ভিডিও EN
  1. Home/
  2. জাতীয়

বিদ্যুতের গ্রাহক সেবা

আগের দিন শেষ: বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক | প্রকাশিত: ০৪:১৯ পিএম, ২৪ আগস্ট ২০২৩

বিদ্যুতের গ্রাহক সেবা নিশ্চিত করার তাগাদা দিয়ে বিদ্যুৎ বিতরণ সংস্থার জিএম, ডিজিএম এবং এজিএমদের উদ্দেশ্য বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেছেন, আগের দিন শেষ। এখন সেবা দিতে হবে। সেবা দিলে পয়সা পাবো, পয়সা পেলে বেতন হবে।

বৃহস্পতিবার (২৪ আগস্ট) বিদ্যুৎ ভবনে ‘বিদ্যুৎ সেক্টরের সমন্বিত গ্রাহক সেবা ব্যবস্থাপনা ও হটলাইন ১৬৯৯৯’ এর উদ্বোধন উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, আমার নম্বরে অনেকে ফোন দেন। আমি বলি ভাই, সংস্থাকে ফোন দিন। বলে বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের (আরইবি) জিএম, ডিজিএম, এজিএম ফোন ধরেন না।

‘আপনাদের দায়িত্ব সার্ভিস দেওয়া। জিএম, এজিএমদের ট্রেনিংয়ের ব্যবস্থা করতে হবে। কাস্টমার ফ্রেন্ডলি হতে হবে। চেয়ারম্যান জানেন, সপ্তাহে না হলেও ২০ বার ফোন দেয়’ বলেন নসরুল হামিদ।

আরও পড়ুন>> বিদ্যুতের গ্রাহক সেবায় হটলাইন ১৬৯৯৯ চালু

তিনি বলেন, জিএম, এজিএম, ডিজিএমদের বলতে হবে আগের দিন শেষ। এখন সেবা দিতে হবে। সেবা দিলে পয়সা পাবো, পয়সা পেলে বেতন হবে। না হলে ভাই কাজ হবে না। এই ধারণা তাদের দিতে হবে।

চালু হওয়া নতুন হটলাইন ১৬৯৯৯ সম্পর্কে প্রতিমন্ত্রী বলেন, আমি এতক্ষণ ধরে ট্রাই করছিলাম প্রায় সবগুলো নম্বরে। একটু ট্রাই করে দেখলাম মোটামুটি... হচ্ছে। তো আরও ট্রেনিং লাগবে। অবশ্যই সময় লাগবে, এটা আস্তে আস্তে তৈরি হবে। সব থেকে বেশি দরকার আরইবিতে।

তিনি বলেন, কিছু ফলস মেকিং কল দিতে হবে, দেখতে হবে সাকসেসফুলি হচ্ছে কি না। আমি কিন্তু মাঝে মধ্যে ফোন করবো। রাত তিনটা বাজে কল করে দেখবো। আসলে লোকগুলো থাকে কি না।

হটলাইন নিয়ে সচেতনতা বাড়ানোর তাগিদ দিয়ে তিনি বলেন, সাড়ে চার কোটি মানুষের কাছে বিল যায়, এ বিলের মধ্যে হটলাইন নম্বর দিয়ে দেবেন। অনলাইনে এসএমএস যাবে, এসএমএসের মধ্যে হটলাইন নম্বর দিয়ে দেবেন। গ্রাহকের সবার নম্বর আছে আপনাদের কাছে। আপনাদের প্রচুর প্রচার করতে হবে, যাতে ৯৯৯ এর মতো এটিও মানুষের হাতের কাছে চলে আসে।

তিনি আরও বলেন, গ্রাহক সেবার উন্নতি হোক আমরা এটাই চায়। একটা মানুষ চায় আমি ফোন করে কাকে পাচ্ছি, কেউ আমার কথাটা শুনছে কি না। এটি দেখবেন, এতে অর্ধেক সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে।

এ সময় একটি ঘটনা উল্লেখ করে প্রতিমন্ত্রী বলেন, এক ব্যক্তির বাসার নিচে কাট আউটের সুইচ অফ হয়ে গেছে। উনি আমার পুরান ঢাকার নম্বর জানতেন। উনি কন্টিনিউ আমাকে ফোন দিচ্ছেন। দেখেন তো আমার বাড়িতে বিদ্যুৎ নেই, সব বাড়িতে বিদ্যুৎ আছে। আপনি দেখেন তো, আপনার লোকজন কেউ তো ফোন ধরেন না।

