‘আমার সাজানো সংসার ডেঙ্গুতে তছনছ’
হঠাৎ ডেঙ্গুর কালো থাবায় আমার সাজানো সংসার তছনছ। আমার স্ত্রী নাসিমা আক্তার গৃহিণী ছিলেন। গত ৩১ আগস্ট থেকে জ্বরে ভুগছিল। এর দুইদিন পর টেস্ট করালে পজিটিভ আসে তার। এরপর রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। সেখানে হঠাৎ ব্লাড প্রেসার কমে যায়, পেট ফুলে যায়। অনেক চেষ্টা করেও নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রের (আইসিইউ) ব্যবস্থা করতে পারিনি। সবশেষ গত ৪ সেপ্টেম্বর জাপান-বাংলাদেশ ফ্রেন্ডশিপ হাসপাতালে একটা বেড খালি পাই। কিন্তু সেখানে নিয়ে যাওয়ার আগেই আল্লাহর ডাকে চলে যান নাসিমা। জাগো নিউজের সঙ্গে আলাপকালে এভাবেই কথাগুলো বলছিলেন- ডেঙ্গুতে মারা যাওয়া নাসিনা আক্তারের স্বামী বাদল মিয়া।
আরও পড়ুন>> বরিশালে একদিনে ৩১৮ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত
সোমবার (১১ সেপ্টেম্বর) সকালে বাদল মিয়া বলেন, আমার বাড়ি কুষ্টিয়ায়। রাজধানীর মিরপুর ১ নম্বর এলাকায় স্ত্রী ও দুই সন্তান নিয়ে ভাড়া বাসায় বসবাস করছিলাম। একটি পোশাক কারখানায় চাকরি করছি। স্ত্রী গৃহিণী ছিলেন। দুই সন্তানের মধ্যে বড় ছেলের বয়স ১১ ও ছোট ছেলের বয়স সাত বছর। দুইজনই মিরপুর এলাকার দুইটি মাদরাসায় পড়াশোনা করছে। কিছুটা আর্থিক টানাপোড়েন থাকলেও সুখেই যাচ্ছিল আমাদের সময়।
হঠাৎ ডেঙ্গুতে নাসিমা আক্তারের মৃত্যুতে পরিবারের নেমে এসেছে শোকের ছায়া। সাজানো সংসার ডেঙ্গুতে তছনছ। সন্তানদের নানাভাবে বাবা, ফুফু, খালারা বুঝিয়ে অন্য মনষ্ক করে রেখেছেন। যাতে মায়ের কথা মনে পড়ে কষ্ট না পায়। তবুও সন্তানের মন তো মাকেই চায়। বার বার মাকে খুঁজে সন্তানেরা। মা কোথায় গেছেন, আসছেন না কেন, নানান প্রশ্ন।
আরও পড়ুন>> প্লাটিলেটে চড়া খরচ, ডেঙ্গুর চিকিৎসায় পকেট ফাঁকা
ক্ষোভপ্রকাশ করে তিনি বলেন, দেশের একটি সরকারি হাসপাতালে আইসিইউ বেডের সংখ্যা মাত্র ২০ টা। সোহরাওয়ার্দী হাসপাতাল তো বাংলাদেশের সব জায়গার রোগীদের চিকিৎসা দেওয়া হয়। এত মানুষের চিকিৎসা কেন্দ্রে মাত্র ২০টা আইসিইউ, যা খুবই কম। এছাড়া শারীরিক পরীক্ষা-নিরীক্ষার রিপোর্ট পেতেও দেরি হয়। চিকিৎসাব্যবস্থা আরও উন্নত হওয়া উচিত।
এএএম/এমএএইচ/জেআইএম