ভিডিও EN
  1. Home/
  2. জাতীয়

নতুন জঙ্গি সংগঠন ‘তাওহীদুল উলূহিয়্যাহ’, পরিকল্পনা ছিল হামলার

নিজস্ব প্রতিবেদক | প্রকাশিত: ০৯:১১ পিএম, ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৩

তাওহীদুল উলূহিয়্যাহ (আল-জিহাদী) নামে নতুন একটি জঙ্গি সংগঠনের আত্মপ্রকাশ ঘটেছে। দুই-তিন মাস ধরে সংগঠনটি তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে। ২০২৪ সালে দেশে বড় হামলার পরিকল্পনা ছিল সংগঠনটির।

গোয়েন্দা সূত্রে এ তথ্য জানার পর জঙ্গি সংগঠনের শীর্ষ নেতা মো.জুয়েল মোল্লাসহ (২৯) তিন জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশের অ্যান্টি টেররিজম ইউনিট (এটিইউ)। গ্রেফতার অন্য দুজন হলেন- মো. রাহুল হোসেন (২১) ও মো. গাজিউল ইসলাম (৪০)।

শনিবার (১৬ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর বারিধারায় এন্টি টেররিজম ইউনিট হেডকোয়ার্টার্স কনফারেন্স রুমে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান এটিইউয়ের ডিআইজি (অপারেশন্স) মোহা. আলীম মাহমুদ।

ডিআইজি আলীম মাহমুদ বলেন, গত ১৩ সেপ্টেম্বর থেকে অভিযান পরিচালনা করে জুয়েলকে বাগেরহাট থেকে, জয়পুরহাট থেকে রাহুলকে ও রাজধানীর ভাসানটেক এলাকা থেকে গাজীউল ইসলামকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারদের মধ্যে জুয়েল এ সংগঠনের প্রধান। বাকি দুজন শীর্ষ পর্যায়ের নেতা। সংগঠনটি ২ থেকে ৩ মাস ধরে কার্যক্রম শুরু করেছে। তাদের পরিকল্পনা ছিল ২০২৪ সালে দেশে বড় ধরনের জঙ্গি হামলা করা।

তিনি বলেন, আমরা গত কয়েক মাস ধরে গোয়েন্দা তথ্যের মাধ্যমে খবর পাচ্ছিলাম কিছু উগ্রবাদী একত্রিত হচ্ছে। যারা দেশের গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাকে বিশ্বাস করে না। গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাকে বানচাল করে উগ্রবাদী ব্যবস্থা কায়েমের জন্য একত্রিত হচ্ছিল। গ্রেফতাররা সবাই আগে কোনো না কোনো জঙ্গি সংগঠনের সদস্য ছিল। কিন্তু তারা নতুন লক্ষ্য নিয়ে একটি ব্যানারে সবাই নতুন করে একত্রিত হচ্ছিল। তারা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিভিন্ন ধরনের ভিডিও ও পোস্টের মাধ্যমে নতুন সদস্য সংগ্রহ করে আসছিল।

নতুন জঙ্গি সংগঠন ‘তাওহীদুল উলূহিয়্যাহ’, পরিকল্পনা ছিল হামলার

এ সংগঠনের প্রধান জুয়েল। আমরা প্রথমে জুয়েলকে বাগেরহাটের রামপাল থেকে গ্রেফতার করি। এরপর তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে বাকি দুই শীর্ষ নেতাকে গ্রেফতার করা হয়। তাদের গ্রেফতারের সময় সংগঠনের আটটি ব্যানার জব্দ করা হয়।

তিনি আরও বলেন, তারা প্রাথমিকভাবে সদস্য সংগ্রহের পাশাপাশি অর্থও সংগ্রহ করছিল। এ অর্থ দিয়ে তারা অস্ত্র কেনাসহ বোমা তৈরি সরঞ্জাম সংগ্রহ করার পরিকল্পনা ছিল। এ অস্ত্র ও বোমা দিয়ে জঙ্গি হামলার পরিকল্পনা ছিল।

এটিইউয়ের ডিআইজি বলেন, আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের সদস্য জসীম উদ্দিন রহমানি যিনি বর্তমানে কারাগারে সাজা ভোগ করছেন তার বক্তব্যে মূলত উদ্বুদ্ধ হয় জুয়েল। এর ফলে তিনি নতুন এ জঙ্গি সংগঠনটি সৃষ্টি করেন। জুয়েল নিজেও আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের সদস্য ছিলেন। জসীম উদ্দিন রহমানিকেও কারাগার থেকে মুক্ত করার পরিকল্পনা ছিল জুয়েলের।

সংগঠনটির অর্থের যোগানদাতা কারা এবং সংগঠনটির সদস্য সংখ্যা কত জানতে চাইলে এটিইউয়ের এ কর্মকর্তা বলেন, সংগঠনটিতে এখন পর্যন্ত ৮০ থেকে ৯০ জন সদস্য আছে বলে জানতে পেরেছি। তাদের অর্থদাতা কে তা এখনো জানা যায়নি। তবে, সংগঠনটির অর্থ সংগ্রহের কাজ করছিলেন রাহুল। এছাড়া রাহুল বোমা তৈরির দায়িত্বেও ছিল।

নতুন জঙ্গি সংগঠন ‘তাওহীদুল উলূহিয়্যাহ’, পরিকল্পনা ছিল হামলার

নির্বাচনকে কেন্দ্র করে তাদের হামলার পরিকল্পনা ছিল কিনা জানতে চাইলে ডিআইজি আলীম মাহমুদ বলেন, এ বিষয়ে তাদের আমরা জিজ্ঞাসাবাদ করবো। তবে নির্বাচনকে কেন্দ্র করে হামলার পরিকল্পনা ছিল কিনা সে সম্পর্কে কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। ২০২৪ সালে বড় একটি জঙ্গি হামলার পরিকল্পনা ছিল। সেই জন্য বোমা বানানোর চেষ্টা করছিল তারা। তবে তাদের হামলার টার্গেট কি তা এখনো জানা যায়নি, সে বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে জানার চেষ্টা করবো।

সংবাদ সম্মেলনে এটিইউ'র পুলিশ সুপার (অপারেশনস্) মাহাম্মদ ছানোয়ার হোসেন বলেন, নতুন জঙ্গি সংগঠনটির মূল পরিকল্পনাকারী জুয়েল মোল্লা নিষিদ্ধ ঘোষিত আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের সদস্য ছিলেন। পরবর্তীতে র্যাবের হাতে গ্রেফতার হয়। ৯ মাস কারাগারে ছিলেন। এ সময়ে কারাগারে বসেই নিজের একটি সংগঠন করার পরিকল্পনা করেন। মাত্র ক্লাস সেভেন পাস জুয়েল মোল্লা পেশায় একটি বেকারিকর্মী ছিলেন। গ্রেফতার বাকি দুজন হিজবুত তাওহীদের সদস্য ছিলেন।

গ্রেফতার রাহুল পেশায় একটি আইটি প্রতিষ্ঠানের কর্মী ছিলেন। প্রযুক্তির বিষয়ে জ্ঞান থাকায় রাহুল বোমা তৈরির বিষয়ে খোঁজখবর নিচ্ছিল। এছাড়া বোমা হামলার অর্থ জোগাতে নিজের জমি বিক্রির প্রস্তুতি নিচ্ছেল রাহুল। রাহুল অনলাইনে সদস্য সংগ্রহের কাজও করছি।

টিটি/এমএএইচ/জেআইএম