অবসরের পর যেসব সুবিধা পাবেন আবদুল হামিদ
টানা ১০ বছর রাষ্ট্রপতি পদে দায়িত্ব পালন করে সোমবার (২৪ এপ্রিল) অবসরে গেছেন মো. আবদুল হামিদ। বর্ষীয়ান এ রাজনীতিক রাজনীতিতে আর সক্রিয় হবেন না। অবসরে লেখালেখির পাশাপাশি ঢাকা, কিশোরগঞ্জ ও হাওরে সময় কাটাবেন বলে জানিয়েছেন।
অবসরে তিনি কী কী সুবিধা পাবেন- এ নিয়ে অনেকের আগ্রহ আছে। আইনে কী কী সুবিধা দেওয়া আছে অবসরপ্রাপ্ত রাষ্ট্রপতিকে, তা নিয়ে তুলে ধরা হলো-
‘দ্য প্রেসিডেন্টস (রেমিউনারেশন অ্যান্ড প্রিভিলেজেস) অ্যাক্ট, ১৯৭৫ (মে ২০১৬ পর্যন্ত সংশোধিত)’ আইনে সাবেক রাষ্ট্রপতির সব সুবিধার বিষয়ে উল্লেখ আছে। সেখানে বলা হয়েছে, কোনো ব্যক্তি রাষ্ট্রপতি পদে কমপক্ষে ছয়মাস দায়িত্ব পালন শেষে পদত্যাগ করলে অথবা মেয়াদ শেষ হলে মৃত্যুর আগপর্যন্ত রাষ্ট্রপতি হিসেবে সর্বশেষ যে মাসিক বেতন পেতেন, তার ৭৫ শতাংশ হারে মাসিক অবসর ভাতা পাবেন। বর্তমানে রাষ্ট্রপতির মাসিক বেতন এক লাখ ২০ হাজার টাকা। এ হিসাবে অবসরের পর মো. আবদুল হামিদ মাসে ৯০ হাজার টাকা অবসর ভাতা পাবেন।
আইনে উল্লেখ আছে যে, কোনো ব্যক্তি রাষ্ট্রপতি পদে অধিষ্ঠিত হওয়ার আগে অন্য কোনো চাকরি বা পদ থেকে অবসরে গিয়ে অবসর ভাতা গ্রহণ করলে তিনি ওই অবসর ভাতা ও রাষ্ট্রপতির অবসর ভাতার মধ্যে তার ইচ্ছা অনুযায়ী যে কোনো একটি পাওয়ার যোগ্য হবেন। রাষ্ট্রপতি অবসর ভাতা গ্রহণ করে মারা গেলে তার স্ত্রী অথবা ক্ষেত্রমতে বিপত্নীক স্বামী তার প্রাপ্য অবসর ভাতার দুই-তৃতীয়াংশ হারে আমৃত্যু মাসিক ভাতা পাবেন।
আরও পড়ুন>> রাজনীতির ভাবনা নেই, হাওরে বেশি সময় কাটাবেন আবদুল হামিদ
এছাড়া অবসর ভাতা গ্রহণের প্রাধিকার অর্জন করা সাবেক কোনো রাষ্ট্রপতি অবসর ভাতার পরিবর্তে আনুতোষিকও (এককালীন অর্থ) গ্রহণ করতে পারবেন। এজন্য তাকে প্রাধিকার অর্জনের তারিখ থেকে এক মাসের মধ্যে অবসর ভাতার পরিবর্তে আনুতোষিক গ্রহণের ইচ্ছার কথা জানাতে হবে।
আনুতোষিকের পরিমাণ এক বছরের জন্য প্রদেয় অবসর ভাতার তত গুণ হবে, যত বছর কোনো ব্যক্তি রাষ্ট্রপতি পদে অধিষ্ঠিত থাকবেন। রাষ্ট্রপতি পদে অধিষ্ঠিত থাকার সময়সীমা নির্ধারণের ক্ষেত্রে আংশিক বছরকে পুরো বছর হিসেবে গণনা করা হবে।
কোনো ব্যক্তি ছয়মাসের বেশি রাষ্ট্রপতি পদে অধিষ্ঠিত থাকা অবস্থায় আনুতোষিক পাওয়ার অভিপ্রায় ব্যক্ত না করে অথবা অবসর ভাতা গ্রহণ না করে মারা গেলে তিনি আনুতোষিক পাওয়ার ইচ্ছা ব্যক্ত করেছেন বলে গণ্য হবে। তখন আনুতোষিকের টাকা মনোনীত ব্যক্তি অথবা উত্তরাধিকারীরা পাবেন।
আরও পড়ুন>> এ বিদায় আনন্দের
আইন অনুযায়ী বিদায়ী রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ একজন ব্যক্তিগত সহকারী ও একজন অ্যাটেনডেন্ট (সাহায্যকারী) পাবেন। দাপ্তরিক ব্যয়ও পাবেন, যার মোট বার্ষিক পরিমাণ সময়ে সময়ে সরকার নির্ধারণ করবে। একজন মন্ত্রীর প্রাপ্য চিকিৎসা সুবিধার সমপরিমাণ চিকিৎসা সুবিধাদি পাবেন সাবেক রাষ্ট্রপতি।
সরকারি অনুষ্ঠানে যোগদানের জন্য বিনামূল্যে সরকারি যানবাহন ব্যবহার, আবাসস্থলে একটি টেলিফোন সংযোগ পাবেন এবং সরকার সময়ে সময়ে নির্ধারিত সীমা পর্যন্ত এর বিল পরিশোধ থেকে অব্যাহতি দেবে।
সাবেক রাষ্ট্রপতি হিসেবে একটি কূটনীতিক পাসপোর্টও পাবেন মো. আবদুল হামিদ। তিনি দেশের ভেতর ভ্রমণকালে সরকারি সার্কিট হাউজ বা রেস্ট হাউজে বিনা ভাড়ায় অবস্থানের সুবিধা পাবেন।
আরও পড়ুন>> জাতির কাছে অপরিচিত ব্যক্তিকে রাষ্ট্রপতি করেছে সরকার: ফখরুল
আবদুল হামিদের স্ত্রীও আইন অনুযায়ী- চিকিৎসাসুবিধা, কূটনীতিক পাসপোর্ট ও দেশের ভেতরে সরকারি সার্কিট হাউজ বা রেস্ট হাউজে বিনা ভাড়ায় অবস্থানের সুবিধা পাবেন।
এসইউজে/এএএইচ