ভিডিও EN
  1. Home/
  2. জাতীয়

তিন বছরে মেয়র আতিক যা করলেন

মুসা আহমেদ | প্রকাশিত: ০৩:০৯ পিএম, ১৩ মে ২০২৩

সুস্থ, সচল ও আধুনিক ঢাকা গড়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে ২০২০ সালে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র নির্বাচিত হন মো. আতিকুল ইসলাম। আজ শনিবার তার মেয়র হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার তিনবছর পূর্তি হচ্ছে।

নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী এই তিন বছরে নগরে অনেক অবকাঠামো উন্নয়ন করেছেন মেয়র আতিকুল ইসলাম। এখনো অনেক প্রকল্পের কাজ চলমান। বাকি দুই বছরে তার প্রতিশ্রুতির ৮০ শতাংশ কাজ বাস্তবায়ন করতে পারবেন বলে আশাবাদী ডিএনসিসি মেয়র।

জানতে চাইলে মেয়র আতিকুল ইসলাম জাগো নিউজকে বলেন, সুস্থ, সচল ও আধুনিক ঢাকা গড়তে যেসব প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলাম, তা বাস্তবায়নে আমি বদ্ধপরিকর। ধাপে ধাপে নগরে অবকাঠামো উন্নয়নে কাজ করছি। কাজের মাধ্যমে মানুষের আস্থা-ভালোবাসা অর্জন করতে পেরেছি। আমার প্রতি নগরের মানুষের অস্থা-বিশ্বাসই আমার কাজের শক্তি।

তিনি বলেন, ২০২০ সালে করোনা মহামারির মধ্যে মেয়র হিসেবে দায়িত্ব নিয়েছিলাম। তখন করোনোর কারণে ঠিকমতো নগর পরিকল্পনায় তেমন সময় দিতে পারিনি। তবে এখন পরিস্থিতি স্বাভাবিক। আশা করি আগামী দুই বছরের মধ্যে আমার প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন করতে পারবো।

শনিবার (১৩ মে) মেয়র হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার তিন বছর পূর্তি উপলক্ষে ডিএনসিসির নগর ভবনে সংবাদ সম্মেলন করবেন আতিকুল ইসলাম। সংবাদ সম্মেলনে গত তিন বছরে তার সফলতা এবং আগামী দুই বছরের কর্মপরিকল্পনা নিয়ে কথা বলবেন।

২০২০ সালের ১৩ মে ডিএনসিসির মেয়র হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পরপরই সুস্থ, সচল ও আধুনিক নগর গড়তে জলাবদ্ধতা নিরসন, অবৈধ দখলে থাকা খাল উদ্ধার, ফুটপাত দখলমুক্ত করা, যানজট নিরসন, মশা নিধন, পরিবেশবান্ধন সড়ক বাতি স্থাপন, পার্ক-খেলার মাঠ আধুনিকায়ন, ডিএনসিসি করোনা হাসপাতাল চালু, পাবলিক টয়লেট স্থাপন, বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সিটি করপোরেশনের সঙ্গে নগরের উন্নয়নে সমঝোতা চুক্তি, জলাশয় রক্ষায় ভূমিকাসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে কাজ করে চলছেন আতিকুল ইসলাম। অধিকাংশ ক্ষেত্রে তার কাজে সফলতা পেয়েছেন। নাগরিকদের সন্তুষ্টি অর্জন করতে সক্ষম হয়েছেন।

সুস্থ ঢাকা
বর্জ্য ব্যবস্থাপনা: সুস্থ ঢাকা ইশতেহারে বর্জ্য ব্যবস্থাপনাকে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিয়েছেন ডিএনসিসি মেয়র আতিকুল ইসলাম। এরই মধ্যে আওতাধীন এলাকায় এক হাজার ২৫০ কিলোমিটার ড্রেন পরিষ্কার করেছে ডিএনসিসি। এর মধ্যে গত বছরে খাল থেকে প্রায় ২ লাখ টন বর্জ্য অপসারণ করা হয়েছে। সম্প্রতি কল্যাণপুর রিটেনশন পন্ড থেকে অপসারণ করা হয়েছে প্রায় ৩০ লাখ ঘনফুট মাটি ও স্ল্যাজা।

