ভিডিও EN
  1. Home/
  2. জাতীয়

ভাস্কর ফেরদৌসী প্রিয়ভাষিণীর স্মৃতিচিহ্ন সংরক্ষণের দাবি

নিজস্ব প্রতিবেদক | প্রকাশিত: ০৪:১২ পিএম, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৩

স্বাধীনতা পদকপ্রাপ্ত বীর মুক্তিযোদ্ধা ভাস্কর ফেরদৌসী প্রিয়ভাষিণীর শিল্পকর্মসহ তার স্মৃতিচিহ্ন সংরক্ষণের জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন বিশিষ্টজনরা। পাশাপাশি তার শিল্পকর্মের চৌর্যবৃত্তি রোধেরও দাবি জানানো হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (২১ সেপ্টেম্বর) সকালে জাতীয় প্রেস ক্লাবে জাগরণ সাংস্কৃতিক স্কোয়াড আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানানো হয়।

একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সভাপতি শাহরিয়ার কবিরের সভাপতিত্বে সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য উপস্থাপন করেন ভাস্কর ফেরদৌসী প্রিয়ভাষিণীর কন্যা ফুলেশ্বরী প্রিয়নন্দিনী। বক্তব্য দেন অভিনেত্রী শম্পা রেজা, জাগরণ সাংস্কৃতিক স্কোয়াডের নির্বাহী সভাপতি ও আবৃত্তিশিল্পী শওকত আলী, মানবাধিকারকর্মী শারমিন শামস মুনমুন, লেখক শাশ্বতী দীপ্ত ও তরুণ চলচ্চিত্র নির্মাতা শাহাদাত রাসেল।

সভাপতির বক্তব্যে শাহরিয়ার কবির বলেন, ফেরদৌসী প্রিয়ভাষিণীর শিল্পকর্ম সংরক্ষণ না হওয়ায় তা নানাভাবে হারিয়ে যেতে বসেছে। তার শিল্পকর্ম চৌর্যবৃত্তি হচ্ছে। শিল্পকর্মগুলো সরকারি উদ্যোগে সংরক্ষণ করা দরকার। তবে, মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিকর্মগুলো কপিরাইট করা ঠিক নয়। সবার জন্য উন্মুক্ত থাকতে হবে। সরকার প্রতিটি উপজেলায় বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য স্থাপনের সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। কিন্তু এখনো সেটি বাস্তবায়ন হয়নি। আমরা অবিলম্বে সরকারকে প্রতিটি উপজেলায় বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য স্থাপনের দাবি জানাচ্ছি।’

শওকত আলী বলেন, সরকার উদ্যোগ নিলে জাতীয় জাদুঘর ও মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরসহ বিভিন্ন মাধ্যমে ফেরদৌসী প্রিয়ভাষিণীর শিল্পকর্ম সংরক্ষণ করা সম্ভব। তিনি সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়কে এ ব্যাপারে উদ্যোগ নেওয়ার আহ্বান জানান।

শম্পা রেজা বলেন, ‘শিল্পকর্ম নকল করা, কপি করাও শিল্পসন্ত্রাস। এসব ব্যাপারে সরকারের চোখ বন্ধ কেন? ফেরদৌসী প্রিয়ভাষিণীসহ মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিচিহ্ন কপি হয়ে যাচ্ছে। এসব ব্যাপারে সরকারের পাশাপাশি সংশ্লিষ্টদের সোচ্চার হওয়া প্রয়োজন। তিনি এ সময় চৌর্যবৃত্তির সঙ্গে জড়িতদের আইনের আওতায় এনে শাস্তিরও দাবি করেন।

লিখিত বক্তব্যে ফুলেশ্বরী প্রিয়নন্দিনী বলেন, একাত্তরের বীরাঙ্গনা মুক্তিযোদ্ধা বীর ফেরদৌসী প্রিয়ভাষিণীর অনবদ্য সৃষ্টিকে মানুষের কাছে পৌঁছে দিয়ে তাকে পরিচিত করেছিলেন কিংবদন্তি চিত্রশিল্পী এস এম সুলতান। তার শিল্পকর্মগুলো কেবল দৃষ্টিনন্দনই নয়, এ শিল্পকর্মের সঙ্গে জড়িয়ে আছে ১৯৭১—এর মহান মুক্তিযুদ্ধে ভয়াবহ নির্যাতনের শিকার এবং যুদ্ধপরবর্তী সময়ে পরিবার ও সমাজে নিগৃহীত একজন বীরাঙ্গনা মুক্তিযোদ্ধা নারীর আগুনপাখি ফিনিক্স হয়ে ওঠার গল্প। কিন্তু শিল্পকর্মগুলো চৌর্যবৃত্তি হচ্ছে, হারিয়ে যাচ্ছে সংরক্ষণের অভাবে।

তিনি অভিযোগ করে বলেন, ‘সম্প্রতি নিউইয়র্কপ্রবাসী জনৈক আখতার আহমেদ রাশা নিউইয়র্ক, ঢাকা এবং ঢাকার বাইরে ভাস্কর ফেরদৌসী প্রিয়ভাষিণীর বিভিন্ন সময়ের ভাস্কর্যগুলোর নকল করে মৌলিক শিল্পকর্ম হিসেবে প্রদর্শনীতে উপস্থাপন করছেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেখেছি আরও কেউ কেউ ফেরদৌসী প্রিয়ভাষিণীর শিল্পকর্ম সামান্য পরিবর্তন বা বিকৃত করে নিজেদের নামে চালিয়ে দিচ্ছেন। মৌখিকভাবে বহুবার অনুরোধের পরও আখতার আহমেদ রাশার এ চৌর্যবৃত্তিকে নিবৃত্ত করা সম্ভব হয়নি, তাই আইনি প্রক্রিয়া নিতে বাধ্য হচ্ছি।’ তিনি ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য বীর মুক্তিযোদ্ধা ভাস্কর ফেরদৌসী প্রিয়ভাষিণীর রেখে যাওয়া অমূল্য ভাস্কর্যগুলো যথাযথভাবে সংরক্ষণের জন্য গণমাধ্যম, নাগরিক সমাজ এবং সরকারের সহযোগিতা প্রত্যাশা করেন।

নাহিদ হাসান/এমএএইচ/জিকেএস