ভিডিও EN
  1. Home/
  2. জাতীয়

ইইউ প্রতিনিধিদলের সফর নির্বাচনের জন্য সহায়ক: তথ্যমন্ত্রী

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক | প্রকাশিত: ০৪:০৯ পিএম, ১৩ জুলাই ২০২৩

ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রতিনিধিদলের সফর আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য সহায়ক হবে বলে মন্তব্য করেছেন তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ।

তিনি বলেন, ‘ইইউ প্রতিনিধিদল এসেছে নির্বাচন কমিশনের আমন্ত্রণে। তারা স্বপ্রণোদিত হয়ে এসেছে, তা নয়। তারা যে এসেছে, এটি আগামী নির্বাচনের জন্য সহায়ক। নির্বাচন কমিশনের আমন্ত্রণেই তারা এসেছে, তারা পর্যবেক্ষক পাঠানোর প্রস্তুতি হিসেবে এ সফরে এসেছেন। সুতরাং সেটি নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য সহায়ক হবে।’

তথ্যমন্ত্রী বৃহস্পতিবার (১৩ জুলাই) সচিবালয়ে তথ্য অধিদপ্তরের (পিআইডি) সম্মেলন কক্ষে ‘গন্তব্য: স্মার্ট বাংলাদেশ’ সংকলন গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন করেন। পরে তিনি সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন। এ সময় ইইউ ও মার্কিন প্রতিনিধিদলের বাংলাদেশ সফর নিয়ে সরকার কোনো চাপ অনুভব করছে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী এসব কথা বলেন।

আরও পড়ুন>> বিএনপির এক দফা বেলুনের মতো ফুটে যাবে: হাছান মাহমুদ

মার্কিন প্রতিনিধিদলের সফর প্রসঙ্গে ড. হাছান মাহমুদ বলেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আমাদের নানাবিধ বহুমাত্রিক সহযোগিতা রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র আমাদের উন্নয়ন সহযোগী। আমাদের বাণিজ্য রয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে। রোহিঙ্গা সমস্যা, সেটি একটি মানবিক সমস্যা। প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে বাংলাদেশ রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়েছে। আপনারা দেখেছেন মার্কিন আন্ডার সেক্রেটারি সেখানে গেছেন। মূলত এসব বিষয়ের জন্যই তারা এসেছেন।

‘সেখানে অবশ্য নির্বাচন প্রসঙ্গেও আলোচনা হতে পারে। এগুলো আমাদের উন্নয়নের ক্ষেত্রে, সহযোগিতার ক্ষেত্রে সহায়ক হবে। নির্বাচনের ক্ষেত্রেও সহায়ক হবে। বিশেষ করে ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রতিনিধিদলের আগমন নির্বাচন অনুষ্ঠানের ক্ষেত্রে সহায়ক হবে। মার্কিন প্রতিনিধিদলের আগমন আমাদের সহযোগতিার সম্পর্ককে আরও দৃঢ় করবে’ বলেন তথ্যমন্ত্রী।

আরও পড়ুন>> বিএনপি ছাড়া তত্ত্বাবধায়ক নিয়ে কারও মাথাব্যথা নেই: তথ্যমন্ত্রী

একদফা আন্দোলনের ওপর ভিত্তি করে নতুন কিছু কর্মসূচি দিয়েছে বিএনপি। এ বিষয়ে জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের এ যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেন, তারা মাঝেমধ্যেই এমন কর্মসূচি দেন। গত বছর একবার একদফা ঘোষণা করে বলেছিল যে, খালেদা জিয়া মুক্ত হয়ে এসে সভায় যোগ দেবেন। তারেক জিয়া উড়ে এসে সভায় বক্তব্য রাখবেন। কীভাবে উড়ে আসবে, সেই ব্যাখ্যা দেননি। আমরা ধরে নিয়েছিলাম, সম্ভবত বোরাকে চড়ে আসবে বা অন্য কোনোভাবে আসবে। এসে তারপর যোগ দেবে। এরকম আরও অনেক কথা বলেছিল। কিন্তু সেই আন্দোলন গরুর হাটে মারা গেছে।

তিনি বলেন, ২০১৮ সালে বেগম জিয়ার শাস্তি যাখন নিশ্চিত হয়, তখনো এক দফা ঘোষণা করেছিল। কিন্তু সেটি হালে পানি পায়নি। আবার বেগম জিয়াকে মাঝেমধ্যে খুব অসুস্থ বানিয়ে, জীবন সংকটাপন্ন বলে মানুষের সহানুভূতি আদায়ের চেষ্টা করেছে। সেগুলোও হালে পানি পায়নি। গতকাল তারা পুরোনো কথাই নতুন করে বলেছেন, সেটি সরকারের পদত্যাগ। এটি নতুন কিছু নয়।

jagonews24

তথ্যমন্ত্রী বলেন, একটি জিনিস অবশ্যই প্রণিধানযোগ্য, সেটি হচ্ছে- তারা (বিএনপি) যে দাবি দিয়েছে, সেখানে তারা বলছেন সংসদ বিলুপ্ত করতে হবে। আমাদের সংবিধান অনুযায়ী, পরবর্তী সংসদ নির্বাচিত না হওয়া পর্যন্ত বর্তমান সংসদ বহাল থাকে। সংসদ বিলুপ্ত করার দাবি দুরভিসন্ধিমূলক। সরকারের পদত্যাগ বিভিন্ন সময় বিরোধীরা চান, সেটি চাইতেই পারেন। বিভিন্ন দেশে সরকারের পদত্যাগ চাওয়া হয়। সরকারের পদত্যাগ চাওয়ার অধিকার যে কারও আছে। কিন্তু সংসদ বিলুপ্ত করার দাবি-দাওয়া প্রচণ্ড দুরভিসন্ধিমূলক।

