ভিডিও EN
  1. Home/
  2. জাতীয়

সন্তানের স্বীকৃতি ও স্বামীর বিচার চেয়ে স্ত্রীর সংবাদ সম্মেলন

নিজস্ব প্রতিবেদক | প্রকাশিত: ০২:৩২ পিএম, ০৬ সেপ্টেম্বর ২০২৩

আগের দুই বিয়ের তথ্য গোপন করে নোয়াখালী জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী আহসান হাবিবের বিরুদ্ধে প্রতারণামূলক বহুবিবাহের অভিযোগ তুলেছেন তৃতীয় স্ত্রী চিকিৎসক সুমনা ইসলাম।

স্ত্রীর স্বীকৃতি, সন্তানের পিতৃপরিচয় অস্বীকার করে উল্টো নানা অপপ্রচার, সামাজিকভাবে সম্মানহানির অভিযোগ তুলেছেন তিনি।

সামাজিকভাবে হেয়-প্রতিপন্ন করা থেকে বিরত থেকে স্ত্রী হিসেবে নিজের স্বীকৃতি ও সন্তানের পিতৃপরিচয়ের নিশ্চয়তা দাবি করেছেন। এজন্য সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন ভুক্তভোগী সুমনা ইসলাম।

বুধবার (৬ সেপ্টেম্বর) দুপুরে বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (ক্র্যাব) মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি উত্থাপন করেন তিনি।

আরও পড়ুন: স্ত্রীর স্বীকৃতি পেতে পাঁচদিন ধরে অনশনে কলেজছাত্রী

লিখিত বক্তব্যে ডা. সুমনা ইসলাম বলেন, আমি রাশিয়া থেকে এমবিবিএস পাসের পর ২০১৯ সালে পাবনা মেডিকেলে ইন্টার্নশিপ করি। ২০১৯ সালে পাবনায় থাকাকালে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর ও নোয়াখালী জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আহসান হাবীবের (৩৮) সঙ্গে পরিচয় হয়।

২০১৯ সালের ২ মার্চ সাক্ষাৎ করে আহসান হাবীব বিয়ের প্রস্তাব দেন। কথোপকথনের এক পর্যায়ে পরিবার সম্মতিতে দ্বিতীয় বিবাহের ডিভোর্সের কাগজ দেখিয়ে ২০২১ সালের ২৫ জানুয়ারি বিয়ে করি। কিন্তু আহসান হাবীব তার প্রথম বিয়ের তথ্য গোপন করেন, যা আমি জানতাম না। আমাদের বিবাহিত জীবনে কিছুদিন পর আহসান হাবীবের আচার-আচরণ সন্দেহ হয়। তার বাড়িতে যেতে সে চাইলে বিভিন্ন ধরনের টালবাহানা করে। তার নেত্রকোনার বাসভবনে আমি স্থায়ীভাবে তার সঙ্গে বসবাস করতে চাইলে সে এটা সম্ভব না বলে জানায়।

তিনি বলেন, পরে খোঁজ-খবর নিয়ে জানতে পারি যে, আহসান হাবীবের পূর্বে আরও একটি বিবাহিত স্ত্রী (আরিফা পারভীন) আছে। সেখানে একটি ছেলে সন্তান এবং দ্বিতীয় স্ত্রী হুমায়রার রহমানের সঙ্গে সংসার জীবন চলমান ও দুটি সন্তান রয়েছে। এসব বিষয় নিয়ে আহসাব হাবীবের কাছে জানতে চাইলে ক্ষীপ্ত হয়ে আমাকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন শুরু করেন। আমি, আমার মা ও ভাই তার গ্রামের বাড়ি মহাদেবপুর, নওগাঁ গেলে সন্ত্রাসী বাহিনী দিয়ে আমি, আমার মা ও ভাইকে হত্যার উদ্দেশ্যে মারধর করেন। এ ঘটনায় মহাদেবপুর থানায় একটি মামলা দায়ের করি। মামলার পর তিনি আরও হিংস্র হয়ে ওঠেন। পরে স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব বরাবর একটি অভিযোগ দিই। পরে আমার সাথে আপস করেন। ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে সংসার করার উদ্দেশ্যে মামলাটি প্রত্যাহার করি।

