গরমে অবিরাম চলছে আখের রসের কল
‘অন্য সময় কখনো বিক্রি থাকতো, কখনো থাকতো না। কিন্তু গত সাতদিন থেকে ননস্টপ চলছে আখের রসের কল। দোকান খুললে চালু হয়, বন্ধের সময় থামে এ কল।’
ভ্যানের ওপর নিজের আখের রস বানানো কল (মেশিন) দেখিয়ে এভাবেই কথাগুলো বলছিলেন আমজাদ মিয়া। মধ্য বাড্ডা এলাকার আখের রস বিক্রেতা তিনি। এ তীব্র গরমে এখন আখের রসের চাহিদা খুব বেড়েছে।
তিনি বলেন, অন্য সময় নিজেই কল চালাতাম, বিক্রিও করতাম। এখন ইফতারের সময় এত ক্রেতা থাকে যে, সামাল দেওয়া যায় না। এজন্য একজন লোক রেখেছি। তিনি কল চালান, আমি বিক্রি করি।
শুধু আমজাদ মিয়া নয়, রাজধানীর আনাচে-কানাচে সব আখের রস বিক্রেতাদেরই বিক্রি বেড়েছে এ হাঁসফাস গরমের কারণে। সে কারণে এখন রাজধানীর সবখানেই এদের উপস্থিতিও চোখে পড়ছে।
দেখা গেছে, ঢাকার প্রায় প্রতিটি মোড়ে, বাজারে ও শপিং সেন্টারগুলোর সামনে এদের বেশি সংখ্যায় দেখা যায়। তীব্র গরমে পথচারীদের অনেকেই টাকা বাঁচাতেই হোক আর স্বাদের জন্য এ রস গলায় ঢেলে দেন।
তবে কোথাও কোথাও এ পানীয় নোংরা পরিবেশ কিংবা অস্বাস্থ্যকর পানি ব্যবহারের কারণে ক্ষতিকর হয়ে ওঠে। তবে এ গরমে সেসব কথা কারও কারও মনে আসলেও বরফ শীতল আখের শরবতের প্রচণ্ড লোভনীয় প্রশান্তির কথা মনে করে সেসব পান করছেন অনেকে।
আখের রসের দোকানে জামিলা পারভিন নামের একজন বলেন, চোখে পড়লে মন এড়িয়ে যেতে পারে না। যে গরম তাতে একটু প্রশান্তি পেতে সব সময় ঠান্ডা পানীয় খুঁজি। এর মধ্যে আখের রস সামনে পেলে মিস করি না।
রাজধানীতে এখন বেশিরভাগ বিক্রেতা গরমের কারণে বরফ মিশিয়ে রস বিক্রি করছেন। তবে এ বরফগুলো মাছের জন্য তৈরি। ফলে বরফ তৈরির পানি স্বাস্থ্যকর নয়।
অনেকে বাধ্য হয়ে জেনেও এমন বরফ দিয়ে রস খাচ্ছেন। সুমন হোসেন নামের একজন বলেন, জানি বরফ ভালো নয়, অন্য সময় খাই না। এখন যে গরম, বরফ না দিলে শান্তি মিলবে না। তৃষন্ঞা মেটাতে খাই।
এদিকে প্রতিটি দোকানে এখন বোতলে করে প্রচুর রস পার্সেল বিক্রি হচ্ছে ইফতারের জন্য। রস কিনতে এসে ফরিদা পারভিন বলেন, বোতলে ভরে রস নিয়ে ফ্রিজে ঠান্ডা করে ইফতারে খাই। অফিস থেকে ফেরার পথে এটা রুটিং হয়ে গেছে।
রাজধানীতে প্রতি গ্লাস আখের শরবত সাধারণত ২০ টাকায় বিক্রি হয়। তবে বেচা-কেনা বাড়লেও আগের মতো লাভ হয় না এমন জানিয়ে এরশাদ নামের এক শরবত বিক্রেতা বলেন, আখের দাম বাড়ার পর লাভ কমে গেছে। নিজের খরচও বেড়ে গেছে। পানি বরফ সবকিছুর দাম বেশি।
এদিকে গরমের কারণে এখন বিক্রি বাড়লেও সাধারণ সময়ে বিক্রি আগের মতো হয় না বলে জানিয়ে তিনি বলেন, মানুষ প্রতিদিনের খাবার খরচ জোগাতে হিমশিম খাচ্ছে। আখের শরবত পানে তো অনীহা দেখাবেনই। এখন সংসারের খরচ বেড়েছে, কিন্তু আয় বাড়েনি। ফলে মানুষের বাড়তি টাকা খরচে কষ্ট হয়।
গরমের তীব্রতা বেড়ে যাওয়ায় লোকজন শরবতে আকৃষ্ট হচ্ছে। তবে কিছু এলাকায় অখের শরবতে পানি মিশিয়ে ব্যবহার করা হচ্ছে ক্ষতিকর ঘনচিনি ও স্যাকারিন। মিষ্টতার জন্য আখের শরবতেও কৌশলে ব্যবহৃত হচ্ছে একই জিনিস। শরবত বিক্রেতারা অপরিচ্ছন্ন পাত্রে যাচ্ছেতাই উপায়ে পানি সংগ্রহ করে তার সঙ্গে বরফ মেশাচ্ছেন। তাই এসব বিষয়ে সচেতন হয়ে রস পানের জন্য পরামর্শ দিয়ে থাকেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা।
এনএইচ/এমআইএইচএস/এএসএম
সর্বশেষ - জাতীয়
- ১ চেষ্টা করেছে পুলিশ, তবে পর্যাপ্ত বুলেটপ্রুফ হেলমেট-জ্যাকেট নেই
- ২ মোল্লা কলেজ সেনাবাহিনীর নিয়ন্ত্রণে, বাইরে উৎসুক জনতা
- ৩ সিনিয়রদের জন্য জুনিয়র কর্মকর্তাকে ‘বলির পাঁঠা’ বানানো অগ্রহণযোগ্য
- ৪ সচিব ও গ্রেড-১ পদে পদোন্নতি পেয়ে অবসরে যাচ্ছেন দুই কর্মকর্তা
- ৫ বিনা সুদে লাখ টাকা ঋণ, অহিংস গণঅভ্যুত্থান আহ্বায়ক মোস্তফা আটক