ভিডিও EN
  1. Home/
  2. জাতীয়

তীব্র দাবদাহের ঝুঁকি মোকাবিলায় কাজ করবো: বুশরা

নিজস্ব প্রতিবেদক | প্রকাশিত: ০৯:৪৮ পিএম, ০৪ মে ২০২৩

যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক অ্যাড্রিয়েন আর্শট-রকফেলার ফাউন্ডেশন রেজিলিয়েন্স সেন্টার (আর্শট-রক) বিশ্বের বিভিন্ন শহরে জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি মোকাবিলায় কাজ করে। ঢাকার তাপমাত্রা কমাতে গতকাল বুধবার ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) সঙ্গে সমঝোতা চুক্তি করেছে আর্শট-রক। তাদের কাজের অংশ হিসেবে ডিএনসিসিতে ‘চিফ হিট অফিসার’ পদে নিয়োগ পেয়েছেন উত্তর সিটির মেয়র আতিকুল ইসলামের মেয়ে বুশরা আফরিন।

এ নিয়োগের পর বৃহস্পতিবার (৪ মে) সাংবাদিকদের সঙ্গে নিজের কর্মপরিকল্পনা নিয়ে কথা বলেন বুশরা আফরিন। তিনি বলেন, আর্শট-রকের সঙ্গে কাজ করার মূল কারণ এ সংস্থা বহু বছর ধরে নগরে তীব্র তাপপ্রবাহ বা দাবদাহ নিয়ে কাজ করছে। দাবদাহের ফলে সৃষ্ট সমস্যাগুলোর বৈজ্ঞানিক এবং কারিগরি সমাধান খুঁজে বের করে তার বাস্তবায়নে জোর দেয় তারা।

বুশরা বলেন, তীব্র তাপপ্রবাহের মতো এক অদৃশ্য ঝুঁকির বিষয়ে মানুষকে জানাতে হয়। বিশ্বের অনেক দেশ মানুষকে এ বিষয়ে আগে থেকেই সাবধান করে। তাপপ্রবাহের মধ্যে বাইরে গেলে কী করতে হবে, সে পরামর্শ দেওয়া হয়। তবে বাংলাদেশে এটা নেই।

চিফ হিট অফিসার হিসেবে শুরুতে সে কাজটিই করতে চান জানিয়ে বুশরা আফরিন বলেন, তীব্র তাপপ্রবাহের কারণে সৃষ্ট দুর্ভোগের প্রধান শিকার সাধারণ মানুষ। সেজন্য নীতি নির্ধারণী পর্যায়েও তাদের সম্পৃক্ত করা হবে। যারা তীব্র তাপপ্রবাহের শিকার কিন্তু নীতি নির্ধারণী পর্যায়ে নেই তাদের কথা শুনতে হবে। বিশেষ করে নারীরা সবচেয়ে বেশি শিকার, তারা যেন এটা নিয়ে কথা বলেন। তাদের কোথায় কোথায় সমস্যা হচ্ছে, নাগরিকরা কী চাচ্ছেন।

তিনি জানান, চিফ হিট অফিসাররা সান্টিয়াগোতে কুলিং পেভমেন্ট, কুল রুফ, ফ্রিটাউনে ভবনের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে বিশেষ ব্যবস্থা নিয়েছেন। কিছু শহর বনায়নসহ নানা উপায়ের প্রয়োগ করছেন তারা। এ ধরনের সমাধান খুঁজে বের করে বাংলাদেশের উপযোগী পদ্ধতিগুলো প্রয়োগ করা হবে।

ঢাকায় জায়গা কম, তাই তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে মিনিয়েচার ফরেস্ট কীভাবে করা যায় সেটা চিন্তা করা হবে জানিয়ে বুশরা আফরিন বলেন, তীব্র তাপপ্রবাহের সমস্যা সমাধানে অনেক ধরনের সমাধান রয়েছে। সেগুলো আমাদের খুঁজে বের করে স্থানীয় বিষয়গুলো সামনে রেখে প্রয়োগ করতে হবে। কী করবো, কীভাবে করবো সেজন্য টাস্কফোর্স গঠন করা হবে।

তিনি বলেন, আমরা হিট মেসেজিং নিয়ে কাজ করবো, সচেতন করবো। কারণ সচেতনতা হলো প্রতিরোধের প্রথম ধাপ। বয়স্ক, শিশু, গর্ভবতী নারী এবং যারা শারীরিকভাবে অসুস্থ, তারা যেন নিরাপদে থাকেন। এগুলো আমাদের এখানে মানুষ জানে না।

বুশরা আফরিন আরও বলেন, ডিএনসিসি এরই মধ্যে নেচার বেইজড সল্যুশন নিয়ে কিছু কাজ করছে। আমি নিশ্চিত আরও অনেক সমাধান আছে। সেগুলো বের করতে হবে। নেচার বেইজড সল্যুশন সবদিক থেকে ভালো। তবে নেচার বেইজড, নাকি টেকনিক্যাল বেইজড সল্যুশনকে প্রাধান্য দেওয়া হবে সেটা আমরা ঠিক করবো।

তিনি জানান, নগরের তীব্র তাপপ্রবাহে সৃষ্ট সংকট মোকাবিলায় নেওয়া কর্মসূচি বাস্তবায়নের অর্থের জোগান দেবে আর্শট-রক। এতে উত্তর সিটিরও একটি অংশগ্রহণ থাকবে।

ঢাকার একটি স্কুলে মাধ্যমিক পর্যায় পর্যন্ত লেখাপড়া করে কানাডায় উচ্চ মাধ্যমিক পড়েছেন বুশরা। পরে কুইন্স ইউনিভার্সিটিতে উচ্চশিক্ষা নিয়েছেন গ্লোবাল ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ বিষয়ে। এছাড়া ঘানার ইনস্টিটিউট অব লোকাল গভার্নমেন্টেও তিনি পড়ালেখা করেছেন। এই সময়ে তিনি ঘানার বলগাটাঙ্গায় একটি নারী উন্নয়ন প্রকল্পে কাজ করেন।

পরে বাংলাদেশের বৃহত্তম এনজিও শক্তি ফাউন্ডেশনের ব্যবস্থাপনা নির্বাহী হিসেবে যোগ দেন। এছাড়া বাংলাদেশের প্রাণী অধিকার সংস্থা অভয়ারণ্যের পলিসি কনসালটেন্ট হিসেবে তিনি বিপথগামী প্রাণীদের মানবিক চিকিৎসা এবং কল্যাণ পরিচালনার জন্য একটি নীতি তৈরি করতে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের সঙ্গে কাজ করেছেন। এখন চিফ হিট অফিসার পদে দক্ষতার সঙ্গে কাজ করে নগরে তিনি তাপমাত্রায় সহনীয় পর্যায়ে আনতে পারবেন বলে আশা করছে ডিএনসিসি।

বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রের মিয়ামি, লস অ্যাঞ্জেলেস, চিলির সান্টিয়াগো, সিয়েরা লিওনের সান্টিয়াগো, গ্রিসের এথেন্স, অস্ট্রেলিয়ার মেলবোর্ন শহরে চিফ হিট অফিসার রয়েছেন। সবশেষ বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকার উত্তর সিটি করপোরেশনের দায়িত্ব পেলেন বুশরা আফরিন, যিনি এশিয়ার কোনো শহরের প্রথম চিফ হিট অফিসার।

এমএমএ/কেএসআর/জেআইএম