বঙ্গবাজারে আগুন
বুধবার থেকে চৌকি বসিয়ে ব্যবসা করতে পারবেন ব্যবসায়ীরা
বঙ্গবাজার অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীরা আগামী বুধবার থেকে চৌকি বিছিয়ে ব্যবসা শুরু করতে পারবেন বলে জানিয়েছেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস।
রোববার (৯ এপ্রিল) বিকেলে নগর ভবনে বঙ্গবাজার সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ী নেতাদের সঙ্গে বৈঠকের পর তিনি সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।
শেখ তাপস বলেন, আমরা আগামীকাল (সোমবার) সকাল থেকে পুরোদমে পরিষ্কার কার্যক্রম শুরু করবো, যাতে দু-একদিনের মধ্যে সেখানে ব্যবসা পরিচালনার পরিবেশ তৈরি হয়। এরই মধ্যে তালিকা প্রণয়ন শুরু হলেও এখনও পূর্ণাঙ্গ তালিকা প্রণয়ন করা যায়নি। আশা করছি আগামীকালের মধ্যে পূর্ণাঙ্গ তালিকা সম্পন্ন হবে। এছাড়াও তাদের পুনর্বাসনের জন্য সব মহল থেকেই আমরা ইতিবাচক সারা পেয়েছি।
আরও পড়ুন>> ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের সহায়তায় এলো এক কোটি ৯০ লাখ টাকা)
তিনি বলেন, এরই মধ্যে দুই কোটি টাকা তহবিলে জমা হয়েছে। আগামী মঙ্গলবার আমাদের করপোরেশন সভা আছে। সেখানে আমরাও সিদ্ধান্ত নেবো। আমরাও এ তহবিলে অংশগ্রহণ করবো। যাতে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা পুনর্বাসিত হতে পারেন এবং আশা করছি আগামী মঙ্গলবার না হলেও বুধবার নাগাদ যেন তারা সেখানে চৌকি বিছিয়ে ব্যবসা শুরু করতে পারেন। এজন্য পরিষ্কার করার পরে সেই জায়গাটা সমতল করবো। পুরো ব্যবস্থাটি ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপেরেশন করবে। তারপর চৌকি বিছিয়ে তারা সেখানে ব্যবসা শুরু করতে পারবেন।
সমাজের সব স্তরের মানুষকে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের সহযোগিতায় এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়ে মেয়র বলেন, আমরা সবার কাছে আবেদন করছি, মানবিক দিক বিবেচনা করে, এত সংখ্যক ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীর জীবনযাপন বিবেচনা করে সবাই যেন এগিয়ে আসেন। এ তহবিলে যেন অংশগ্রহণ করেন। এটা যেহেতু রমজান মাস, তাই মানবতার খাতিরে সবাই যেন এগিয়ে আসেন। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, তিনি ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের পর্যাপ্ত অনুদানের ব্যবস্থা করবেন। আমরা আশাবাদী, যেভাবে আমরা সাড়া পাচ্ছি তাতে অচিরেই, হয়তো এ সপ্তাহের মধ্যেই পূর্ণাঙ্গ রূপ আমরা দিতে পারবো। সবাই মিলে তহবিল গঠন করবো। এতে আমাদের ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা আবার ঘুরে দাঁড়াতে পারবেন।
এসম ঢাকা-৮ আসনের সংসদ সদস্য রাশেদ খান মেনন বলেন, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন ও মার্কেট কমিটিগুলো ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের পুনর্বাসনের দায়িত্ব নিয়েছে। টেম্পোরারি ব্যবস্থা হচ্ছে। তহবিল যেটা হচ্ছে, সবাই আশাবাদী যে এটা একটা বড় আকার ধারণ করবে। আর প্রধানমন্ত্রী যখন এর সঙ্গে যুক্ত হবেন তা সবার জন্যই একটি বড় ধরনের সহায়তা হবে বলে আমরা আশা করি।
এসময় বারবার অগ্নিকাণ্ডের মতো দুর্ঘটনা এড়াতে করণীয় নিয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে রাশেদ খান মেনন বলেন, এখানে সবারই দায়িত্ব রয়েছে। যেমন সরকারের দায়িত্ব রয়েছে, করপোরেশনের দায়িত্ব রয়েছে তেমনি যারা মার্কেট পরিচালনা করেন তাদেরও দায়িত্ব রয়েছে। অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা থেকে শুরু করে অন্য দায়িত্ব রয়েছে তো বটেই। সেজন্য সচেতনতা হচ্ছে সবচেয়ে বড় বিষয়।
আরও পড়ুন>> রাজধানী সুপার মার্কেটটিও ঝুঁকিপূর্ণ: ফায়ার সার্ভিস
বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতির সভাপতি মো. হেলাল উদ্দিন বলেন, মেয়রের সঙ্গে কথা বলে আজ আমরা খুবই আনন্দিত। এত দ্রুত সিদ্ধান্ত পাবো আমরা বুঝিনি।
বৈঠকে অন্যদের মধ্যে কিশোরগঞ্জ-৫ আসনের সংসদ সদস্য আফজাল হোসেন, ডিএসসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মিজানুর রহমান, সচিব আকরামুজ্জামান, পরিবহন মহাব্যবস্থাপক মো. হায়দর আলী, অঞ্চল-১ এর আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা মেরীনা নাজনীন, প্রধান সম্পত্তি কর্মকর্তা রাসেল সাবরিন, প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা আরিফুল হক, ২০ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ফরিদ উদ্দিন আহম্মদ রতন, মহানগর শপিং কমপ্লেক্সের চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমান, মহানগরী ইউনিটের সভাপতি মো. লোকমান খান, মহানগর কমপ্লেক্সের ভাইস চেয়ারম্যান শেখ মো. শাকিল, বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতির মহাসচিব মো. জহিরুল হক ভূঁইয়া, বঙ্গবাজার কমপ্লেক্সের দোকান মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক জহিরুল ইসলাম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
এমএমএ/ইএ/জিকেএস