ভিডিও EN
  1. Home/
  2. জাতীয়

ভোটার না হওয়ায় মিলছে না মৌলিক সুবিধা

প্রকাশিত: ০৪:৫২ এএম, ০২ মার্চ ২০১৬

বাংলাদেশ-ভারতের মধ্যে ছিটমহল বিনিময় চুক্তির ৭ মাসেরও বেশি সময় পার হয়েছে। তবে এখনও ভোটার হতে পারেননি বিলুপ্ত ছিটমহলবাসী। জাতীয় পরিচয়পত্র না থাকায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঘোষণার পরও পাচ্ছেন না নাগরিক সেবা। এছাড়া আসন্ন ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে তাদের কোনো প্রতিনিধি অংশ নিতে পারছেন না। ফলে সাংবিধানিক অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন তারা।

ইসি কর্মকর্তারা জানান, নির্বাচন কমিশন উদ্যোগী হলে ছিটমহলবাসীকে (বিলুপ্ত) ভোটার করতে খুব বেশি সময় লাগার কথা নয়। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে সমন্বয় করে এতদিনে তাদের নাগরিকত্ব দিতে ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করতে পারত কমিশন। তবে সিটি, পৌর ও ইউপি নির্বাচন নিয়ে ‘ব্যস্ত’ থাকায় ছিটমহলবাসীকে ভোটার করার কথা ভুলেই গেছে ইসি।

এদিকে, নাগরিকত্ব না পাওয়ায় ভোটাধিকার, স্বাস্থ্যসেবা, ভূমি রেজিস্ট্রেশন, ব্যাংক অ্যাকাউন্ট, ড্রাইভিং লাইসেন্সসহ অন্যান্য মৌলিক সেবা বঞ্চিত হচ্ছেন তারা। নাগরিকত্বের সনদ না পাওয়ায় চাকরিতে আবেদনও করতে পারছেন না। পাচ্ছেন না পাসপোর্টও। এছাড়া শিশুদের স্কুলে ভর্তি হতে হচ্ছে মিথ্যা পরিচয়ে।  

তবে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে বলা হচ্ছে, নাগরিকত্বের বিষয়ে কাজ চলছে। এসব ছিটমহলবাসীর নাগরিকত্বের আদেশ শিগগিরই জারি করা হবে।

বিলুপ্ত দাসিয়ারছড়া ছিটমহলের অধিবাসী আলতাফ হোসেন জানান, এখনও ভোটার হতে পারেননি তারা। পাননি জাতীয় পরিচয়পত্র। আর নাগরিকত্ব না পাওয়ায় কোনো সুযোগ-সুবিধা পাচ্ছেন না। চাকরির জন্যও আবেদন করতে পারছেন না এ এলাকার মানুষ। জমি কেনাবেচার দলিল রেজিস্ট্রি হচ্ছে না। জন্ম নিবন্ধন সনদ না পাওয়ায় বিয়ে রেজিস্ট্রি করা যাচ্ছে না। জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধ কিংবা অন্য কোনো বিষয় নিয়ে আইন-আদালতে যেতে পারছেন না। জাতীয় পরিচয়পত্র না থাকায় ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খুলতে পারছেন না তারা।

এ বিষয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মোস্তফা কামাল বলেন, ছিটমহলবাসীদের তালিকা জেলা প্রশাসন থেকে পাঠানোর পরই মন্ত্রণালয়ে এ নিয়ে কাজ শুরু হয়েছে। জেলা প্রশাসনের তালিকা যাচাই-বাছাই শেষে জাতীয় পরিচয়পত্র দেয়ার বিষয়ে উদ্যোগ নেবে কমিশন।

বিলুপ্ত ছিটের বাসিন্দারা ইউপিতে ভোটাধিকার পাচ্ছে না
আসন্ন ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হলেও বাংলাদেশে অন্তর্ভুক্ত অধুনালুপ্ত ১শ` ১১টি ছিটমহলের বাসিন্দারা এবারের নির্বাচনে ভোটাধিকারের সুযোগ পাচ্ছেন না। ৬৮ বছরের বন্দী জীবনের অবসান ঘটলেও প্রত্যক্ষভাবে ভোটের সুযোগ এখনও পায়নি তারা। প্রায় ৭ মাস অতিবাহিত হলেও ভোটার করতে কোনো উদ্যোগ নেয়নি ইসি।

এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশনার মো. আবু হাফিজ বলেন, সরকারের প্রশাসনিক কাজগুলো শেষ হলেই ছিটমহল বাসিন্দাদের ভোটার করার উদ্যোগ নেয়া হবে। কমিশনও চায় দ্রুত সময়ের মধ্যেই বঞ্চিত এসব নাগরিককে জাতীয় পরিচয়পত্র দিতে। এ জন্য বিশেষ উদ্যোগ নেওয়া হবে।

অন্যদিকে, বাংলাদেশের সঙ্গে স্থলসীমান্ত চুক্তির পর পরই ভারত সরকার ৫১টি ছিটমহলের ১৫ হাজার নাগরিককে নাগরিকত্ব দিয়েছে। ছিটমহলের সমস্যা সমাধানে ৪১ বছর আগে ১৯৭৪ সালে দুই দেশের মধ্যে স্থলসীমান্ত চুক্তি স্বাক্ষর করা হলেও গেল বছর তা বাস্তবায়ন হয়।

গত আগস্টে ভারত ও বাংলাদেশের নাগরিকসহ ছিটমহল বিনিময় হয়। ভারত-বাংলাদেশের ১৬২টি ছিটমহলের ১১১টি ছিটমহল বাংলাদেশের মূল ভূখণ্ডের সঙ্গে যুক্ত হয়। কয়েকজন নাগরিক তাদের পছন্দমতো ভূখন্ড পরিবর্তন করেন। বাংলাদেশ কুড়িগ্রাম, লালমনিরহাট, নীলফামারী ও পঞ্চগড়ের ১১১টি ছিটমহল পায়। অন্যদিকে ভারত পায় তাদের অংশের কুচবিহার ও পশ্চিমবঙ্গের ৫১টি ছিটমহল।

এইচএস/আরএস/এএইচ/পিআর

আরও পড়ুন