‘আমি বললাম আপনার বাড়ি ছাড়া ওখানে সব বাড়িতে বিদ্যুৎ আছে? বলে হ্যাঁ। আমি বলি, আপনার ওপর রাগ করে সংস্থার কেউ বন্ধ করে দেবে, এটা তো হতে পারে না। আমি জিজ্ঞেস করলাম, কাট আউট কোথায়? বলে আমার বাসার সিঁড়ির নিচে। আমি বললাম দেখেন না ওটা বন্ধ আছে কি না। এটাও আছে। ওরা দেখতেছে, হঠাৎ করে বিদ্যুৎ চলে গেলো’ বলেন নসরুল হামিদ।

বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান মো. মাহবুবুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন বিদ্যুৎ বিভাগের সিনিয়র সচিব মো. হাবিবুর রহমান। এছাড়া বক্তব্য দেন ডেসকোর ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) কাওসার আমীর আলী, ডিপিডিসি'র এমডি বিকাশ দেওয়ান এবং আরইবি'র চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সেলিম উদ্দিন।

বিদ্যুৎ বিভাগের সিনিয়র সচিব মো. হাবিবুর রহমান বলেন, গ্রাহক ফোন দিয়ে যেন রেসপন্স পায়। দেখা গেলো গ্রাহক ঘণ্টার পর ঘণ্টা ফোন দিয়ে পাচ্ছেন না, তাহলে গ্রাহক শুরুতেই হতাশ হবেন। যারা দায়িত্বে থাকবেন তাদের অনুরোধ করবো গ্রাহক যাতে কল করে উত্তর পান।

অনুষ্ঠানে বিদ্যুৎ সেক্টরের সমন্বিত গ্রাহক সেবার লক্ষ্য হটলাইন ১৬৯৯৯ উদ্বোধন করা হয়। এর ফলে এখন থেকে বাংলাদেশের সব বিদ্যুৎ গ্রাহক সরাসরি হটলাইন নম্বর ১৬৯৯৯, অ্যান্ড্রয়েড মোবাইল অ্যাপ এবং চ্যাট বট এ তিনটি উপায়ে বিদ্যুৎ সংক্রান্ত যাবতীয় গ্রাহক সেবা নিতে পারবেন।

বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের ব্যবস্থাপনায় এ সমন্বিত গ্রাহক ব্যবস্থাপনা কার্যক্রমটি বাস্তবায়ন হবে। বিদ্যুৎ খাতের ৬টি বিতরণ সংস্থা বা কোম্পানির বিপিডিবি, আরইবি, ডেসকো, ডিপিডিসি, ওজোপাডিকো এবং নেসকো গ্রাহকরা এ সেবা পাবেন।

‘১৬৯৯৯’-এর সেবা প্রক্রিয়া
১৬৯৯৯ নম্বরে কল করার পর বিপিডিবির জন্য ১, বিআরইবির জন্য ২, ডেসকোর জন্য ৩, ডিপিডিসির জন্য ৪, নেসকোর জন্য ৫ এবং ওজোপাডিকোর জন্য ৬ ডায়াল করে নির্দিষ্ট বিদ্যুৎ বিতরণ কোম্পানির দায়িত্বপ্রাপ্ত কল সেন্টার অপারেটরের সঙ্গে কথা বলার মাধ্যমে গ্রাহক তার অভিযোগ দাখিল করতে পারবেন।

‘আগের দিন শেষ’ জিএম-ডিজিএম-এজিএমদের বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী

কল সেন্টার অপারেটর ওই নির্দিষ্ট বিদ্যুৎ বিতরণ সংস্থা বা কোম্পানির কমপ্লাইন্ট ম্যানেজমেন্ট সিস্টেমে (সিএমএস) গ্রাহকের অভিযোগ সংক্রান্ত তথ্যগুলো পূরণ করলেই তাৎক্ষণিক সমাধানের জন্য দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তিরা অভিযোগটি সম্পর্কে অবগত হবেন।

