কবে সুদান থেকে বাংলাদেশিদের ফেরানো হবে, জানালেন রাষ্ট্রদূত
চলতি এপ্রিল বা আগামী মে মাসের প্রথম দিকে সুদান থেকে বাংলাদেশি নাগরিকদের নিরাপদে ফিরিয়ে নেওয়ার প্রত্যাশা ব্যক্ত করেছেন খার্তুমে বাংলাদেশের ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রদূত (চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স) তারেক আহমেদ। বুধবার (২৬ এপ্রিল) গণমাধ্যমকে তিনি এ কথা জানিয়েছেন।
সুদানে ক্ষমতার দ্বন্দ্ব নিয়ে দুই সশ্রস্ত্র বাহিনীর লড়াইয়ের মধ্যে দেশটিতে বাংলাদেশের হাজার দেড়েক নাগরিক আটকা পড়েছেন। লড়াইয়ের শুরুতে ১৫ এপ্রিল তারেক আহমেদের বাসায় আঘাত হানে মেশিনগানের গুলি। সবশেষ ২২ এপ্রিল বাংলাদেশ দূতাবাসের জানালা ও দেয়াল ভেদ করে মেশিনগানের গুলি ঢুকে পড়ে।
আরও পড়ুন: সুদানে বাংলাদেশ দূতের বাসভবন-দূতাবাসে গোলাগুলি
এ পরিস্থিতে যে এলাকায় বাংলাদেশ দূতাবাস ও বাংলাদেশ হাউস অবস্থিত, সেখানে নিরাপত্তা, সুরক্ষা পরিস্থিতি এখনো অস্থিতিশীল বলে জানান তারেক আহমেদ।
খার্তুমে বাংলাদেশের ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রদূত তারেক আহমেদের বাসাটি ছিল যুদ্ধের একেবারে কেন্দ্রে বিমানবন্দর ও সামরিক ঘাঁটির কাছাকাছি।
ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রদূত বলেন, আমাদের কর্মীরা এখন পর্যন্ত দূতাবাস প্রাঙ্গণে প্রবেশ করতে পারেনি। তারা সুদানে থাকা প্রবাসী বাংলাদেশিদের সরিয়ে নেওয়ার ব্যবস্থা করছেন। যদিও কিছুই চূড়ান্ত নয়। আমরা আশা করছি, এই (এপ্রিল) মাসের মধ্যে বা আগামী মে মাসের প্রথম দিকে সম্পন্ন (বাংলাদেশিদের সরিয়ে নেওয়া) হবে। এখন প্রবাসী বাংলাদেশিদের তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন: সুদান থেকে বাংলাদেশিদের ফিরিয়ে আনা হবে
ইউএনবির এক প্রশ্নের জবাবে তারেক আহমেদ আরও বলেন, পশ্চিমা দেশগুলো তাদের দূতাবাস সরিয়ে নিলেও ভারত, পাকিস্তান, মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া, বাংলাদেশসহ আরও কয়েকটি দেশের দূতাবাস এখনো চালু রয়েছে। রাজধানী খার্তুমের পরিস্থিতি অপ্রত্যাশিত রয়ে গেছে। তবে তারা কয়েকটি অঞ্চলের পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতির কিছু তথ্য পাচ্ছেন বলে জানান।
দূতাবাসের সব কর্মকর্তা ও তাদের পরিবার রাজধানীর বাইরে একটি নিরাপদ স্থানে আছেন বলেও জানান তিনি।
সুদানে যুদ্ধ পরিস্থিতিতে দেশটিতে অবস্থানরত বাংলাদেশি নাগরিকদের নিরাপদে ফিরিয়ে আনার সিদ্ধান্ত জানিয়ে গতকাল মঙ্গলবার ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম।
আরও পড়ুন: সুদানে বাংলাদেশিদের ভ্রমণ না করার পরামর্শ
আফ্রিকার তৃতীয় বৃহত্তম দেশ সুদানে গত ১৫ এপ্রিল থেকে সেনাবাহিনী ও প্যারামিলিটারি র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সের (আরএসএফ) মধ্যে যুদ্ধ চলছে। এতে এখন পর্যন্ত অন্তত চারশো মানুষের প্রাণহানি হয়েছে। যাদের মধ্যে জাতিসংঘ কর্মীও রয়েছেন। তবে নিহতের প্রকৃত সংখ্যা এর চেয়েও অনেক বেশি হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
এরমধ্যে টানা প্রায় ৪৮ ঘণ্টার আলোচনার পর সুদানে যুদ্ধবিরতিতে দুপক্ষের সমঝোতা হয়। তবে সোমবার মধ্যরাত থেকে ৭২ ঘণ্টার এ যুদ্ধবিরতি শুরুর কথা থাকলেও আদতে তা কার্যকর হয়নি।
এদিকে দেশটিতে চিকিৎসাসেবা, পানি ও বিদ্যুৎ সরবরাহ অব্যাহতভাবে বিঘ্নিত হওয়া এবং খাদ্যের মজুত ফুরিয়ে আসায় মানবিক সংকট দেখা দিতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। বিদেশি রাষ্ট্রগুলো তাদের নাগরিক ও কূটনীতিকদের নিজ দেশে ফিরিয়ে নিচ্ছে।
এমএমএ/এমকেআর/এমএস