দেশে প্রতিদিন স্তন ক্যানসারে মারা যান ১৯ নারী
দেশে প্রতি বছর ২০ থেকে ২৫ হাজার নারী নতুন করে স্তন ক্যানসারে আক্রান্ত হচ্ছেন। এছাড়া বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার হিসাব মতে, প্রতি বছর বাংলাদেশে প্রায় ৭ হাজার, অর্থাৎ প্রতিদিন গড়ে ১৯ জন নারী স্তন ক্যানসারে মারা যাচ্ছেন। শুধুমাত্র সচেতনতাই পারে এই মৃত্যুহার কমিয়ে আনতে। প্রাথমিক পর্যায়ের শনাক্তকরণে এ রোগে সুস্থতার হার ৯০ শতাংশ।
বুধবার (১৮ অক্টোবর) স্তন ক্যানসার সচেতনতা মাস উপলক্ষে রাজধানীর এক হোটেলে স্তন ক্যানসার জয়ী নারীদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে বক্তরা এসব কথা বলেন। সংবর্ধনার আয়োজন করে মেঘনা গ্রুপ অব ইন্ড্রাস্ট্রিজ (এমজিআই) এবং বাংলাদেশ ক্যানসার সোসাইটি।
অনুষ্ঠানে জানানো হয় বিশ্বব্যাপী প্রতি বছর অক্টোবর মাসকে ‘স্তন ক্যানসার সচেতনতা মাস’ হিসেবে পালন করা হয়। মাসটি পিংক অক্টোবর হিসেবেও পরিচিত। এবারের প্রতিপাদ্য হচ্ছে, ‘স্তন ক্যানসার বিষয়ক সচেতনতা তৈরি ও প্রতিকার নিশ্চিত করা।’
এমজিআই ডিরেক্টর ব্যারিস্টার তাসনিম মোস্তফা বলেন, প্রতি বছর দেশে প্রায় ৭ হাজার, অর্থাৎ প্রতিদিন গড়ে ১৯ জন নারী স্তন ক্যানসারে মারা যাচ্ছে। এমজিআই এর জনপ্রিয় ব্র্যান্ড ফ্রেশ টিস্যু গত কয়েক বছর স্তন ক্যানসার সচেতনতা ও শনাক্তকরণে বিভিন্ন কার্যক্রম চালিয়ে আসছে। এই কর্মসূচির অংশ হিসেবে স্তন ক্যানসার জয়ী নারী ও তাদের পাশে থাকা কেয়ার গিভারদের বিশেষ সংবর্ধনা দিচ্ছে ফ্রেশ টিস্যু এবং ফ্রেশ অনন্যা স্যানিটারি ন্যাপকিন। এই আয়োজনে সহযোগী হিসেবে হিসেবে বাংলাদেশ ক্যানসার সোসাইটি যুক্ত হয়েছে।
অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ ক্যানসার সোসাইটির সভাপতি ডা. গোলাম মহিউদ্দিন ফারুক বলেন, দেশে প্রতি বছর ২২ থেকে ২৫ হাজার নারী নতুন করে স্তন ক্যানসারে আক্রান্ত হচ্ছে। রোগটি প্রতিরোধে রোগী, পরিবার, চিকিৎসক ও রাষ্ট্রকে কাজ করতে হবে। আক্রান্তরা যেন সবার কাছ থেকে সহনশীলতা পান তা নিশ্চিত করতে হবে।
বাংলাদেশ ক্যানসার সোসাইটির সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক ডা. কাজী মুশতাক হোসেন বলেন, স্তন ক্যানসার চিকিৎসায় সমন্বয় দরকার। শুরুতে রোগটি শনাক্ত হলে ৯৫ থেকে একশত ভাগ সুস্থ্য হয়। কিন্তু প্রাথমিক পর্যায়ে শনাক্ত না হওয়ায় অধিকাংশ রোগী স্টেজ ৩ ও স্টেজ ৪ অবস্থায় চিকিৎসকের কাছে আসছে। এজন্য ব্যক্তি, সমাজ, রাষ্ট্র ও আন্তর্জাকিকভাবে সচেতনতা বাড়াতে হবে।
বাংলাদেশ ক্যানসার সোসাইটি হসপিটাল অ্যান্ড ওয়েলফেয়ার হোমের পরিচালক অধ্যাপক ডা. এমএ হাই বলেন, ক্যানসার রোধে জীবনাচার পরিবর্তন, অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস, তামাকপণ্য বর্জন ও ধর্মীয় রীতি মানা জরুরি। অনুষ্ঠানে স্তন ক্যানসারের সুস্থ হওয়া নারীরা তাদের অদম্য মনোবল ও আত্মবিশ্বাসের গল্প তুলে ধরেন।
পাশাপাশি যারা রোগটির বিরুদ্ধে লড়াই করে যাচ্ছেন, তাদের ধৈর্য্য সহকারে যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার জন্য অনুপ্রাণিত করেন। তাদের সহায়তাকারী আপনজনদের প্রতি সহানুভূতিশীল হয়ে পাশে থাকার আবেদন জানান।
অনুষ্ঠানে এমজিআই এর এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর ও হেড অব এক্সপোর্ট সামিরা রহমান, সিনিয়র জিএম (ব্র্যান্ড) কাজী মো. মহিউদ্দিন এবং জিএম (সেলস) মো. ইয়াছিন মোল্লাসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এবং ক্যানসারজয়ী নারীদের আপনজনেরা অংশগ্রহণ করেন। সমাজ থেকে স্তন ক্যান্সারের গ্লানি মোছার শপথে ফ্রেশ টিস্যু এবং ফ্রেশ অনন্যা স্যানিটারি ন্যাপকিনের বিভিন্ন কার্যক্রম ভবিষ্যতেও অব্যাহত থাকবে।
এএএম/এমআরএম/জিকেএস