প্রাণ-আরএফএল-এর উদ্যোগে ২৪ জেলায় প্লাস্টিক বর্জ্য অপসারণ
পরিবেশের সুরক্ষায় মানুষের মাঝে সচেতনতা তৈরির লক্ষ্যে দেশের শীর্ষস্থানীয় শিল্পগ্রুপ প্রাণ-আরএফএল-এর উদ্যোগে একই দিনে সারাদেশের ২৪ জেলার ৫৮ স্থানে পড়ে থাকা বিভিন্ন ধরনের প্লাস্টিক বর্জ্য পরিষ্কার করা হয়েছে। পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষার্থে সামাজিক দায়বদ্ধতার অংশ হিসেবে ‘লেটস সেভ দ্য প্ল্যানেট’ নামে একটি ক্যাম্পেইন চালু করেছে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপ। এ ক্যাম্পেইনের অংশ হিসেবে সারাদেশে পরিচ্ছন্নতার এ কর্মসূচিতে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের কর্মীদের পাশাপাশি নানা শ্রেণি পেশার মানুষ অংশ নেন।
শুক্রবার (২ জুন) রাজধানীর হাতিরঝিলের অ্যাম্পিথিয়েটারে ‘লেটস সেভ দ্য প্ল্যানেট’ কর্মসূচির উদ্বোধন করেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র আতিকুল ইসলাম। অনুষ্ঠানে প্লাস্টিক সংগ্রহের সঙ্গে জড়িত ১২ ব্যক্তিকে সম্মাননা দেওয়া হয়।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শেষে যুগপৎভাবে হাতিরঝিলসহ ঢাকা, গাজীপুর, চট্টগ্রাম, রাজশাহী, খুলনা, বরিশাল, হবিগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জ, নরসিংদী, কক্সবাজারসহ দেশের ২৪ জেলার ৫৮ স্থানে বিভিন্ন ধরনের প্লাস্টিক বর্জ্য পরিষ্কার করা হয়।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে আতিকুল ইসলাম বলেন, নগরায়ণ করতে হবে, সুন্দর দেশ গড়তে হবে, পাশাপাশি পরিবেশের কথা চিন্তা করতে হবে। আমরা নিজেরাই পরিবেশ ধ্বংস করছি, এখন পরিবেশ তার প্রতিশোধ নিচ্ছে। সেই প্রতিশোধের ফল পাচ্ছি। ঢাকা শহর এখন একটা হিট আইল্যান্ডে পরিণত হয়েছে।
পরিবেশ দূষণরোধে ব্যাপক পরিসরে রিসাইক্লিং কর্মকাণ্ড পরিচালনার জন্য প্রাণ-আরএফএল গ্রুপকে ধন্যবাদ জানান তিনি।
প্রাণ গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ইলিয়াছ মৃধা বলেন, ‘পরিবেশের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপ সবসময় বদ্ধপরিকর। তবে পরিবেশের সর্বোচ্চ সুরক্ষা নিশ্চিত করতে হলে অবশ্যই সাধারণ মানুষকে সম্পৃক্ত করতে হবে। আর এ কারণেই আমরা ‘লেটস সেভ দ্য প্ল্যানেট’ ক্যাম্পেইন হাতে নিয়েছি। এ ক্যাম্পেইনের আওতায় প্লাস্টিক ব্যবস্থাপনা সম্পর্কে জনসচেতনতামূলক নানা ধরনের আয়োজন থাকবে। এর অংশ হিসেবেই আজ আমরা দেশের ২৪ জেলার ৫৮ স্থানে বিভিন্ন ধরনের প্লাস্টিক বর্জ্য অপসারণের উদ্যোগ নিয়েছি। এ ধরনের আয়োজন ভবিষ্যতেও অব্যাহত থাকবে।’
আরএফএল গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আরএন পাল বলেন, প্লাস্টিকের কাঁচামাল পচনশীল না হওয়ায় এটি পরিবেশ দূষণের অন্যতম অনুষঙ্গ। তবে সঠিক ব্যবস্থাপনা ও রিসাইক্লিং নিশ্চিত করতে পারলে পরিবেশকে এ দূষণের হাত থেকে অনেকাংশে রক্ষা করা সম্ভব। প্লাস্টিকের সঠিক ব্যবস্থাপনা ও রিসাইক্লিয়ের ক্ষেত্রে সাধারণ মানুষের অনেক বড় ভূমিকা রাখার সুযোগ রয়েছে। প্লাস্টিক বর্জ্যের সঠিক ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে তা রিসাইক্লিং করা গেলে পরিবেশ দূষণ অনেকাংশে কমিয়ে আনা সম্ভব হবে।
অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের বিপণন পরিচালক কামরুজ্জামান কামাল ও টেল প্লাস্টিকস-এর নির্বাহী পরিচালক কামরুল হাসান।
২০১২ সালে প্লাস্টিক পণ্য রিসাইক্লিং কর্মকাণ্ডের সঙ্গে যুক্ত হয় প্রাণ-আরএফএল। প্লাস্টিক রিসাইক্লিং কার্যক্রমে এখন পর্যন্ত প্রাণ-আরএফএল বিনিয়োগ করেছে প্রায় ৩৫০ কোটি টাকা। প্রতিবছর সিঙ্গেল ইউজ প্লাস্টিকসহ প্রায় ৩২ হাজার টন বিভিন্ন ধরনের প্লাস্টিক রিসাইক্লিং করে বানাচ্ছে শতাধিক পণ্য, যা কাঁচামাল হিসেবে আমদানি করলে আর্থিক মূল্য দাঁড়াতো ৪৫০ কোটি টাকার বেশি।
জেএইচ/জিকেএস