ভিডিও EN
  1. Home/
  2. জাতীয়

‘অবরোধে দলগুলোর স্বার্থ হাসিল হয়, তারা জনগণের ভোগান্তি ভাবে না’

নিজস্ব প্রতিবেদক | প্রকাশিত: ১০:৪০ এএম, ৩১ অক্টোবর ২০২৩

মতিঝিলে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন মঈন উদ্দিন। পরিবার নিয়ে থাকেন মহাখালীর আমতলী এলাকায়। মঙ্গলবার (৩১ অক্টোবর) সকাল ৮টায় মহাখালীর জনস্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের সামনে বাসের জন্য অপেক্ষা করছিলেন তিনি। প্রায় ৩০ মিনিট অপেক্ষা করেও নিজ গন্তব্যের বাস পাননি।

এসময় কথা হয় তার সঙ্গে। মঈন উদ্দিন জাগো নিউজকে বলেন, ‘অন্যান্য দিন সকাল ৭টার পর থেকে সড়কে মতিঝিলগামী বিভিন্ন পরিবহনের বাস পাওয়া যায়। কিন্তু আজ থেকে বিএনপি-জামায়াতের ডাকা অবরোধের কারণে সড়কে গণপরিবহন কম। বাসের অপেক্ষায় আছি।’

তিনি বলেন, ‘হরতাল-অবরোধ দিয়ে রাজনৈতিক দলগুলো তাদের স্বার্থ হাসিল করতে চায়, কিন্তু এ ধরনের কর্মসূচি জনগণের ভোগান্তি ছাড়া আর কিছুই নয়। তারা নিজেদের স্বার্থ দেখে, জনগণের দুর্ভোগের কথা ভাবে না।’

জনস্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের বিপরীত পাশের সড়কেও বিমানবন্দরগামী গণপরিবহন কম দেখা গেছে। সেখানে বিমানবন্দরগামী যাত্রীর সংখ্যাও ছিল কম। এর মধ্যে চার-পাঁচ মিনিট পরপর একটি করে বাস আসছে, যাত্রীরা বাসে উঠে চলে যাচ্ছেন।

উত্তরার আব্দুল্লাহপুরগামী যাত্রী রতন তালুকদার। মহাখালী ডিওএইচএসে তার বাসা। তিনি বলেন, ‘ব্যক্তিগত কাজে সকাল ৯টায় আব্দুল্লাহপুর যাওয়ার কথা। কিন্তু বাসস্ট্যান্ডে এসে দেখি রাস্তা ফাঁকা। অন্যান্য দিনের তুলনায় যাত্রীও কম।’

jagonews24

আরও পড়ুন>> অবরোধে মাঠে দাঁড়াতে দেওয়া হবে না, অ্যাকশনে যাবে পুলিশ

তিনি বলেন, ‘হরতাল-অবরোধ থাকলে অনেকে ঝুঁকি নিয়ে বাসা থেকে বের হতে চান না। বিগত বছরগুলোতে দেখেছি, হরতাল-অবরোধের নামে কত যাত্রীকে সড়কে আহত ও নিহত হতে হয়েছে। একটি সভ্য দেশে এই ধরনের কর্মসূচির মাধ্যমে যাত্রী বা সাধারণ মানুষের ক্ষয়ক্ষতি কাম্য নয়।’

এদিন বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে রাজধানীর ফার্মগেট এলাকায় যাত্রী ও গণপরিবহনের সংখ্যাও বাড়তে থাকে। তবে যাত্রী ও গণপরিবহন চালকদের দাবি, সরকারি ছুটির দিনও এর চেয়ে বেশি পরিমাণ যাত্রী ও গণপরিবহনের চাপ থাকে ফার্মগেটে।

মিরপুর ১০ নম্বর থেকে যাত্রী নিয়ে সদরঘাট যাচ্ছেন বিহঙ্গ পরিবহনের চালক নয়ন মোল্লা। ফার্মগেট পুলিশ বক্সের সামনে তার সঙ্গে কথা হয়। নয়ন মোল্লা বলেন, ‘সাধারণত ঈদের ছুটিতে রাস্তা এমন ফাঁকা থাকে। এখন বিএনপির অবরোধের কারণে মানুষ ভয়ে বাসা থেকে বের হচ্ছে না। আমরাও ঝুঁকি নিয়ে বাস চালাচ্ছি। একদিন বাস না চালালে পরিবারের সবার না খেয়ে থাকার উপক্রম হয়।’

তিনি বলেন, ‘এই হরতাল-অবরোধের মধ্যে বাস চালাতে ভয় লাগে। এখন বিএনপি-জামায়াতের প্রধান লক্ষ্যই থাকে গণপরিবহন ভাঙচুর-অগ্নিসংযোগ। কখন কোনদিকে বিপদে পড়ে যাই সেই আতঙ্কে থাকি।’

কারওয়ান বাজার মোড় রাজধানীর ব্যস্ততম একটি এলাকা। সাধারণত প্রতিদিন সকাল ৮টা থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত এই সড়কে গণপরিবহন এবং যাত্রীর চাপ থাকে। কিন্তু আজ সকাল পৌনে ৯টা পর্যন্ত এই সড়ক বা মোড় ফাঁকা দেখা গেছে।

২৮ অক্টোবর মহাসমাবেশে হামলা, বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ আন্দোলনরত বিভিন্ন দলের সহস্রাধিক নেতাকর্মীদের গ্রেফতার, বাড়ি বাড়ি তল্লাশি, হয়রানি ও নির্যাতনের প্রতিবাদ এবং সরকারের পদত্যাগের এক দফা দাবি আদায়ের লক্ষ্যে ৩১ অক্টোবর ভোর থেকে ২ নভেম্বর বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত সারাদেশে মহাসড়ক, রেল ও নৌপথে অবরোধ কর্মসূচি পালনের ঘোষণা দিয়েছে বিএনপি।

বিএনপির এই অবরোধ কর্মসূচি ঘোষণার পর জামায়াতে ইসলামীও তিনদিনের অবরোধ কর্মসূচি ঘোষণা করে। সরকারবিরোধী অন্যান্য দলগুলোও এই অবরোধ কর্মসূচিতে সমর্থন দিয়েছে।

এমএমএ/ইএ/জিকেএস