গাজীপুরে জাহাঙ্গীর
এভাবে ভোট হলে আমার মা বিপুল ভোটে জয়ী হবেন
গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনের ভোটগ্রহণ, ভোটার উপস্থিতি ও সার্বিক পরিবেশ নিয়ে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন সিটির সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর আলম।
তিনি বলেছেন, এখন পর্যন্ত ভালোভাবে ভোটগ্রহণ হচ্ছে। ভোটার উপস্থিতি ভালো। ভোট সুষ্ঠুভাবে হচ্ছে। এভাবে ভোট হলে আমার মা বিপুল ভোটে জয়ী হবেন।
আরও পড়ুন: সিসি ক্যামেরায় মনিটরিং হচ্ছে গাজীপুর সিটি নির্বাচন
বৃহস্পতিবার (২৫ মে) গাজীপুর সিটির কানাইয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে ভোট দিয়ে বেরিয়ে যাওয়ার সময় তিনি জাগো নিউজকে এ কথা বলেন। এসময় জাহাঙ্গীরের সঙ্গে ছিলেন তার মা স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী জায়েদা খাতুন। সকালে মা-ছেলে দুজনই এ কেন্দ্রে ভোট দেন। গাড়ির ভেতর থেকে দুজনই বিজয়সূচক ‘ভি’ চিহ্ন দেখান।
এদিন সকাল থেকে নিজের মাকে নিয়ে বিভিন্ন কেন্দ্র পরিদর্শন করতে দেখা যায় সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর আলমকে। এসময় ভোট নিয়ে নিজের সন্তুষ্টির কথা জানিয়ে মায়ের জয়ের ব্যাপারে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।
আরও পড়ুন: গাজীপুর সিটি নির্বাচনে ভোটগ্রহণ চলছে
২০২১ সালের সেপ্টেম্বর গোপনে ধারণ করা জাহাঙ্গীর আলমের একটি অডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়। সেই অডিওতে মুক্তিযুদ্ধে ৩০ লাখ লোক শহীদ ও বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে কটূক্তি করতে শোনা যায় তাকে। এ ঘটনায় ওই বছরের ১৯ নভেম্বর তাকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়। পরে বেশকিছু অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে একই বছরের ২৫ নভেম্বর তাকে গাজীপুর সিটি করপোরেশনের মেয়র পদ থেকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।
পরে ভবিষ্যতে সংগঠনের স্বার্থ পরিপন্থি কার্যক্রম ও সাংগঠনিক শৃঙ্খলা ভঙ্গ না করার শর্তে জাহাঙ্গীর আলমকে ক্ষমাও করা হয়। গত ১ জানুয়ারি আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের সই করা চিঠিতে তাকে ক্ষমা করার কথা জানানো হয়। ওই চিঠিতে বলা হয়, ভবিষ্যতে সংগঠনবিরোধী কর্মকাণ্ডে লিপ্ত হলে, তা ক্ষমার অযোগ্য বলে বিবেচিত হবে।
আরও পড়ুন: গাজীপুরে নির্বাচনী পরিবেশ উপমহাদেশের মধ্যে অত্যন্ত ভালো
তবে গত ১৫ মে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদ সংগঠনের গঠনতন্ত্রের বিধি মোতাবেক গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলমকে দল থেকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হয়। ওইদিন দলটির দপ্তর থেকে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
এরই মধ্যে ঋণখেলাপির দায়ে গাজীপুর সিটি নির্বাচনে মেয়র পদে জাহাঙ্গীরের মনোনয়নপত্র বাতিল হয়ে যায়। তার জায়গায় নৌকা প্রতীকে আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন পান আজমত উল্লা খান। তবে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মেয়র পদে টেবিল ঘড়ি প্রতীকে ভোটে লড়ছেন জাহাঙ্গীর আলমের মা জায়েদা খাতুন। মায়ের পক্ষে জাহাঙ্গীর আলম ভোটের প্রচারণায়ও অংশ নেন।
আরও পড়ুন: জাহাঙ্গীরকে আওয়ামী লীগ থেকে স্থায়ী বহিষ্কার
এদিকে গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে বৃহস্পতিবার সকাল ৮টায় শুরু হওয়া ভোট চলবে বিকেল ৪টা পর্যন্ত। সব কেন্দ্রে ভোট হচ্ছে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম)। ভোটগ্রহণের শুরু থেকে সিসি ক্যামেরার মাধ্যমে নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। মোট ৪ হাজার ৪৩৫টি সিসি ক্যামেরার মাধ্যমে নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে।
গাজীপুর সিটি করপোরেশনে মোট ভোটার সংখ্যা ১১ লাখ ৭৯ হাজার ৪৭৬ জন। এরমধ্যে পুরুষ পাঁচ লাখ ৯২ হাজার ৭৬২ জন, নারী পাঁচ লাখ ৮৬ হাজার ৬৯৬ জন এবং তৃতীয় লিঙ্গের ভোটার রয়েছেন ১৮ জন। এ সিটিতে ৫৭টি সাধারণ ও ১৯টি সংরক্ষিত ওয়ার্ড আছে। মোট ভোটকেন্দ্র ৪৮০টি, মোট ভোটকক্ষ ৩ হাজার ৪৯৭টি।
গাজীপুর সিটি নির্বাচনে মেয়র পদে আট জন, সংরক্ষিত কাউন্সিলর পদে ৭৯ জন এবং সাধারণ কাউন্সিলর পদে ২৪৬ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
আরও পড়ুন: আপিলে যাবেন জাহাঙ্গীর, মাঠে টিকে থাকলেন মা
মেয়র পদপ্রার্থীরা হলেন- নৌকা প্রতীকে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রার্থী অ্যাডভোকেট মো. আজমত উল্লা খান, লাঙ্গল প্রতীকে জাতীয় পার্টির প্রার্থী এমএম নিয়াজ উদ্দিন, মাছ প্রতীকে গণফ্রন্টের প্রার্থী আতিকুল ইসলাম, হাতপাখা প্রতীকে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের গাজী আতাউর রহমান, গোলাপ ফুল প্রতীকে জাকের পার্টির মো. রাজু আহাম্মেদ। এছাড়া স্বতন্ত্র থেকে মেয়র পদে টেবিল ঘড়ি প্রতীকে জায়েদা খাতুন (সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর আলমের মা), ঘোড়া প্রতীকে মো. হারুন-অর-রশীদ ও হাতি প্রতীকে সরকার শাহনূর ইসলাম প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
এসইউজে/এমকেআর/এএসএম