এছাড়া বাসাবাড়ির বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় নগরের বিভিন্ন এলাকায় ৫২টি সেকেন্ডারি ট্রান্সফার স্টেশন (বর্জ্য রাখার বড় ঘর) তৈরি করা হয়েছে। চলতি বছর নতুন করে আরও নয়টি সেকেন্ডারি ট্রান্সফার স্টেশন তৈরি করা হবে। এখন তিনটির কাজ চলমান।

পার্ক ও মাঠের আধুনিকায়ন: ডিএনসিসির প্রকৌশল দপ্তর সূত্র জানায়, গত তিন বছরে তিনটি পার্ক ও একটি খেলার মাঠ আধুনিকায়ন করা হয়েছে। উন্নয়ন কাজ শেষ করে সেগুলো জনগণের জন্য খুলে দেওয়া হয়েছে। এখন গুলশানের ডা. ফজলে রাব্বি পার্কের উন্নয়ন কাজ চলমান। যদিও এ পার্কের কাজ গত দুই বছর আগে শেষ হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু প্রাথমিক নকশায় গাছ কাটার প্রয়োজন ছিল। পরে গাছ রেখেই উন্নয়ন করার নির্দেশ দেওয়ায় নতুন করে পরিকল্পনা প্রণয়ন করে কাজ শুরু হয়, যে কারণে একটু দেরি হয়। বর্তমানে ডা. ফজলে রাব্বি পার্কের ৯০ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে।

এছাড়া মিরপুরে প্যারিস রোড মাঠ পরিত্যক্ত ভাগাড় ছিল। স্থানীয় মানুষের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে এ মাঠে দুই হাজার ২০০ ট্রাক বালু ফেলে শিশু-কিশোরদের জন্য সংস্কার করা হয়েছে। যদিও এ মাঠের জায়গাটি গণপূর্ত অধিদপ্তরের। তারা এখানে বিভিন্ন ব্যক্তির নামে প্লট বরাদ্দ করেছিল। স্থানীয় বাসিন্দা এবং প্রভাবশালী ব্যক্তিদের বাধার কারণে এখানে স্থাপনা নির্মাণ করতে পারেননি তারা। সবাই চেয়েছিলেন এখানে একটি মাঠ হোক।

মশা নিয়ন্ত্রণ: সিটি করপোরেশন নাগরিকদের যেসব সেবা দিয়ে থাকে তার মধ্যে মশা নিধন বা নিয়ন্ত্রণ অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ। এ জন্য ডিএনসিসি ৫৪টি ওয়ার্ডে এডিস মশা নিয়ন্ত্রণে জনসচেতনতামূলক কার্যক্রম পরিচালনা করে। ছাদবাগান পরিদর্শনে ড্রোন প্রযুক্তির ব্যবহার করে প্রায় ২৮ হাজার বাড়ির ছাদ পরীক্ষা করেছে ডিএনসিসি। এর মধ্যে দুই হাজার ২০০ বাড়িতে ছাদবাগান চিহ্নিত করেছে। ২০০ বাড়িতে মশার প্রজনন ক্ষেত্র থাকার মতো পানির উপস্থিতি শনাক্ত করে তা ধ্বংস করা হয়। সিটি করপোরেশনের এমন কার্যক্রম স্বাগত জানিয়েছে সাধারণ মানুষ।

এছাড়া বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে মশা নিধনে ল্যাব স্থাপনে চুক্তি সই করেছে ডিএনসিসি। পাঠ্যপুস্তকে এডিস মশা সম্পর্কে সচেতনতার বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত করতে প্ৰয়োজনীয় ব্যবস্থা নিয়েছে ডিএনসিসি।

