পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র
ব্রহ্মপুত্র নদে বাঁধ নিয়ে চীনের সঙ্গে কোনো আলোচনা হয়নি
ব্রহ্মপুত্র নদে তিব্বত অঞ্চলে জলবিদ্যুৎ বাঁধ দিচ্ছে চীন। ফলে পানির সুষম বণ্টন না হওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে। এ বিষয়ে চীনের সঙ্গে এখনো কোনো আলোচনা হয়নি বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ও জনকূটনীতি বিভাগের মহাপরিচালক সেহেলী সাবরীন।
বৃহস্পতিবার (১৭ আগস্ট) বিকেলে মন্ত্রণালয়ে সাপ্তাহিক মিডিয়া ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান তিনি।
ব্রিফিংয়ে সেহেলী সাবরীনের কাছে সাংবাদিকরা প্রশ্ন করেন, ব্রহ্মপুত্র নদে নিজেদের অংশে চীন আটটি জলবিদ্যুৎ বাঁধ দিচ্ছে। বলা হচ্ছে, এতে আন্তর্জাতিক নদীর পানির সুষম বণ্টন হবে না। পর্যাপ্ত পানি না পেলে বিপর্যস্ত হবে বাংলাদেশ। এনিয়ে চীনের কাছে বাংলাদেশ কিছু জানতে চেয়েছে কি না।
জবাবে সেহেলী সাবরীন বলেন, এখন পর্যন্ত কোনো আলোচনা শুরু হয়নি। এ বিষয়ে আমরা পর্যাপ্ত তথ্য সরবরাহের চেষ্টা করছি। পরে কোনো তথ্য পেলে আপনাদের জানাবো।
সাবেক ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী টনি ব্লেয়ার বাংলাদেশ সফর করেন। তার এ সফরের উদ্দেশ্য কী, কাদের সঙ্গে তিনি সাক্ষাৎ করেছেন- এমন প্রশ্নে সেহেলী সাবরীন বলেন, টনি ব্লেয়ার ২৬-২৭ জুলাই বাংলাদেশ সফর করেন। এরমধ্যে ২৭ জুলাই সন্ধ্যায় তিনি প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে গণভবনে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন। বৈঠকে টনি ব্লেয়ার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের আর্থসামাজিক ও অবকাঠামোগত উন্নয়নের ভূয়সী প্রশংসা করেন। আগামী দিনে বাংলাদেশের সার্বিক উন্নয়ন আরও গতিশীল হবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি। এসময় প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশ রেলওয়ে খাতের উন্নয়নে যুক্তরাজ্যের সহযোগিতা চান।
সেহেলী সাবরীন আরও বলেন, টনি ব্লেয়ার সাবেক ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী। সে কারণে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে তার সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। আমাদের রেলখাতের যেহেতু অনেক উন্নয়ন হয়েছে এবং অবকাঠামো খাতে অনেক উন্নয়ন চালু রয়েছে, সেহেতু এ বিষয় নিয়ে টনি ব্লেয়ারের সঙ্গে আলোচনা হতেই পারে।
টনি ব্লেয়ার বাংলাদেশে কেন এসেছেন, প্রশ্নে তিনি বলেন, টনি ব্লেয়ার ইনস্টিটিউট ফর গ্লোবাল চেঞ্জের কার্যক্রম প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে জানিয়েছেন। সেটা একটা উদ্দেশ্য ছিল। আর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আর্থসামাজিক উন্নয়ন ও প্রবৃদ্ধির প্রশংসা করেছেন তিনি। অনেকগুলো ইস্যু নিয়ে কথা হয়েছে। এসব উদ্দেশ্য নিয়েই এসেছেন টনি ব্লেয়ার।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র বলেন, ১৩-১৫ আগস্ট মার্কিন কংগ্রেসের দুই সদস্য রিচার্ড ম্যাকরমিক ও এড কেইসসহ ছয় সদস্যের মার্কিন প্রতিনিধিদল বাংলাদেশ সফর করে। সফরের শুরুতেই তারা ধানমন্ডিতে বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘর পরিদর্শন করেন এবং বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। এরপর পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ. কে. আব্দুল মোমেনের সঙ্গে মধ্যাহ্নভোজে মিলিত হয় প্রতিনিধিদল। যেখানে উভয়পক্ষ বাণিজ্য ও বিনিয়োগ, রোহিঙ্গা মানবিক সহায়তা কার্যক্রম, বিশ্ব স্বাস্থ্য, জলবায়ু পরিবর্তন এবং বাংলাদেশের আসন্ন সাধারণ নির্বাচনসহ বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্রের অন্যান্য দ্বিপাক্ষিক বিষয়ে আলোচনা করেন।
বাংলাদেশ ও সিঙ্গাপুরের মধ্যে তৃতীয় ফরেন অফিস কনসালটেশনের বিষয়ে তিনি বলেন, গত ১৬ আগস্ট ঢাকায় অনুষ্ঠিত বাংলাদেশ ও সিঙ্গাপুরের মধ্যে তৃতীয় ফরেন অফিস কনসালটেশনের সাইডলাইনে সিঙ্গাপুরের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দ্বিতীয় স্থায়ী সচিব এবং আইন মন্ত্রণালয়ের স্থায়ী সচিব লুক গোহ পররাষ্ট্রমন্ত্রী এবং আইনমন্ত্রীর সঙ্গে ঢাকায় সাক্ষাৎ করেন। বৈঠকে দ্বিপাক্ষিক বিনিয়োগ ও বাণিজ্য, বাংলাদেশ ও সিঙ্গাপুরের বিনিয়োগকারীদের মধ্যে সম্পর্ক জোরদার, কৃষি ক্ষেত্রে সহযোগিতা, তথ্যপ্রযুক্তি খাতে বাংলাদেশে বিনিয়োগের সম্ভাবনা, রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর নিরাপদে প্রত্যাবর্তনের ক্ষেত্রে সিঙ্গাপুরের সহযোগিতার বিষয়ে আলোচনা হয়।
আইএইচআর/জেডএইচ/জেআইএম