উচ্ছেদ অভিযানে কাউন্সিলরের বাধা, ভ্রাম্যমাণ আদালত অবরুদ্ধ
রাজধানীর মোহাম্মদপুরে ফুটপাতে অবৈধ দোকানপাট উচ্ছেদ করতে গিয়ে স্থানীয় কাউন্সিলরের তোপের মুখে পড়েছেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) ভ্রাম্যমাণ আদালত। এ ঘটনায় ডিএনসিসির ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট।
ডিএনসিসির ওই কাউন্সিলরের নাম শফিকুল ইসলাম সেন্টু। জাতীয় পার্টি-সমর্থিত এ কাউন্সিলরের ওয়ার্ড নম্বর ৩১। আর ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করছিলেন অঞ্চল-৫ এর আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোতাকাব্বীর আহমেদ।
কাউন্সিলর শফিকুল ইসলাম সেন্টুর বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি মোহাম্মদপুরের সড়ক ও ফুটপাতের অবৈধ দোকানপাট থেকে প্রতিদিন মাসোয়ার নেন। তাই উচ্ছেদ অভিযান বন্ধ করতে তিনি ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযানে বাধা দেন এবং প্রায় ৪০ মিনিট অবরুদ্ধ করে রাখেন। এছাড়া ভ্রাম্যমাণ আদালতের বিরুদ্ধে স্লোগান দেন।
ডিএনসিসির অঞ্চল-৫ সূত্র জানায়, পূর্বনির্ধারিত সূচি অনুযায়ী মঙ্গলবার (২৩ মে) বেলা ১১টায় মোহাম্মদপুর টাউন হল কাঁচা বাজারে আদর্শ ও স্বাস্থ্যসম্মত কাঁচা বাজার তৈরি প্রকল্পের আওতায় ক্রেতা, বিক্রেতা ও বাজার কমিটির সভা অনুষ্ঠিত হয়। এ সভায় অংশগ্রহণ শেষে টাউন হল মার্কেট পরিদর্শন করেন অঞ্চল-৫ এর আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোতাকাব্বীর আহমেদ।
এসময় তিনি দেখেন, মার্কেটের উত্তর এবং পশ্চিম দিকের রাস্তা ও ফুটপাত দখল করে বিভিন্ন ধরনের অবৈধ দোকানপাট গড়ে উঠেছে।এতে জনসাধারণ ও যানচলাচল ব্যাপকভাবে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। তখন পুলিশ ফোর্স সঙ্গে নিয়ে সব অবৈধ দোকান অপসারণে তাৎক্ষণিক ভ্রম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন। রাস্তা ও ফুটপাত দখল করে গড়ে অবৈধ নয়টি দোকানের মালিক প্রত্যেককে ১০ হাজার টাকা করে জরিমানা করেন তিনি।
এ বিষয়ে বুধবার (২৪ মে) নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোতাকাব্বীর আহমেদ জাগো নিউজকে বলেন, অভিযান পরিচালনার একপর্যায়ে ওয়ার্ড কাউন্সিলর শফিকুল ইসলাম সেন্টু আকস্মিকভাবে ৪০ থেকে ৫০ জন লোক নিয়ে আমার সঙ্গে বাদানুবাদে জড়িয়ে পড়েন। তিনি সিটি করপোরেশনের নিয়মিত অভিযান ও মোবাইল কোর্ট পরিচালনায় বাধা দেন। এছাড়া তার অনুসারীসহ সহস্রাধিক লোক ডিএনসিসি এবং সরকারের বিরুদ্ধে বিভিন্ন প্রকার নেতিবাচক স্লোগানের মাধ্যমে মিছিল আরম্ভ করেন। এভাবে তারা প্রায় ৪০ মিনিট ভ্রাম্যমাণ আদালতকে ঘেরাও করে রাখে।
তিনি বলেন, অভিযানে বাধা দেওয়ার একপর্যায়ে কাউন্সিলর শফিকুল ইসলাম সেন্টু বলতে থাকেন, ‘মোবাইল কোর্ট কার্যক্রম বন্ধ করে দ্রুত এলাকা ত্যাগ না করলে আমি ব্যবসায়ীদের সঙ্গে নিয়ে মোবাইল কোর্ট ও সিটি করপোরেশনের বিরুদ্ধে আন্দোলন করবো।’ তখন উদ্ভুত পরিস্থিতিতে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা স্থগিত করে ঘটনাস্থল ত্যাগ করি। এমন ঘটনা সিটি করপোরেশনের সুনাম ক্ষুণ্ন হয়েছে। একজন জনপ্রতিনিধির কাছ থেকে এমন আচরণে বিব্রতকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে যা অনাকাঙ্ক্ষিত। তাই বুধবার ডিএনসিসির ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকের কাছে লিখিত অভিযোগ করেছি।
তবে কাউন্সিলর শফিকুল ইসলাম সেন্টু ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযানে বাধা দেওয়ার অভিযোগ অস্বীকার করেন। তিনি জাগো নিউজকে বলেন, ওইদিন তিনি উদ্ভূত পরিস্থিতিতে ভ্রাম্যমাণ আদালতকে নিরাপদে এলাকা ছেড়ে চলে যেতে সহায়তা করেছেন।
এমএমএ/ইএ