মেয়রস কাপ: ডিএনসিসি মেয়র আতিকুল ইসলামের উদ্যোগে ‘খেলাধুলায় যুক্ত থাকি, মাদককে দূরে রাখি’ স্লোগানে মেয়রস কাপের যাত্রা শুরু হয়েছিল ২০২১ সালে। ২০২২ সালের পর এ বছরও মেয়রস কাপ অনুষ্ঠিত হচ্ছে। ২০২৩ সালের মেয়রস কাপ উদ্বোধন করেন ভারতীয় ক্রিকেটার সৌরভ গাঙ্গুলী। মেয়রস কাপে (ক্রিকেট, ফুটবল, ভলিবল) ডিএনসিসির ৫৪টি ওয়ার্ডের পৃথক পৃথক দল অংশগ্রহণ করেছে।

এর বাইরে নগরের সৌহার্দ্য ও সম্প্রীতির প্রতীক হিসেবে ২০২২ সালের ২ ডিসেম্বর রাজধানীর গুলশানে পাড়া উৎসবের আয়োজন করে ডিএনসিসি। যেখানে সব শ্রেণির মানুষ অংশ নেয়।

বায়ুদূষণ রোধ: বায়ুদূষণ রোধে জার্মান প্রযুক্তির অত্যাধুনিক স্প্রে-ক্যানন ব্যবহার করছে ডিএনসিসি। আরও ১০টি ওয়াটার ব্রাউজার দিয়ে দৈনিক চার লাখ লিটার পানি ছিটানো হয়। এ ছাড়া নগরবাসীকে ছাদ কৃষিতে উদ্বুদ্ধ করতে যথাযথ প্রশিক্ষণ, বছিলার লাউতলা খালের পাড়ে দুই হাজার গাছ লাগানো হয়। এছাড়াও গুলশান ফজলে রাব্বি পার্ক, শহীদ তাজউদ্দিন আহমেদ পার্ক ও মিরপুর জল্লাদখানায় বিভিন্ন প্রজাতির গাছের চারা রোপণ করা হয়েছে। সম্প্রতি এক অনুষ্ঠানে ঢাকার বায়ুদূষণ এবং তাপমাত্রা সহনীয় পর্যায়ে রাখতে আগামী দুই বছরের মধ্যে ডিএনসিসি এলাকায় আরও দুই লাখ গাছ লাগানোর ঘোষণা দেন মেয়র আতিকুল ইসলাম।

আধুনিক পাবলিক টয়লেট নির্মাণ: মেয়র আতিকুল ইসলাম দায়িত্ব নেওয়ার পর গত তিন বছরে ডিএনসিসির বিভিন্ন এলাকায় ৪৯টি নতুন পাবলিক টয়লেট স্থাপন করা হয়েছে। আরও ২৩টির সংস্কারকাজ চলছে। এসব পাবলিক টয়লেটে নারী ও পুরুষদের জন্য রয়েছে আলাদা ব্যবস্থা। এছাড়া গোসল, ওজু, লকার, ব্রেস্ট ফিডিংয়ের ব্যবস্থাও রয়েছে। নির্দিষ্ট পরিমাণ ফি দিয়ে তা ব্যবহার করতে পারছে সাধারণ মানুষ।

সচল ঢাকা
ঢাকার ফুটপাত ও ড্রেনেজ ব্যবস্থার উন্নয়ন: ডিএনসিসি মেয়র আতিকুল ইসলাম করপোরেশনের দায়িত্ব নেওয়ার পর নগরের অবকাঠামো উন্নয়ন তথা রাস্তা নির্মাণে ব্যতিক্রমী এক উদ্যোগ গ্রহণ করেন। রাস্তা নির্মাণে সিটি করপোরেশনের বরাদ্দ পেতে অবশ্যই তা ২০ ফুট প্রশস্ত হতে হবে। এমন নির্দেশনার পর মিরপুরের মোল্লা রোড, আদর্শ রোড, পীরের বাগসহ অন্যসব রাস্তা ২০ ফুট চওড়া করে তৈরি করা হচ্ছে।

