শপিংমলে ক্রেতা কম, জমজমাট ফুটপাতের ঈদের বাজার
দরজায় কড়া নাড়ছে ঈদ। উৎসবের দিনকেকেন্দ্র করে শপিং মল, ফ্যাশন হাউজগুলোতে ভিড় কিছুটা বেড়েছে। ক্রেতা টানতে দোকানগুলোতে দেওয়া হয়েছে মূল্যছাড়। তবে সেখানে কাঙ্ক্ষিত ক্রেতার দেখা পাচ্ছেন না বিক্রেতারা।
মঙ্গলবার (২৭ জুন) রাতে রাজধানীর মিরপুরের কয়েকটি শপিংমল, ফ্যাশন হাউজ ঘুরে দেখা গেছে এমন চিত্র।
বিক্রেতারা বলছেন, সন্ধ্যার পর থেকে ক্রেতার সমাগম বাড়ে। তবে ক্রেতারা পণ্য দেখে, না কিনে চলে যাচ্ছেন। চলতি সপ্তাহ থেকে বেচাকেনা তেমন একটা না হলেও, মঙ্গলবার বিকেল থেকে কিছুটা বেড়েছে।
মিরপুর ১০ নাম্বারে আসমা গার্মেন্টস নামের একটি ফ্যাশন হাউজ ঈদ উপলক্ষে আড়াই লাখ টাকার পণ্য উঠিয়েছে। ছেলেদের শার্ট, প্যান্ট, মেয়েদের ওয়েস্টার্ন পোশাকও আছে তার দোকানে। ক্রেতা টানতে নির্দিষ্ট পণ্যে দেওয়া হয়েছে মূল্যছাড়। তবে আশানুরূপ ক্রেতা মিলছে না বলে দাবি দোকানটির স্বত্ত্বাধিকারী সুজনের।
তিনি বলেন, অন্য সময় দিনে ২০-২২ হাজার টাকার পণ্য বিক্রি করি। এখন সেটা ১৪-১৫ হাজারে নেমেছে। কোরবানির ঈদে পোশাক বিক্রি কম হয়, তবে এবার এতটা কম হবে সেটা আশা করিনি।
ক্রমবর্ধমান মূল্যস্ফীতিকে দায়ী করে তিনি বলেন, নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য কিনতে মানুষ অধিক ব্যয় করছে। জামা-কাপড় কিনবে কি, দোকানেই আসছে না, দোকান বেশির ভাগ সময়ই ফাঁকা যাচ্ছে।
আরও পড়ুন> দুইপক্ষের সংঘর্ষে সাবেক ইউপি সদস্য নিহত, পুলিশসহ আহত ২০
ফ্যাশন হাউজ ইসরায় ৫০ শতাংশ, বেতে ৬০ শতাংশ পর্যন্ত মূল্যছাড়ের ব্যানার টানানো হয়েছে দোকানের বাইরে। তবে বিক্রেতারা বলছেন, কাঙ্ক্ষিত ক্রেতা নেই। সোমবার সন্ধ্যার পর বিক্রি কিছুটা বেড়েছে তবে সেটাকে ঈদের বিক্রি বলা যাবে না।
রিচ কটন ফ্যাশন হাউজের বিক্রয়কর্মী সজীব বলেন, ক্রেতারা এসে পণ্য দেখে চলে যাচ্ছেন। না কিনে ফেরত যাওয়ার সংখ্যাটাই বেশি।
মিরপুর ১০ নম্বরের শাহ আলী মার্কেটেও ক্রেতার ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতো। তবে বিক্রেতা শাওন বলেন, এই ঈদে যেভাবে বিক্রি হচ্ছে তা অন্যান্য বারের তুলনায় অনেক কম। কারণ মানুষের হাতে টাকা নেই, এমনিতেই নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য কিনতে তারা হিমশিম খাচ্ছে, সেখানে বিলাসী পণ্য কিনবে কীভাবে।
আরও পড়ুন> নবীনগর-চন্দ্রা মহাসড়কে ১২ কিলোমিটার যানজট
স্বামীকে নিয়ে কেনাকাটা করতে এসেছেন মিরপুরের বাসিন্দা জান্নাতুল নিধি। তিনি বলেন, পরিবারে ছোট, বয়স্কদের আশা থাকে ঈদে নতুন কিছু পাবার। ছাড় হলেও তো কিনতে হবে, না হলেও। যারা কেনার তারা কিনবেই। তবে জিনিসপত্রের দাম একটু বেশি চড়া। ছাড় দেওয়ার পরেও জামা কাপড়ের দাম বেশি মনে হচ্ছে।
মাসুদ আহমেদ নামের এক ক্রেতা বলেন, বিভিন্ন ফ্যাশন হাউজ ঘুরেছি। ১ এক হাজার ৮০০ টাকার নিচে খুব ভালো শার্ট নেই। এছাড়া অন্যান্য পোশাকের দাম ও বেশি।
তবে ভিন্ন চিত্র দেখা গেছে মিরপুর ১০ ও ২ নম্বর সড়ক সংলগ্ন ফুটপাতে। দোকানিরাও ঈদ উপলক্ষে কিছুটা ব্যস্ত সময় পার করছেন। মধ্যবিত্ত থেকে নিম্নবিত্তদের ভিড় করতে দেখা গেছে এসব দোকানগুলোতে। তুলনামূলক কম দাম হওয়ায় স্বল্প ও মধ্য আয়ের মানুষের ভরসা বলা যায় ফুটপাতের এসব অস্থায়ী দোকান। তবে ফুটপাতেও জিনিসপত্রের মূল্য বেড়েছে বলে জানান ক্রেতারা।
মিরপুর ২ নম্বর ফুটপাতে টি শার্ট, প্যান্ট বিক্রি করেন মো. এসহাক। তিনি বলেন, বিক্রি ভালো। লাভও হচ্ছে ভালো। চাঁদ রাত পর্যন্ত এমন বিক্রি থাকবে আশা করছি।
এসএম/এমএসএম