ধরপাকড় প্রসঙ্গে ডিএমপি কমিশনার
পুলিশের অভিযান রাজনৈতিক দলের বিরুদ্ধে নয়
বিএনপির মহাসমাবেশ ঘিরে রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে দলটির নেতাকর্মীদের পুলিশি ধরপাকড়ের অভিযোগ প্রসঙ্গে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার খন্দকার গোলাম ফারুক বলেছেন, কোনো পলিটিক্যাল পার্টি বা রাজনৈতিক দলের কারও বিরুদ্ধে অভিযানে নামেনি পুলিশ। এ ধরনের কোনো অভিযোগ নেই। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে দেখবো।
তিনি বলেন, যাদের গ্রেফতার করা হচ্ছে তারা সন্দেহভাজন বা নিয়মিত মামলার আসামি। অনেকে ওয়ারেন্টভুক্ত আসামি। এটি আমাদের নিয়মিত অভিযানের অংশ, এটি চলবে।
আরও পড়ুন: সমাবেশে রাষ্ট্রদ্রোহিতামূলক কোনো বক্তব্য দেওয়া যাবে না: ডিএমপি
বৃহস্পতিবার (২৭ জুলাই) বিকেলে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। ঢাকায় আগামীকাল শুক্রবার একই দিনে আওয়ামী লীগের তিনটি অঙ্গ সংগঠন যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ ও ছাত্রলীগের শান্তি সমাবেশ এবং বিএনপির মহাসমাবেশসহ সার্বিক বিষয়ে এ সংবাদ সম্মেলন করে ডিএমপি।
বিএনপির মহাসমাবেশ ঘিরে গতকাল বুধবার রাতে রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে পুলিশ ধরপাকড় চালিয়ে কয়েকশো নেতাকর্মীকে আটক করেছে বলে জানা যায়। এরমধ্যে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয় সংলগ্ন মিডওয়ে আবাসিক হোটেল থেকে দলটির অর্ধশতাধিক নেতাকর্মীকে আটক করা হয়। বিএনপির সমাবেশ ঠেকাতেই কি এ আটক অভিযান- সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নে ডিএমপি কমিশনার বলেন, জ্বি না। যদি কোনো পুলিশ অফিসারের বিরুদ্ধে এ ধরনের কোনো অভিযোগ পাওয়া যায় তাহলে আমরা তদন্ত করে দেখবো। পুলিশ কোনো পলিটিক্যাল পার্টির কারও বিরুদ্ধে অভিযানে নামেনি।
আরও পড়ুন: পুলিশের অভিযান রাজনৈতিক দলের বিরুদ্ধে নয়
রাতের বেলা ধরপাকড় প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, রাত-দিন ২৪ ঘণ্টা আমাদের চেকপোস্ট আছে। ২০১৫ সালে তাজিয়া মিছিলে বোমা হামলা হয়েছিল। এবারও আশুরায় তাজিয়া মিছিলের প্রস্তুতি চলছে, এরমধ্যে বড় দুই রাজনৈতিক দলের একই দিনে ঢাকায় সমাবেশ। এ অবস্থায় যে কেউ বাইরে থেকে এসে অথবা কোনো কুচক্রী মহল যে কোনো অঘটন ঘটাতে পারে। সার্বিক নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখে সন্দেহজনক আসামি ও নিয়মিত মামলার আসামি এবং ওয়ারেন্টভুক্ত আসামিদের গ্রেফতার করতে হয়। এটি আমাদের নিয়মিত অভিযানের অংশ, এটি চলবে।
অন্য এক প্রশ্নে খন্দকার গোলাম ফারুক বলেন, আমাদের কাছে এ মুহূর্তে তেমন বড় কোনো থ্রেট নেই। তবে যেহেতু বড় দুটি দলের বড় সমাবেশ, যে কোনো কুচক্রী মহল বা যে কেউ সমাবেশের সুযোগ নিয়ে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটাতে পারে। এজন্য পর্যাপ্ত পুলিশ, আনসার, র্যাব, এপিবিএন ও বিজিবি স্ট্যান্ডবাই থাকবে। আমরা সবসময় সতর্ক থাকবো, যেন কোনো দুষ্টচক্র কোনো প্রকার দুর্ঘটনা ঘটাতে না পারে।
যখনই কোনো সমাবেশ হয় মোবাইল নেটওয়ার্কে ধীরগতি বা নেটওয়ার্ক বন্ধ করে দেওয়া হয়। শুক্রবারের দুই দলের কর্মসূচি ঘিরেও কি এ ধরনের কোনো নির্দেশনা আছে- জানতে চাইলে ডিএমপি কমিশনার বলেন, আমার জানামতে (যদিও আমি বিটিআরসি, এনটিএমসির কেউ না) কোথাও মোবাইল নেটওয়ার্ক বন্ধ করা হয় না। একটি টাওয়ারের নির্দিষ্ট ধারণক্ষমতা থাকে। টাওয়ারের যদি ধারণাক্ষমতা ১০ হাজার হয়, আর সেখানে যদি ১০ লাখ লোক একত্রে চেষ্টা করেন তাহলে নেটওয়ার্কে ধীরগতি তো হবেই। তবে নেটওয়ার্ক কখনো বন্ধ করা হয় না।
আরও পড়ুন: যে ২৩ শর্তে সমাবেশের অনুমতি পেলো আওয়ামী লীগ-বিএনপি
রাজনৈতিক দলগুলোর উদ্দেশে গোলাম ফারুক বলেন, সমাবেশে রাষ্ট্রদ্রোহিতামূলক কোনো বক্তব্য দেওয়া যাবে না। ডিএমপি থেকে যে সীমানা নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে এর বাইরে মাইক ব্যবহার করা যাবে না। জনদুর্ভোগ এড়াতে দলগুলোর নিজেদের ভলান্টিয়ার রাখতে হবে।
আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে বৃহৎ দুটি রাজনৈতিক দলের সহযোগিতা কামনা করেন তিনি। একই সঙ্গে আইনশৃঙ্খলার কোনোরূপ অবনতি ঘটলে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও হুঁশিয়ারি দেন তিনি।
টিটি/এমকেআর/জিকেএস