ভিডিও EN
  1. Home/
  2. জাতীয়

ব্যয় ১১৮৩ কোটি

বিমানবন্দর-হজক্যাম্প যাতায়াতে দৃষ্টিনন্দন আন্ডারপাস-টানেল

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক | প্রকাশিত: ১০:০০ পিএম, ১৯ জুন ২০২৩

শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ১ হাজার ১৮৩ কোটি টাকা ব্যয়ে পথচারী আন্ডারপাস নির্মাণের প্রকল্প হাতে নিয়েছে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়। প্রকল্পটি মঙ্গলবার (২০ জুন) জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় অনুমোদনের জন্য কার্যতালিকায় রাখা হয়েছে। প্রকল্পটি অনুমোদন পেলে জুন-২০২৫ মেয়াদে বাস্তবায়ন করবে সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর।

প্রকল্পটির প্রস্তাবনা সূত্রে জানা গেছে, শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ও সংলগ্ন এলাকার অবকাঠামোগত উন্নয়ন হিসেবে পথচারী আন্ডারপাস প্রকল্পটি বাস্তবায়নের মাধ্যমে হজ ক্যাম্প-আশকোনা-বিমানবন্দর রেলওয়ে স্টেশন-এমআরটি স্টেশন-বিআরটি স্টেশন-বিমানবন্দর টার্মিনাল-১, ২ ও ৩ এর যাত্রী এবং সাধারণ পথচারী এবং যাত্রীদের জন্য নিরাপদ সড়ক পারাপারের পথ তৈরি হবে। এতে সাধারণ জনগণসহ বিদেশি নাগরিকদের দৃষ্টিনন্দন আন্ডারপাস ব্যবহারের সুবিধা পাবে।

এছাড়া এ পথচারী আন্ডারপাস হলে, ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে পথচারীরা নিরাপদ সড়ক পারাপার হতে পারবেন। সড়কে যান চলাচলও নিরবচ্ছিন্ন হবে। হজের সময় হাজীদের জন্য নিরাপদে হজ ক্যাম্প থেকে বিমানবন্দর পর্যন্ত পৌঁছানোও সহজ হবে।

প্রকল্প প্রস্তাবনায় বলা হয়, ঢাকা য়মনসিংহ সড়কের শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমান বন্দর এলাকা ধীরে ধীরে হয়ে উঠছে সড়ক, রেলওয়ে, পাতাল ও আকাশ পথের অন্যতম সংযোগস্থল। ক্রমাগত বাড়ছে গাড়ির ভীড় এবং যাত্রী সংখ্যা। এরই সঙ্গে তাল মিলিয়ে বাড়ছে পথচারী। প্রয়োজনীয়তা দেখা দিয়েছে নিরাপদ সড়ক পারাপার ব্যবস্থার।

এ নিরাপদ পারাপার ব্যবস্থা কমাবে দুর্ঘটনা এবং দুর্ঘটনা জড়িত বিভিন্ন ধরনের ব্যায়। অর্থনৈতিক ক্ষয়ক্ষতি হ্রাস করতে সহায়তা করবে এবং জীবনমানের উন্নয়ন ঘটাবে। অর্থনৈতিক উন্নয়নের পাশাপাশি অবকাঠামোগত উন্নয়ন সাধিত হবে। তৈরি হবে নতুন ৮টি যাত্রী ও পথচারী পারাপারের ছাউনি এবং ভূ-গর্ভস্থ রাস্তা পারাপারের সুযোগ।

প্রস্তাবনায় বলা হয়, আন্ডারপাসটি হলে সাধারণ পথচারী, বিভিন্ন পরিবহন ব্যবস্থার যাত্রী ও বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন ব্যক্তিরা নির্বিঘ্ন চলাচল করতে পারবে। সড়কের ওপর দিয়ে মানুষ চলাচল করবে না। ফলে নির্বিঘ্ন যানবাহন চলাচল করতে পারবে। এতে সড়ক দুর্ঘটনা হ্রাস পাবে। ফলে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে অর্থনৈতিক উন্নয়ন কার্যক্রম বৃদ্ধি হবে।