গত এক বছরে ৩৮৬ কোটি টাকা খরচ করে প্রায় ৮৩ কিলোমিটার রাস্তা, প্রায় ৬৯ কিলোমিটার পাইপ ও পার্শ্ব নর্দমা উন্নয়ন করা হয়েছে। এছাড়াও প্রায় ১৬ কিলোমিটার ফুটপাত উন্নয়ন করেছে ডিএনসিসি। আগারগাঁওয়ে অবৈধ পার্টি অফিস ভেঙে দখলমুক্ত করা হয়েছে ফুটপাত।

খাল উদ্ধার: আগে ঢাকার সব খাল ওয়াসার তত্ত্বাবধানে ছিল। কিন্তু ওয়াসা নিয়মিত খালগুলো পরিষ্কার না করায় বর্ষা মৌসুমে জলাবদ্ধতা তৈরি হতো। এ অবস্থায় ২০২১ সালে ওয়াসা থেকে ২৯টি খালের দায়িত্ব বুঝে নেয় ডিএনসিসি। এরপর খাল উদ্ধার, খনন, পরিষ্কার, খালের পাড় সবুজায়ন, সাইকেল লেন এবং ওয়াকওয়ে নির্মাণ শুরু করে ডিএনসিসি। এখনো সে কাজ চলমান রয়েছে। জিআইএস পদ্ধতিতে খালের সীমানা নির্ধারণ কার্যক্রম পরিচালনা করছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী। এরই মধ্যে ইব্রাহিমপুর, লাউতলা, কল্যাণপুর, রূপনগর, আব্দুল্লাহপুর, সিভিল অ্যাভিয়েশন, বাইশটেকি, বাউনিয়া খালের দখল উচ্ছেদ করে বর্জ্য অপসারণ করা হয়েছে।

ফুট ওভারব্রিজ নির্মাণ: গত এক বছরে তিনটি ফুট ওভারব্রিজ নির্মাণ করেছে ডিএনসিসি। এখন আরও ১৮টি ফুট ওভারব্রিজ নির্মাণকাজ চলছে। এর মধ্যে যমুনা ফিউচার পার্ক সংলগ্ন ফুট ওভারব্রিজে পথচারীদের জন্য একজোড়া আধুনিক এস্কেলেটর স্থাপনা করা হয়েছে। কালশী এবং ইসিবি চত্বরে নবনির্মিত ফুট ওভারব্রিজে এস্কেলটর স্থাপনকাজ প্রক্রিয়াধীন। বিভিন্ন স্থানে আরও ১০ জোড়া এস্কেলেটর এবং লিফট স্থাপনের পরিকল্পনা রয়েছে সংস্থাটির।

জলাবদ্ধতা নিরসন ও রাস্তা প্রশস্ত করতে উদ্যোগ: ইসিবি স্কয়ার থেকে কালশী পর্যন্ত ৩ দশমিক ৭০ কিলোমিটার রাস্তা প্রশস্ত করেছে ডিএনসিসি। এছাড়া কুড়িল ফ্লাইওভার সংলগ্ন জলাধার ভরাট করে পাঁচ তারকা হোটেল নির্মাণ কাজ শুরু করলে জনগণকে সঙ্গে নিয়ে নির্মাণকাজ স্থগিত করেন ডিএনসিসি মেয়র আতিকুল ইসলাম। পাশাপাশি জলাবদ্ধতা নিরসনে কুইক রেসপন্স টিম গঠন করেছে ডিএনসিসি। জনদুর্ভোগ দূর করতে কাজীপাড়া-শেওড়াপাড়া এলাকায় ওয়াসা থেকে পাওয়া ড্রেনেজ অংশ নিয়ে সৃষ্ট জটিলতা নিরসন করা হয়েছে। মিরপুরের বারেক মোল্লার মোড়ের ৬০ ফিট রোড প্রশস্ত করতে বাড়ির মালিককে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন মেয়র আতিকুল ইসলাম।

