ভিডিও EN
  1. Home/
  2. জাতীয়

‘আপসের সংস্কৃতি বন্ধ না হলে পলিথিন-প্লাস্টিক দূষণ রোধ সম্ভব নয়’

নিজস্ব প্রতিবেদক | প্রকাশিত: ০৪:১৩ এএম, ০৬ জুন ২০২৩

 

বাংলাদেশের মাটি ও পরিবেশ রক্ষাসহ প্রাণ ও জীববৈচিত্র‍্য রক্ষায় একবার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিক ও পলিথিন পণ্যের ব্যবহার অতি দ্রুত বন্ধের কার্যকর উদ্যোগ নিতে হবে। পাশাপাশি বিশ্বের মধ্যে প্রথম দেশ হিসেবে ২০০২ সালে পলিথিন ব্যাগ নিষিদ্ধ ঘোষণা করার পরেও বিপজ্জনক পলিথিন ব্যাগের উৎপাদনের সঙ্গে জড়িত কারখানা এতদিনেও কেন বন্ধ করা গেলো না, তার রাজনৈতিক অর্থনীতির বিশ্লেষণ করা অত্যন্ত জরুরি।

পরিবেশ ধ্বংসকারী পলিথিন ও প্লাস্টিক উৎপাদনের সঙ্গে জড়িত ব্যবসায়ীদের সঙ্গে আপস করার রাজনৈতিক সংস্কৃতি বন্ধ না করতে পারলে বাংলাদেশ থেকে পলিথিন ও প্লাস্টিক দূষণের মতো বিপর্যয়কারী দূষণ রোধ করা সম্ভব হবে না বলে মনে করে ইনস্টিটিউট ফর প্ল্যানিং অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (আইপিডি)।

একইসঙ্গে দেশের সবুজ-জলাশয়-জলাধার কিংবা পাহাড়-টিলা-বন উজাড় করে উন্নয়ন ও নির্মাণকাজের যে ধারা অব্যাহত আছে, সেটা রোধ না করতে পারলে সামগ্রিকভাবে পরিবেশ দিবসের উদ্দেশ্য ও আকাঙ্ক্ষার বাস্তবায়ন সম্ভব নয় বলেও মনে করে আইপিডি।

সোমবার (৫ জুন) বিশ্ব পরিবেশ দিবস উপলক্ষে আইপিডির নির্বাহী পরিচালক অধ্যাপক ড. আদিল মুহাম্মদ খানের সই করা বিবৃতিতে এসব কথা জানায় সংস্থাটি।

বিবৃতিতে বলা হয়, সম্প্রতি সরকারি অফিসে ও উপকূলীয় ১২ জেলায় একবার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিকের ব্যবহার বন্ধ করবার উদ্যোগকে স্বাগত জানাচ্ছে আইপিডি। এ উদ্যোগ দেশের সব অফিস ও এলাকার জন্যই সম্প্রসারণের দ্রুত উদ্যোগ এবং সেটির কার্যকর বাস্তবায়নের জন্য নীতিমালা ও কর্মকৌশল প্রণয়ন করতে হবে। প্লাস্টিক দূষণের ব্যাপকতার কারণের নগরের ড্রেনেজ ব্যবস্থা অকার্যকর হয়ে পড়ছে। নদী-খাল-জলাশয়ের জীববৈচিত্র্য ও বাস্তুতন্ত্র ধ্বংসের সম্মুখীন। এর ফলে সৃষ্ট পরিবেশগত ক্ষতির অর্থনৈতিক মূল্যায়ন করা অতি জরুরি হয়ে পড়েছে।

‘আফ্রিকার দেশ রুয়ান্ডা, প্রতিবেশী দেশ ভারত, যুক্তরাজ্য, ইউরোপিয়ান ইউনিয়নসহ বিশ্বের অনেক দেশেই একবার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিক কিংবা প্লাস্টিকের বিবিধ ব্যবহার বন্ধ করবার জন্য আইন ও নীতিমালা কার্যকর করা হয়েছে। সরকারের পক্ষ থেকে আন্তরিকভাবে উদ্যোগ নেওয়া হলে বাংলাদেশেও প্লাস্টিক দূষণসহ মাটি দূষণ, পানি দূষণ ও বায়ু দূষণসহ সব প্রকারের পরিবেশ দূষণ রোধ করা সম্ভব বলে বিশ্বাস করে আইপিডি।’

এতে বলা হয়, প্লাস্টিক দূষণের আগ্রাসন এখন কেবল নগর এলাকায় সীমাবদ্ধ নয় বরং গ্রামীণ জনপদে, পাহাড়ি এলাকায় কিংবা উপকূলীয় দ্বীপ ও চরাঞ্চলসহ সারা বাংলাদেশেই আগ্রাসী আকারে এ দূষণ ছড়িয়ে পড়েছে। প্লাস্টিক দূষণ এখনই নিয়ন্ত্রণে আনার জন্য কার্যকর আইন প্রণয়ন প্রয়োজন। একইসঙ্গে প্লাস্টিকের বিকল্প উদ্ভাবনের জন্য পাটজাত দ্রব্যাদিসহ অন্যান্য সামগ্রী তৈরির উদ্যোগ বেগবান করতে হবে। পাশাপাশি বিপজ্জনক প্লাস্টিক উৎপাদন, বাজারজাতকরণ ও বিপণনে কঠোর নিয়ন্ত্রণ ও নজরদারি বাড়াতে হবে। কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিধিমালা, ২০২১ অনুযায়ী উৎপাদকের সম্প্রসারিত দায়িত্ব অনুসারে পরিবেশ রক্ষার্থে প্লাস্টিকসহ জৈবিকভাবে অপচনশীল দ্রব্যাদির প্রস্তুতকারী কিংবা আমদানিকারকদের ওপর প্লাস্টিক, টিন, গ্লাস, সিঙ্গেল ইউজ প্লাস্টিক, পলিথিন প্রভৃতি পণ্যের মাধ্যমে সৃষ্ট বর্জ্য গ্রাহক পর্যায় হতে সংগ্রহ, পুনঃচক্রায়ন ও পরিত্যজনের অর্পিত দায়িত্ব বাস্তবায়নের বাধ্যবাধকতা নিশ্চিত করতে উদ্যোগী হতে হবে সরকারের সংশ্লিষ্ট সংস্থাকে।

বিগত সময়ে পরিবেশ রক্ষার মাধ্যমে সামগ্রিক পরিকল্পনা ও উন্নয়ন করার লক্ষ্য ও কর্মকৌশল স্থির না করতে পারায় শুধু পরিবেশ ও জীববৈচিত্র‍্যই নয়, বাংলাদেশের মানুষের জনস্বাস্থ্য ও জনস্বার্থ হুমকির সম্মুখীন হয়েছে।

সামগ্রিকভাবে পরিবেশ দিবসের মূল লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য অর্জনে দেশের বিভিন্ন উন্নয়ন পরিকল্পনা গ্রহণ ও বাস্তবায়নে ‘আগে উন্নয়ন, পরে পরিবেশ’ এ ধরনের ভ্রান্ত উন্নয়ন দর্শন থেকে সরে এসে সব ক্ষেত্রেই পরিবেশ-প্রতিবেশকে প্রাধান্য দিয়েই উন্নয়ন কর্মকাণ্ড প্রণয়ন ও প্রকল্প গ্রহণ করবার দাবি জানাচ্ছে আইপিডি।

এমএমএ/এএএইচ