ভিডিও EN
  1. Home/
  2. জাতীয়

নির্বাচনী সংঘাতে এখন মামলা হয় কিন্তু বিচার হয় না: রানা দাশগুপ্ত

নিজস্ব প্রতিবেদক | প্রকাশিত: ০২:৫০ পিএম, ১১ অক্টোবর ২০২৩

বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রানা দাশগুপ্ত বলেছেন, অতীতে নির্বাচনী সংঘাত বা সাম্প্রদায়িক হামলার মামলা নেওয়া হতো, তদন্ত হতো। কিন্তু এখন মামলা নেয় কিন্তু বিচার হয় না। সরকারি দলের সঙ্গে যারা যুক্ত তাদের বিরুদ্ধে চার্জশিটও হয় না।

বুধবার (১১ অক্টোবর) নির্বাচন ভবনে মানবাধিকার সংগঠন বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের পক্ষে প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল বরাবর স্মারকলিপি দেওয়া হয়। সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক রানা দাশগুপ্ত স্মারকলিপি প্রদান করেন।

এসময় আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সাম্প্রদায়িক সংঘাতের আশঙ্কার কথাও বলেন তিনি।

আরও পড়ুন > সাম্প্রদায়িক সংঘাতের আশঙ্কা গুরুত্ব সহকারে নিয়েছি: সিইসি

রানা দাশগুপ্ত বলেন, আপনারা লক্ষ্য করবেন কুমিল্লার বাহার তিনি দুর্গাপূজা সামনে রেখে বললেন, এটা নাকি মদভক্তি পূজা। তিনি এটাও বলেছেন, মদ যদি দেওয়া বন্ধ হয়ে যায় তাহলে পূজা পড়ে যাবে। এর আগে মুন্সিগঞ্জের মেয়র আওয়ামী লীগের প্রার্থী ছিলেন। তিনি এমপি মৃণাল দাশকে গালি দিলেন মালাউন হিসেবে। অতএব আমরা পরিষ্কার করে বলতে চাই সাম্প্রদায়িক অপশক্তি সব রাজনৈতিক দলের মধ্যে কম-বেশি ক্রিয়াশীল।

সহিংসতার আলামত পাচ্ছেন কি না এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সারাদেশে ইতোমধ্যে বিগ্রহ ভাঙচুর, মন্দিরে হামলার মধ্য দিয়েই আমরা সাম্প্রদায়িক সহিংসতার শুরু হতে দেখেছি। যেহেতু নির্বাচনকালীন সময়ে নির্বাচন কমিশনের হাতেই আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ হবে সেহেতু আপনাদেরকেই সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। কমিশনকে আইনের যা কিছু আছে সেগুলো আক্ষরিক অর্থে ব্যবহার করার জন্য বলেছি।

রানা দাশ গুপ্ত বলেন, আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে আমাদের উৎকন্ঠা-উদ্বেগ আছে, এমন শঙ্কা প্রকাশ করছি। আমরা পরিষ্কার করে বলেছি, নির্বাচনে আমরা সবাই মিলে ভোট দিতে চাই। কিন্তু নির্বাচনের যে পরিবেশ, সে হিসেবে আমরা সহিংসতামূলক নির্বাচন চাই না। আমরা নির্বাচনী প্রচারণায় যে সাম্প্রদায়িকতা ব্যবহার করা হয়, আমরা তার অবসান চাই। যে সাম্প্রদায়িক গুজব ছাড়নো হয় এবং ছড়িয়ে নির্বিঘ্নে ভোটের পরিবেশ নষ্ট করা হয়।

আমরা বলেছি, এই অপচেষ্টা আমাদের কারও জন্য শুভকর কিছু বয়ে আনবে না। আমরা এ থেকে মুক্তি চাই। অতীতে নির্বাচনের আগে আমরা নির্বাচন কমিশনের কাছ থেকে আশ্বাস পেয়েছি কিন্তু এই আশ্বাস সবসময়ই আমাদের আশ্বাসের মধ্যেই থাকতে হয়েছে। আমরা কখনও আশস্ত হতে পারি নাই। প্রধান নির্বাচন কমিশনার আমাদের আশস্ত করেছেন এবং আশ্বাস দিয়েছেন। অতীতের যে অভিজ্ঞতা সেটা যেন পুনরাবৃত্তি না হয়।

আমাদের দাবির প্রেক্ষিতে সিইসি বলেছেন, এগুলো আমাদেরও নীতিমালাতে আছে। কিন্তু আমরা বলেছি, আইন আছে কেতাবে। কিন্তু আইনের প্রয়োগটা একটু কম হয়। আমরা আইনের প্রয়োগটা চাই। আমরা সুষ্ঠু, অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন চাই। যেখানে ধর্মীয় জাতিগত সংখ্যালঘু সম্প্রদায় ইস্যু নয়। আমার ভোট আমি দিবো, যাকে খুশি তাকে দেবো, আমরা সেই স্লোগানে বিশ্বাসী।

আরও পড়ুন > মার্কিন প্রাক-নির্বাচনী পর্যবেক্ষক দল স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে

তিনি বলেন, আমরা অতীতে আশা করেছিলাম আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর এই ঘটনাগুলোর পুনরাবৃত্তি হবে না। কিন্তু ২০১১ সালে যখন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে দেলোয়ার হোসেন সাঈদীর বিচার প্রক্রিয়া শুরু হলো, তারপর থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত আমরা নির্বিচারে গোটা বাংলাদেশে আবারও সেসব ঘটনা প্রত্যক্ষ করেছি। এখানে তফাতটা হচ্ছে, এই সময়ের মধ্যে রাষ্ট্রের সঙ্গে সহিংসতার সম্পর্ক নাই। আওয়ামী লীগের অভ্যন্তরে ঘাপটি মেরে থাকা সাম্প্রদায়িক অপশক্তির যৌথ মেলবন্ধনে ২০১১ সালের পর থেকে এ পর্যন্ত ঘটনাগুলো ঘটেছে।

তিনি বলেন, আজকে যদি রাজনৈতিক দলগুলো একটা সমঝোতারভিত্তিতে নির্বাচন করতো, যেটা অতীতে হয়েছে। তারপরও কিন্তু অতীতে নির্বাচনে সহিংসতা হয়েছে। আজ পর্যন্ত দলগুলোর মধ্যে কোনো রকম সমঝোতার আলামত দেখতে পাচ্ছি না। যদি সমঝোতা হতো তাহলে আমরা তাদেরকে বলতে পারতাম নির্বাচনী সহিংসতা বন্ধে আপনারা রাজনৈতিক দলগুলো ঐক্যমত্যের ভিত্তিতে আপনারা আপনাদের ভূমিকা পালন করুন। অন্যান্য বারের চেয়ে এবার নির্বাচনী সহিংসতা বেশি হবে বলেও আশঙ্কা প্রকাশ করেন তিনি।

তিনি আরও বলেন, দলগুলো আমাদের দাবার গুটি হিসেবে ব্যবহার করে। তারা মনে করে, এরা ভোট দিতে আসলেই বিপদ, আবার কেউ মনে করে এরা ভোট না দিয়ে যাবে কোথায়। আমরা এখানে এসেছি, কারণ আমরা ভোট দিতে যেতে চাই।

এমওএস/এসএনআর/এমএস