যানজট নিরসন: যানজট নিরসনে প্রথম ধাপে গুলশানের পাঁচটি স্কুলে স্কুলবাস চালুর উদ্যোগ নিয়েছে ডিএনসিসি। এর মধ্যে আগামী আগস্টে অন্তত একটি স্কুলে এ উদ্যোগ বাস্তবায়িত হবে বলে জাগো নিউজকে জানিয়েছেন ডিএনসিসি মেয়র। তিনি বলেন, যানজট নিরসনে আন্তঃজেলা বাস টার্মিনাল শহরের বাইরে স্থানান্তরে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। মহাখালী বাস টার্মিলাকে ভাটুলিয়া এবং গাবতলী আন্তঃজেলা বাস টার্মিনালকে সরিয়ে নেওয়া হবে হেমায়েতপুরে। এরই মধ্যে জায়গা নির্বাচন করা হয়েছে। জমি অধিগ্রহণ শেষ হলে কাজ শুরু হবে।

রাজধানীর যান চলাচল স্বাভাবিক রাখতে তেজগাঁও আনিসুল হক সড়কে নিয়মিত উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করছে ডিএনসিসি। এছাড়া তেজগাঁও এলাকায় অবৈধ পার্কিং বন্ধে সংশ্লিষ্টদের নিয়ে কমিটি গঠন করা হয়েছে। এ সমস্যার স্থায়ী সমাধানে কাজ করছে কমিটি।

এর বাইরে ঢাকা বাস রুট র‌্যাশনালাইজেশনের কাজ চলমান রয়েছে জানিয়ে মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেন, ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন সমন্বয় করে কাজ করছি। এরই মধ্যে বিভিন্ন রুটে নগর পরিবহন চালু হয়েছে। পর্যায়ক্রমে সব রুটে নগর পরিবহন চলবে। নগর পরিবহনে ই-টিকেটিং ব্যবস্থা চালু করা হবে। একই টিকিটের মাধ্যমে যাত্রীরা মেট্রোরেল ও নগর পরিবহনে চলাচল করতে পারবেন।

যানজট নিরসনে ডিএনসিসি স্মার্ট পার্কিংয়ের প্রকল্প নিয়েছে জানিয়ে মেয়র বলেন, প্রকল্পটি পরবর্তী পদক্ষেপের জন্য স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। এখন মন্ত্রণালয় অনুমোদন দিলে কার্যক্রম শুরু করবে ডিএনসিসি।

আধুনিক ঢাকা
নতুন ১৮টি ওয়ার্ডের চলমান উন্নয়ন: নাগরিক সেবা বাড়াতে ২০১৬ সালের ২৮ জুন হরিরামপুর, উত্তরখান, দক্ষিণখান, বাড্ডা, সাতারকুল ও ভাটারা ইউনিয়ন পরিষদ ভেঙে ১১৪ বর্গকিলোমিটার এলাকা নিয়ে নতুন ১৮টি ওয়ার্ড গঠন করা হয়। এগুলোকে যুক্ত করা হয় উত্তর সিটি করপোরেশনে। সিটিতে অন্তর্ভুক্ত হলেও এখন পর্যন্ত তেমন কোনো নাগরিক সুবিধা পায়নি এসব এলাকার বাসিন্দারা।

ডিএনসিসির তথ্য অনুযায়ী, ২০২০ সালের জুলাই মাসে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক) নতুন ১৮টি ওয়ার্ডে প্রথম পর্যায়ের উন্নয়ন কাজের জন্য ৪ হাজার ২৫ কোটি টাকা অনুমোদন করে। ২০২২ সালের মার্চে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উন্নয়ন কাজের উদ্বোধন করেন। কিন্তু পর্যাপ্ত তহবিলের অভাবে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন উন্নয়নকাজ ধীর গতিতে চালাচ্ছে। প্রকল্পের পুরো টাকা কবে পাবে এবং নাগরিক সব সুবিধা কবে মিলবে তার সঠিক কোনো তথ্য জানাতে পারেনি ডিএনসিসির প্রকৌশল বিভাগ।

