ভিডিও EN
  1. Home/
  2. জাতীয়

যাত্রীখরায় গাবতলীতে ‘জামাই আদর’

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক | প্রকাশিত: ০৪:৫৯ পিএম, ২১ এপ্রিল ২০২৩

দেশের আকাশে আজ চাঁদ দেখা গেলে আগামীকাল (শনিবার) ঈদুল ফিতর। অর্থাৎ রাত পোহালেই হতে পারে ঈদ। তবে চাঁদ দেখা না গেলে ঈদ হবে সোমবার (২৩ এপ্রিল)। ঈদের এক বা দুদিন আগেও রাজধানীর গাবতলী বাস টার্মিনালে যাত্রীখরা। এমন পরিস্থিতিতে অনেক বাস মালিকই কাউন্টার বন্ধ রেখেছেন। এর মধ্যে অল্পসংখ্যক যাত্রী গাবতলীতে এলে কাউন্টারের কর্মী ও বাসের সহকারীরা রীতিমতো ‘জামাই আদর’ করছেন। সহজেই যেমন মিলছে টিকিট, তেমনি যথাসময়ে গন্তব্যের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যাচ্ছে বাসগুলো। শুক্রবার (২১ এপ্রিল) গাবতলী বাস টার্মিনাল ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে।

জানা গেছে, একসময় গাবতলীয় টার্মিনাল হয়েই অধিকাংশ রুটে বাস চলাচল করতো। দিনাজপুর, ঠাকুরগাঁও, পঞ্চগড়, নীলফামারী, জয়পুরহাট, গাইবান্ধা, রংপুর, লালমনিরহাট, কুড়িগ্রাম, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, রাজশাহী, বগুড়া, নাটোর, পাবনাসহ উত্তরবঙ্গের জেলাগুলোর বাস এ টার্মিনাল হয়ে যাতায়াত করতো। আবার খুলনা, যশোর, সাতক্ষীরা, চুয়াডাঙ্গা, ফরিদপুর, মেহেরপুর, ঝিনাইদহ, রাজবাড়ী, নড়াইল, মাগুরা, পিরোজপুর, বরিশালের বাসও চলাচল করতো। এতে সারা বছরই রমারম অবস্থা ছিল গাবতলী বাস কাউন্টারে। আর ঈদযাত্রায় টার্মিনালে উপচেপড়া ভিড় দেখা যেতো।

gabtoli-1.jpg

পদ্মা সেতু চালু হওয়ায় দক্ষিণবঙ্গ এবং দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল; এমনকি উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের জেলাগুলোতে চলাচল করা বাসগুলোও এখন গাবতলী টার্মিনাল থেকে ছেড়ে যাচ্ছে না। পদ্মা সেতু হয়ে চলাচল করায় যাত্রী ও নিজেদের সুবিধার্থে এসব বাস সায়েদাবাদ, গুলিস্তান, মালিবাগ, যাত্রীবাড়ী থেকে ছেড়ে যাচ্ছে। ফলে গাবতলীতে ঈদের এক-দুদিন আগেও এখন চরম যাত্রীখরা।

ঢাকা-চুয়াডাঙ্গা-মুজিবনগর রুটে চলাচল করে নদিয়া পরিবহন। শুক্রবার (২১ এপ্রিল) এ পরিবহনের তিনটি ট্রিপ ছিল। তবে যাত্রীসংকটে তা বাতিল করে একটি ট্রিপ করা হয়েছে।

নদিয়া পরিবহনের কাউন্টার মাস্টার মো. সরফরাজ উদ্দিন জাগো নিউজকে বলেন, ‘সকাল সাড়ে ১০টা, বিকেল সাড়ে ৫টা ও রাত সাড়ে ৯টায় গাবতলী থেকে আমাদের তিনটি বাস চুয়াডাঙ্গার উদ্দেশ্যে ছেড়ে যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু দুই বাসের যাত্রী মিলছে না। তাই তিন বাসের বাসের যাত্রী এক বাসে নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। বাসটি রাত সাড়ে ১০টায় ছেড়ে যাবে।’

gabtoli-1.jpg

ঢাকা-চুয়াডাঙ্গা রুটে চলাচল করা দর্শনা ডিলাক্সের কাউন্টার মাস্টার তারেক দিনার বলেন, ‘যাত্রী পাচ্ছি না। তাই বাসও ছাড়তে পারছি না। আমাদের অবস্থা করুণ ভাই। সব যাত্রী পদ্মা সেতু হয়ে যাচ্ছে।’

হাতে টিকিট নিয়ে ঘুরছেন সৌরভ হোসেন। যাত্রীর জন্য হাঁকডাক করছেন তিনি। দু-একজন যাত্রী গাবতলীতে প্রবেশ করলেই ছুটে যাচ্ছেন। সৌরভ বলেন, ‘ভাই, ঈদের আগে এমন গাবতলী দেখছেন কখনো? একেবারে যাত্রী নাই। গাড়ি ছাড়তে পারি না যাত্রীর অভাবে।’

গাবতলী টার্মিনালে আসা যাত্রীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, মিরপুর এলাকায় বসবাস করা মানুষ এ কাউন্টারে আসছেন। বাড়ির পাশে গাবতলী হওয়ায় তারা এ কাউন্টার থেকে টিকিট নিয়ে গ্রামে ফিরছেন। মাগুরা, রাজবাড়ীর অনেক যাত্রী আবার ভেঙে ভেঙে বাড়ি যাচ্ছেন। তারা গাবতলী থেকে দূরপাল্লার বাসে না চড়ে পাটুরিয়াঘাট পর্যন্ত চলাচল করা বাসে যাচ্ছেন। সেক্ষেত্রে গাবতলী থেকে ২০০ টাকায় পাটুরিয়া চলে যাচ্ছেন তারা। ফেরিঘাট পার হয়ে ১৫০ টাকায় মাগুরা পৌঁছে যাবেন তারা। ফলে সাড়ে তিনশ টাকায় ঈদের মধ্যে নির্বিঘ্নে বাড়ি চলে যেতে পারছেন তারা। দূরপাল্লার বাসে গেলে খরচ হবে ৮০০ টাকা।

gabtoli-1.jpg

বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন রবিউল ইসলাম। সপরিবারে ঈদ করতে যাবেন চুয়াডাঙ্গার জীবননগরে। ছুটি পাবেন কি না, এমন সংশয়ে অগ্রিম টিকিট কিনে রাখেননি তিনি। ছুটি পেয়ে আজ বাড়িতে যাচ্ছেন। গাবতলীতে এসেই টিকিটও পেয়েছেন তিনি। এতে বেজায় খুশি রবিউল।

তিনি জাগো নিউজকে বলেন, ‘একসময় গাবতলীতে এমন সময়ে (ঈদের এক-দুদিন আগে) টিকিট পাওয়া অসম্ভব ছিল। কিন্তু এবার এসে দেখি টিকিটের কোনো অভাব নেই। পদ্মা সেতু আমাদের জন্য আসলেই বড় আশীর্বাদ। পদ্মা সেতুর কারণে দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া রুট অনেক স্বস্তিদায়ক হয়ে গেছে। গাবতলীতে এসেও সহজে টিকিট মিলছে।’

এমওএস/এএএইচ/এমএস