আরও পড়ুন: স্ত্রীর স্বীকৃতি পেতে কলেজ অধ্যক্ষের দপ্তরে চল্লিশোর্ধ্ব নারী

কিছুদিন পর সন্তান-সম্ভাবা হওয়ার খবরে আহসান হাবীব আমার সন্তান নষ্ট করার জন্য চাপ দিতে থাকে, না করলে আমাকে ডিভোর্স দেওয়ার হুমকি দেয়। সকল যোগাযোগ বন্ধ করে দেয়। তার তখনকার কর্মস্থল নেত্রকোনায় গেলে আমাকে ও আমার মাকে তালাবদ্ধ করে রাখে। পরে পুলিশের সহায়তায় নিজেদের উদ্ধার করি। ২০২২ সালের ২৭ মার্চ ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা করি।

চিকিৎসক সুমনা আরও বলেন, আমি সংসার টেকাতে চেষ্টাও করে। কিন্তু সে আমাকে নানাভাবে হেয়প্রতিপন্ন করার চেষ্টা করেছে। আমার ডাক্তারি লাইসেন্স বাতিল করার চেষ্টায় তার বান্ধবী মালিহা মাহজাবিন নামে অজ্ঞাতনামা নারীকে দিয়ে ভিত্তিহীন ও বানোয়াট তথ্যে বাংলাদেশ মেডিকেল ও ডেন্টাল কাউন্সিলের রেজিস্ট্রার, আবেদন করায়।

তিনি বলেন, বাসুকা করপোরেশন নামে প্রতিষ্ঠান খুলে নেত্রকোনা জেলার আটপাড়া উপজেলায় ৯৩টি টিউবওয়েল বসানোর কাজ করেন তিনি। এর সব কাগজপত্র করেন আমার নামে। যার টেন্ডার আইডি- ৫১০২৬২। দরপত্রের বিপরীতে বাসুকা করপোরেশন পারফরম্যান্স সিকিউরিটি বাবদ ৬ লাখ ৫৬ হাজার ৫৬৬ টাকা ব্যাংক জামানত রাখে। জামানতকৃত টাকা এখনও অসংগৃহীত রয়েছে।

আরও পড়ুন: ‘স্ত্রীর স্বীকৃতি না পেলে মরে যাবো’

তিনি আরও বলেন, ঠিকাদারি কাজটি সম্পন্ন করার জন্য মালামাল কেনার উদ্দেশ্যে আহসান হাবীব আমার কাছ থেকে ৫০ লাখ টাকা বিভিন্ন সময়ে পর্যায়ক্রমে নিয়েছে। অথচ বিল না দিয়ে কাজটি বাতিল করে ২০২১ সালের ৯ জুন আবার দরপত্র আহ্বান করে। এমন প্রতারণার বিষয়ে জানতে চাইলেও তিনি নানাভাবে হুমকি দেন। একইভাবে দ্বিতীয় স্ত্রী, শালী ও অন্যান্য আত্মীয় স্বজনের নামে ট্রেড লাইসেন্স করে ক্ষমতার অপব্যবহার করে নিজে কাজ করে আর্থিকভাবে লাভবান হয়েছেন।

এক প্রশ্নের জবাবে চিকিৎসক সুমনা ইসলাম বলেন, আমি সংসার করতে চাই, নিজের স্ত্রীর স্বীকৃতি ও সন্তানের স্বীকৃতি চাই। তার নানামুখি অসম্মানজনক তৎপরতা বন্ধ চাই। মিথ্যাচার, সামাজিক সম্মানহানি থেকে রেহাই পেতে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেন তিনি।

টিটি/এমআরএম/এএসএম