্ণ ১১টি ভবনের স্থলে ৯টি বহুতল আবাসিক ভবনে সরকারি কর্মকর্তা/কর্মচারীদের জন্য ৬৮৪টি ফ্ল্যাট নির্মাণ’ প্রকল্পটিতে সব ধরনের নাগরিক সুবিধা নিশ্চিত করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রকল্পের প্রকৌশলীরা।
মঙ্গলবার (১৪ নভেম্বর) ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ প্রকল্পের উদ্বোধন করেন। ফ্ল্যাটগুলো বরাদ্দ হলে চট্টগ্রামে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের আবাসন সংকট অনেকাংশে ঘুচে যাবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
গণপূর্ত বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, ৪৮২ কোটি ৯৩ লাখ ৫৭ হাজার টাকায় প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে গণপূর্ত অধিদপ্তর। ২০১৮ সালের ২৬ জুন জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি এর অনুমোদন দেয়। গত ১১ জুলাই তিন প্যাকেজের মাধ্যমে প্রকল্পের দরপত্র আহ্বান করে চট্টগ্রাম গণপূর্ত বিভাগ। ১৩ আগস্ট দরপত্র উম্মুক্ত করা হয়। ৮ সেপ্টেম্বর গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। তিন প্যাকেজে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হয়।
প্রকল্পে আধুনিক সুযোগ-সুবিধার সন্নিবেশ ঘটানো হয়েছে। এতে সুয়ারেজ ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট, গভীর নলকূপ, ভূগর্ভস্থ জলাধার, পাম্প হাউজ, অগ্নিনির্বাপন ব্যবস্থা, সোলার সিস্টেম, সিকিউরিটি লাইট, লাইটেনিং এরেস্টর, কম্পাউন্ড ড্রেন, অভ্যন্তরীণ রাস্তা ও কমিউনিটি ভবন রয়েছে। প্রত্যেকটি ভবনে তিনটি করে লিফট রয়েছে। কমিউনিটি ভবনেও রয়েছে লিফট। ভবনগুলোতে বৃষ্টির পানি সংরক্ষণের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।
গণপূর্ত অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, ছয় দশমিক ১৬ একরজুড়ে ভবন তিনটি নির্মাণ করা হয়েছে। পুরো জায়গার মাত্র ২৫ শতাংশ ব্যবহার করা হয়েছে ভবন নির্মাণে। অবশিষ্ট ৭৫ শতাংশ ফাঁকা ও সবুজ আচ্ছাদন করা হয়েছে। এরই মধ্যে প্রায় সাড়ে ৯ হাজার বিভিন্ন ফলদ, ওষুধি, বনজ এবং সৌন্দর্যবর্ধনকারী গাছ লাগানো হয়েছে।
প্রস্তাবনা অনুযায়ী প্রকল্পে ৯টি ২০ তলা ভবন নির্মিত হয়েছে। একেকটি ভবনে ৭৬টি করে ফ্ল্যাট রয়েছে। এসব ভবনে ৬৫০ বর্গফুট, ৮৫০ বর্গফুট এবং ১০০০ বর্গফুটের ফ্ল্যাট রয়েছে। ভবনগুলোর প্রত্যেকটি ফ্লোরে রয়েছে চারটি করে ফ্ল্যাট। ভবনগুলোর মধ্যে দুটিতে ৬৫০ বর্গফুটের ১৫২টি, চারটিতে ৮৫০ বর্গফুটের ৩০৪টি ফ্ল্যাট এবং তিনটিতে এক হাজার বর্গফুটের ২২৮টি ফ্ল্যাট নির্মাণ করা হয়েছে।
প্রকল্প পরিচালক এবং চট্টগ্রাম গণপূর্ত সার্কেল-২ এর তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মোহাম্মদ আসিফ ইমরোজ জাগো নিউজকে বলেন, চট্টগ্রামে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের আবাসন সংকট মেটাতে সিজিএস কলোনিতে নির্মিত ৬৮৪টি ফ্ল্যাট গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। এসব ফ্ল্যাটের মাধ্যমে চট্টগ্রামে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মানসম্মত আবাসন নিশ্চিত করা সম্ভব হবে। নগরের কেন্দ্রস্থলে হওয়াতে এসব ফ্ল্যাটের চাহিদা থাকবে বেশি। পাশাপাশি ভবনগুলো নির্মাণে সর্বোচ্চ গুণগত মানের প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে। জীবনমানের সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।
ইকবাল হোসেন/ইএ/জেআইএম