একই সঙ্গে তথ্যটি বিদ্যুৎ বিভাগের সেন্ট্রাল কমপ্লাইন্ট ম্যানেজমেন্ট সিস্টেমে আপডেট হয়ে যাবে। ফলে বিদ্যুৎ বিভাগ এবং ৬ টি বিদ্যুৎ বিতরণ কোম্পানির ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ অথরিটির ড্যাশবোর্ডের মাধ্যমে অভিযোগের ধরন, সর্বমোট অভিযোগ, অভিযোগের বর্তমান অবস্থা ইত্যাদি পর্যবেক্ষণ করতে পারবেন।

অ্যান্ড্রয়েড মোবাইল অ্যাপের সেবা প্রক্রিয়া
গ্রাহক অ্যান্ড্রয়েড মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমে অভিযোগ দাখিল করতে পারবেন। পাওয়ার ডিভিশনের অ্যাপটিতে প্রবেশের পর মোবাইল নম্বর দিয়ে অ্যাপের হোম পেইজে চলে যেতে পারবেন। হোম পেইজের নিচে ‘এড একাউন্ট’ বাটনে ক্লিক করে গ্রাহক তার বিদ্যুৎ বিতরণকারী প্রতিষ্ঠান নির্বাচন করবেন। এরপর গ্রাহক তার অ্যাকাউন্টের ধরণ অনুযায়ী প্রিপেইড বা পোস্টপেইড নির্বাচন করবেন। তারপর গ্রাহক তার মিটার নম্বর অথবা অ্যাকাউন্ট নম্বর প্রবেশ করানোর পর, অ্যাকাউন্ট নম্বর এ ক্লিক করার সঙ্গে সঙ্গে সে তার অ্যাকাউন্টের বিবরণ দেখতে পারবেন এবং এ অ্যাকাউন্টের জন্য গ্রাহক যদি কোনো অভিযোগ করতে চান তাহলে ‘কারেন্ট কমপ্লেন’ এ ক্লিক করার সঙ্গে সঙ্গে সেখানে থাকা ফর্মটিতে যাবতীয় তথ্যপূরণ করার মাধ্যমে অভিযোগ দাখিল করতে পারবেন।

এছাড়া ‘কমপ্লেন হিস্ট্রিতে’ গিয়েও গ্রাহক আগের অভিযোগের সব তথ্য এবং তার অভিযোগগুলো কোন পর্যায়ে আছে তা দেখতে পারবেন। অ্যাপ ব্যবহার করার সময় যদি গ্রাহকের কল সেন্টারের সহযোগিতার প্রয়োজন হয় তাহলে অ্যাপে থাকা ‘হেল্প’ বাটনে ক্লিক করে সরাসরি কল সেন্টারে যোগাযোগ করতে পারবেন।

অভিযোগ সংক্রান্ত তথ্য প্রথমত সেন্ট্রাল কমপ্লাইন্ট ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম তথ্যভান্ডারে যুক্ত হবে। এরপর সেখান থেকে নির্দিষ্ট বিদ্যুৎ বিতরণ কোম্পানির কমপ্লাইন্ট ম্যানেজমেন্ট সিস্টেমে যুক্ত হওয়ার মাধ্যমে অভিযোগটি সমাধানের জন্য দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তিরা অভিযোগটি সম্পর্কে অবহিত হয়ে যাবেন।

চ্যাট বটের সেবা প্রক্রিয়া
গ্রাহকরা পাওয়ার ডিভিশনের আমাদের সোশ্যাল মিডিয়া পেজে চ্যাট বট অপশনটি পাবেন। ‘চ্যাট বট’ অপশনে ক্লিক করার মাধ্যমে গ্রাহক তার সাধারণ জিজ্ঞাসাগুলোর তাৎক্ষণিক উত্তর পেয়ে যাবেন। কোন জিজ্ঞাসার উত্তর তাৎক্ষণিক দেওয়া সম্ভব না হলে সেখানে থাকা কল সেন্টার অপারেটরের সঙ্গে ‘কথা বলুন’ বাটনে চাপ দেওয়ার মাধ্যমে গ্রাহক হটলাইনে কল করে তার জিজ্ঞাসাটি সম্পর্কে জানতে পারবেন।

এমএএস/এমএএইচ/জেআইএম