প্রকল্পের প্রধান কার্যক্রমের মধ্যে রয়েছে, আন্ডারপাস নির্মাণ, আন্ডারপাসের র্যাম্প ও সিড়ি নির্মাণ,ডাইভার্সন ও ক্ষতিগ্রস্ত সড়ক মেরামত, ইউটিলিটি স্থানান্তর, ড্রেনেজসহ স্যানিটারি প্লাম্বিং সিস্টেম আন্ডারপাসে লিফট সংযোজনের ব্যবস্থা, আন্ডারপাসের অভ্যন্তরে যথাযথ আলোর ব্যবস্থা, যথাযথ পানি নিরোধক ও পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা, এইচভিএসি সিস্টেম, অবকাঠামো নির্মাণ, নিরাপত্তা ও যোগাযোগ ব্যবস্থার জন্য প্রয়োজনীয় বিদ্যুৎ সরবরাহ, লিফট ও চলন্ত সিড়ি,বৈদ্যুতিক সিস্টেম ও বাগি গাড়ি ক্রয়।

প্রকল্পটির বিষয়ে পরিকল্পনা কমিশনের ভৌত অবকাঠামো বিভাগের সদস্য (সচিব) এমদাদ উল্লাহ মিয়ান বলেন, বিমানবন্দর এলাকাটি খুবই ব্যস্ততম। এয়ারপোর্টে আসা যাত্রীদের রাস্তা পারাপারে ভোগান্তি হতে হয়। সামনে ওখানে মেট্রোরেল স্টেশন ও বিআরটি স্টেশন হবে। মানুষের সমাগম আরও বাড়বে। আবার মহাসড়কটি খুবই ব্যস্ততম। তাই যাত্রীদের চলাচল আরও সহজ করতে এবং দুর্ঘটনা এড়াতে প্রকল্পটি নেওয়া হয়েছে।

প্রকল্পটির বিষয় সড়ক ও জনপথ অধিপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী মো. ইসহাক বলেন, বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বিমানবন্দরে অত্যাধুনিক এ আন্ডাপাস করা হবে। এর ভেতরে লিফট, এসি, বগিকার, ওয়াকওয়েসহ যা যা দরকার সবই থাকবে। যাতে হাজী ক্যাম্প থেকে বিমানবন্দরে হাজী ও পথচারীরা নিরাপদে ও সহজে যাতায়াত করতে পারেন।

প্রকল্প সূত্রে জানা গেছে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০১৮ সালের আগস্ট মাসে শাহজালাল বিমানবন্দর থেকে বিমানবন্দর রেল স্টেশন পর্যন্ত এ পথচারী আন্ডাপাস নির্মাণের নির্দেশ দেন। এরপর ২০২৩ সালের ২২ ফেব্রুয়ারিতেও প্রধানমন্ত্রীকে দেখানো হয়েছে।

প্রথমে এটি ঢাকা সাসটেইনেবল আরবান ট্রান্সপোর্ট প্রজেক্টের (বিআরটি গাজিপুর) অংশে ধরা হয়েছিল। পরে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী ও সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর বাস্তবায়ন করবে বলে সিদ্ধান্ত হয়েছে। সাত সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন করে অ্যালাইনমেন্ট নির্ধারণ করে সম্ভাব্যতা যাচাই করে প্রকল্প তৈরি করা হয়েছে।

গণপূর্ত অধিদপ্তরসহ অন্যান্যদের রেট সিডিউল অনুযায়ী প্রকল্পের খরচ ধরা হয়েছে এক হাজার ১৮৩ কোটি ৯৬ লাখ টাকা। আন্ডাপাসের দৈর্ঘ্য ধরা হয়েছে ১০৭০ মিটার। ট্যানেলের উচ্চতা হবে ৭ দশমিক ৬ মিটার ও চওড়া হবে ৯ মিটার। এতে যাত্রী ছাউনি থাকবে আটটি। প্রকল্পটি শেষ হওয়ার পরপরই সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের কাছে হস্তান্তর হবে।

এমওএস/এমআইএইচএস/এমএস