বাঙালির হাতে বঙ্গবন্ধু হত্যার চেয়ে লজ্জার কিছু হতে পারে না: মতিয়া
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাঙালির হাতে নিহত হয়েছেন- এর চেয়ে লজ্জা-অপমানের আর কিছু হতে পারে না বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় সংসদের উপনেতা ও আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য মতিয়া চৌধুরী।
তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুকে যেদিন হত্যা করা হলো, পরদিন ১৬ আগস্ট পাকিস্তানের ডন পত্রিকায় শিরোনাম করা হয়েছিল ‘শেখ মুজিব কিলড বাই বেঙ্গলি’। এ কথাটা যখনই মনে পড়ে, তখন খুব কষ্ট হয়। এত লজ্জা, অপমান আর কিসে হতে পারে?
শনিবার (১২ আগস্ট) বিকেলে ‘জাতীয় শোক দিবস’ উপলক্ষে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি। জাতীয় প্রেস ক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন (ডিইউজে) এ আলোচনা সভার আয়োজন করে।
মতিয়া চৌধুরী বলেন, ১৫ আগস্ট আমাদের জন্য লজ্জা, ঘৃণা ও অপমানের চাবুক। এর চাইতে কোনো শক্তিশালী চাবুক বাঙালির পিঠে পড়েছে কি না, তা আমার জানা নেই। বঙ্গবন্ধুকে যারা হত্যা করেছে, তারা বাংলায় কথা বলতো, তারা জন্মগ্রহণও করেছে এ বাংলাতেই।
আওয়ামী লীগের প্রবীণ এ নেতা বলেন, শুধু ৭৫-এর হত্যাকাণ্ড নয়। এরপরও শেখ হাসিনা যাতে দেশে না আসতে পারেন, সেই প্রচেষ্টাও নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু জনগণের শক্তিতে হাজার বাধার মধ্যেও শেখ হাসিনা ফিরে এসেছেন। তাকে কেউ আটকিয়ে রাখতে পারেনি। জনগণ যেমন শেখ হাসিনার সঙ্গে ছিল, শেখ হাসিনাও কখনো জনগণকে দূরে রাখেননি।
তিনি বলেন, এত রক্ত ও বাধার মধ্যে শেখ হাসিনা যেভাবে ফিরে এসেছেন, সেভাবেই তিনি পিতার স্বপ্ন বাস্তবায়নে, মানুষের মৌলিক অধিকার বাস্তবায়নে কাজ করে যাচ্ছেন। শেখ হাসিনা মানুষের মৌলিক অধিকার- অন্ন, বস্ত্র, শিক্ষা, চিকিৎসা ও বাসস্থান বাস্তবায়নে সর্বোতভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। পাশাপাশি সেগুলো বাস্তবায়নেও কাজ করে চলেছেন। আজ শহর থেকে গ্রাম পর্যন্ত মানুষের এই মৌলিক অধিকারের নিশ্চয়তা পৌঁছে গেছে।
মতিয়া চৌধুরী আরও বলেন, আমরা জানি মানুষের চাহিদার কোনো শেষ নেই, উন্নয়নেরও কোনো শেষ নেই। সামনের দিকে এগিয়ে যাওয়ার জন্য এই উন্নয়নের চাহিদা অবশ্যই থাকবে। না হলে মানুষ এগোতে পারবে না। মানুষই তার উন্নয়ন নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে। শেখ হাসিনা সর্বোতভাবে সে উন্নয়নের কাজ করে যাচ্ছেন এবং যাবেন। এখন আমাদের শুধু তার সঙ্গে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। তবেই তিনি আমাদের স্বপ্ন পূরণ করতে পারবেন।
সাংবাদিকদের উদ্দেশে জাতীয় সংসদের উপনেতা বলেন, ভিন্নমত ভিন্নপথের চিহ্ন দেখতে পেলেও আমরা গঠনমূলক সমালোচনা চাই; তাহলে নিজেদের আরও শুদ্ধ করার সুযোগ থাকে। অতিরিক্ত প্রশংসা মানুষের মাথা খারাপ করে দেয়।
আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস।
এতে সভাপতিত্ব করেন ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের (ডিইউজে) সভাপতি সোহেল হায়দার চৌধুরী। সংগঠনটির সহ-সভাপতি মানিক লাল ঘোষের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য রাখেন- প্রধানমন্ত্রীর সাবেক তথ্যবিষয়ক উপদেষ্টা ও বিএফউজের সাবেক সভাপতি ইকবাল সোবহান চৌধুরী, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি ওমর ফারুক, জাতীয় প্রেস ক্লাবের সভাপতি ফরিদা ইয়াসমিন, বিএফউজের সাবেক মহাসচিব আবদুল জলিল ভূইয়া, ডিইউজের সাবেক সভাপতি কুদ্দুস আফ্রাদ, কাজী রফিক প্রমুখ।
এএএইচ/কেএসআর