আরও পড়ুন>> র‍্যাবের ওপর নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারে উজরা জেয়ার কাছে অনুরোধ

‘তারা আসলে দেশে একটি সাংবিধানিক সংকট তৈরি করতে চান। সাংবিধানিক সংকট তৈরি করে তারা অসাংবিধানিক কোনো কিছুকে জায়গা করে দিতে চান। সেটার লক্ষ্যে তারা সংসদ বিলুপ্ত করার দাবি দিয়েছেন। যেটি গণতন্ত্রের জন্য হুমকিস্বরূপ এবং গণতন্ত্রকে বাধাগ্রস্ত করার হীনউদ্দেশ্যে বিএনপি এ দাবি করেছে’ বলেন হাছান মাহমুদ।

বিএনপি ৩১ দফায় বলেছে যে পরপর দুই মেয়াদের অতিরিক্ত কেউ প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করতে পারবে না। এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘তারা নানা সময়ে নানা দফা দেন। কোনো সময় ৩১ দফা, কোনো সময় ৩২ দফা। এভাবে নানা দফা দেন। এ বিষয়ে তাদের মত কী, তারা আগে ব্যাখ্যা করুক, তারপর আমরা মতামত দেবো।’

আরও পড়ুন>> অবাধ-সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য ভিসানীতি: উজরা জেয়া

এর আগে মন্ত্রী বলেন, আমরা ২০০৮ সালে নির্বাচনের আগে মানুষের সামনে ধারণা দিয়েছিলাম, স্লোগান দিয়েছিলাম ডিজিটাল বাংলাদেশের। এটি বাস্তবায়িত হয়েছে। ১৭ কোটি মানুষের দেশে ১৮ কোটি সিম ব্যবহৃত হচ্ছে। যেখানে মাত্র ৫০ লাখ মানুষ ইন্টারনেট ব্যবহার করতো, সেখানে প্রায় ১৩ কোটি মানুষ এখন ইন্টারনেট ব্যবহার করছে। সত্যিকার অর্থে বাংলাদেশ এখন ডিজিটাল বাংলাদেশের রূপান্তরিত হয়েছে। একেবারে প্রত্যন্ত অঞ্চলে, দ্বীপ অঞ্চলে, চর অঞ্চলে ডিজিটাল সেন্টার স্থাপন করা হয়েছে। গ্রামে গ্রামে ব্রডব্যান্ড কানেকশন এবং ক্যাবল নেটওয়ার্কের মাধ্যমে সব টেলিভিশন চ্যানেল দেখা যায়।

তিনি বলেন, ২০১৮ সালের নির্বাচনের আগে আমরা বলেছিলাম ‘আমার গ্রাম আমার শহর’। অর্থাৎ গ্রামে শহরের সব সুযোগ-সুবিধা পৌঁছে দেওয়া হবে। সত্যিকার অর্থেই গ্রামে শহরের প্রায় সব সুযোগ-সুবিধা পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। এখন গ্রাম ও শহরের মধ্যে পার্থক্য খুব একটা নেই। গ্রামের রাস্তা এখন পিচঢালা রাস্তা। গ্রামে এখন মানুষ টেলিভিশন, এমনকি এয়ারকুলার ব্যবহার করে। গ্রামের মসজিদ, মন্দির, প্যাগোডাই এখন এয়ারকন্ডিশন ব্যবহার করা হয়। আগের যে গ্রাম এখন তা নেই।

মন্ত্রী আরও বলেন, ইউরোপে যদি কেউ যায় ২০০ বছর আগে তাদের গ্রাম কেমন ছিল, সেটি দেখানোর জন্য বিশেষ জায়গায় নিয়ে যাওয়া হয়। কারণ সেখানে গ্রাম নেই। আমাদের দেশেও পল্লিকবি জসীম উদদীন যে গ্রাম, সেই গ্রাম এখন খুঁজে পাওয়া কঠিন। কুঁড়েঘর গ্রাম থেকে চলে গেছে। আমরা স্লোগান দিয়েছিলাম আমার গ্রাম আমার শহর, সেটি দ্রুত বাস্তবায়িত হচ্ছে। এবার আমরা বলেছি স্মার্ট বাংলাদেশ। কারণ এখন আমরা চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের মধ্যে আছি। চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের সঙ্গে যদি সমানতালে চলতে হয়, স্মার্ট সোসাইটি দরকার, স্মার্ট নাগরিক দরকার, স্মার্ট দেশ দরকার। সেটি করার জন্যই স্মার্ট বাংলাদেশের স্লোগান দেওয়া হয়েছে।

তিনি বলেন, স্মার্ট হওয়ার পাশাপাশি, আমরা যেন আমাদের মানবিকতা হারিয়ে না ফেলি। স্মার্ট হওয়ার পাশাপাশি আমাদের মমতাবোধ যেন হারিয়ে না যায়। স্মার্ট হওয়ার পাশাপাশি আমাদের সামাজিক মূল্যবোধের অবক্ষয় না হয়, সেদিকে গুরুত্ব দিতে হবে।

এমএএস/এএএইচ/এএসএম