পরিচ্ছন্নতাকর্মী নিবাস: নগরের রাস্তাঘাট পরিষ্কার করেন পরিচ্ছন্নতাকর্মীরা। তাদের জন্য গাবতলীতে চারটি ১৫তলা ভবন নির্মাণের কাজ চলছে। সেখানে শিশুদের জন্য থাকবে স্কুলসহ অন্যান্য সুবিধা।

ইলেকট্রিক বাস সার্ভিস চালুর উদ্যোগ: বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে একটি প্রকল্পের আওতায় আনুমানিক ৫০টি ইলেকট্রিক বাস চালুর উদ্যোগ নিয়েছে ডিএনসিসি। অন্যদিকে চলতি বছরের মধ্যে নগর পরিবহনে ১০০টি ইলেকট্রিক বাস চালু করা হবে।

হলিডে মার্কেট: আগারগাঁওয়ে ডিএনসিসির প্রথম হলিডে মার্কেট চালু করেছেন মেয়র আতিকুল ইসলাম। ক্ষুদ্র, কুটিরশিল্প ও মাঝারি (সিএমএসএমই) উদ্যোক্তাদের পণ্য ও খাদ্যপণ্য নিয়ে এ হলিডে মার্কেট চালু হয়েছে। সপ্তাহের শুক্র ও শনিবার সবার জন্য উন্মুক্ত থাকে এ মার্কেট। স্ট্রিট ফুডের কারণে এরই মধ্যে রাজধানীবাসীর কাছে এটি জনপ্রিয় হয়েছে।

স্মার্ট হাট স্মার্ট বাংলাদেশ: ২০২১ সালে প্রথমবারের মতো ডিএনসিসি ডিজিটাল পশুর হাট চালু করেছেন মেয়র আতিকুল ইসলাম। ছয়টি হাটে ছিল পরীক্ষামূলক কার্যক্রম (গাবতলী, বসিলা, আফতাবনগর, ভাটারা, কাওলা ও উত্তরা ১৭ নম্বর সেক্টর)। এবারও ডিজিটাল পশুর হাট আয়োজন করবে বলে জানা গেছে।

ফ্লাইওভারের পিলারে দৃষ্টিনন্দন স্ট্রিট আর্ট: গত এপ্রিলে মগবাজার ফ্লাইওভারের পিলারে দৃষ্টিনন্দন স্ট্রিট আর্ট শুরু করে ডিএনসিসি। পর্যাক্রমে অন্যসব ফ্লাইওভারে স্ট্রিট আর্ট করা হবে।

ই-ট্রেড লাইসেন্স সেবা: এখন ঘরে বসেই একজন গ্রাহক অনলাইনের মাধ্যমে ট্রেড লাইসেন্স পাবেন। কিউআর কোড ভিত্তিক রিকশার লাইসেন্স, ক্যাশলেস মার্কেট ব্যবস্থা, ডিএনসিসি-১ মার্কেটকে সম্পূর্ণভাবে ক্যাশলেস মার্কেট হিসেবে ঘোষণা করেছে ডিএনসিসি।

বর্জ্য থেকে বিদ্যুৎ: আমিনবাজারে ল্যান্ডফিলে বর্জ্য থেকে বিদ্যুৎ তৈরি করার উদ্যোগ নিয়েছে ডিএনসিসি। এখন সেখানে ভূমি উন্নয়নের কাজ চলমান। এই প্রকল্পের মাধ্যমে ৪২ দশমিক ৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডে যুক্ত হবে। পাশাপাশি সঠিক ব্যবস্থাপনার আওতায় আসবে বর্জ্য।

হকারদের পুনর্বাসন ও কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা: মিরপুর ১১ নম্বরের ৪নং অ্যাভিনিউয়ে হকারের স্থানসহ ফুটপাত ডিজাইন করা হয়েছে। মিরপুর ১০ নম্বরে বৃহৎ এনজিওর গবেষণাপত্রের পাইলটিং চলছে। ব্র্যাকের সঙ্গে এমওইউ সই হয়েছে। স্ট্রিট ফুডের জন্য ডেডিকেটেড রাস্তা রাখা হচ্ছে।

এমএমএ/কেএসআর/এএসএম