‘সাইবার নিরাপত্তা আইন’ যেন মতপ্রকাশে বাধা না হয়: টিআইবি
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের (ডিএসএ) পরিবর্তে প্রস্তাবিত ‘সাইবার নিরাপত্তা আইন’ যেন কোনোভাবেই স্বাধীন মতপ্রকাশে বাধা ও গণমাধ্যমের কণ্ঠরোধের হাতিয়ারে পরিণত না হয়, তা নিশ্চিত করতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)।
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন (ডিএসএ) বাতিলে মন্ত্রিসভার সিদ্ধান্তকে সাধুবাদ জানিয়ে টিআইবি বলেছে, ‘সাইবার নিরাপত্তা আইন’ নামে নতুন যে আইন প্রণয়ন করা হচ্ছে, তা যেন ভিন্নমত দমনের হাতিয়ারে পরিণত না হয়। আইনটি যেন শুধু সাইবার অবকাঠামোর নিরাপত্তার মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকে।
আরও পড়ুন: পরিবর্তন হচ্ছে নাম, সংশোধন আসছে বিভিন্ন ধারায়
একই সঙ্গে নতুন আইনটি প্রণয়ন প্রক্রিয়ায় সংশ্লিষ্ট অংশীজন ও বিশেষজ্ঞদের নিবিড়ভাবে সম্পৃক্ত করতেও সরকারের প্রতি তাগিদ দিয়েছে সংস্থাটি।
সোমবার (৭ আগস্ট) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিলের সিদ্ধান্ত এবং নতুন সাইবার সিকিউরিটি আইন নিয়ে এমন প্রতিক্রিয়া দিয়েছে টিআইবি।
সংস্থাটির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন সংশোধন করে বা একেবারে ঢেলে সাজালেও আইনটিতে জনস্বার্থের কোনো প্রতিফলন ঘটবে না বা জনগণের কাছে তা গ্রহণযোগ্য হবে না- টিআইবি এটি ধারাবাহিকভাবে বলে এসেছে এবং ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিলের দাবি জানিয়ে এসেছে। অবশেষে মন্ত্রিসভা আইনটি বাতিলের যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এ সিদ্ধান্তকে আমরা স্বাগত জানাই।
আরও পড়ুন: সাইবার নিরাপত্তা আইন গণমাধ্যমের কণ্ঠরোধ করলে মেনে নেবো না
তিনি বলেন, আমরা বিশ্বাস করতে চাই, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনটি যেভাবে নিবর্তনমূলক এবং কণ্ঠরোধ ও ভিন্নমত দমনের হাতিয়ারে পরিণত হয়েছিল, তা সরকার অনুধাবন করেই আইনটি বাতিলের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ফলে নতুন সাইবার নিরাপত্তা আইনটি যেন শুধু সাইবার অবকাঠামোর নিরাপত্তার মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকে। নতুন আইন যেন কোনোভাবেই সাইবার অবকাঠামো তথা ডিজিটাল প্ল্যাটফম ব্যবহার করে স্বাধীন ও ভিন্নমত প্রকাশের ক্ষেত্রে বাধা না হয়- তা নিশ্চিত করতে হবে।
প্রস্তাবিত সাইবার নিরাপত্তা আইন যেন ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের প্রতিচ্ছবিতে পরিণত না হয়, সে বিষয়ে সতর্ক করে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক বলেন, গণমাধ্যম সূত্রে আমরা জানতে পেরেছি, আইনমন্ত্রী বলেছেন- ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের বহু ধারা সাইবার নিরাপত্তা আইনে যুক্ত হবে। আমাদের আশঙ্কার জায়গা ঠিক সেখানেই।
আরও পড়ুন: চলমান মামলার বিচার আগের আইনেই হবে: অ্যাটর্নি জেনারেল
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের যেসব ধারা মূলত ভিন্নমত দমন, গণমাধ্যমের কণ্ঠরোধে বহুল অপব্যবহৃত হয়েছে, সেগুলো নতুন সাইবার নিরাপত্তা আইনে অন্তর্ভুক্ত না করার আহ্বান জানান তিনি।
ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, নতুন সাইবার নিরাপত্তা আইনটি যেন নতুন মোড়কে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের রূপান্তর হয়ে ফিরে না আসে। অন্যথায় আইনটির নাম বদল হলেও কার্যত তা হবে একটি কালাকানুনকে প্রতিস্থাপন করে ভিন্ন নাম ধারণ করা আরেকটি কালাকানুন মাত্র।
এসএম/এমকেআর/এমএস