ভিডিও EN
  1. Home/
  2. জাতীয়

ছিনতাই মামলায় গ্রেফতার, ফোনালাপে বের হয় হত্যার রহস্য

নিজস্ব প্রতিবেদক | প্রকাশিত: ০১:৪৩ পিএম, ২৯ জানুয়ারি ২০২৩

রাজধানীর যাত্রাবাড়ী এলাকায় একটি ক্লুলেস হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটনে বিভিন্ন মামলায় ছিনতাইকারীদের গ্রেফতারে অভিযান শুরু করে পুলিশ। পুরোনো একটি ছিনতাই মামলার ওয়ারেন্টভুক্ত আসামি মো. আরিফকে (২৮) গ্রেফতার করা হয়। পরে আরিফের সঙ্গে তার মায়ের ফোনালাপের সূত্রে বেরিয়ে আসে সেই হত্যাকাণ্ডের রহস্য।

রোববার (২৯ জানুয়ারি) দুপুরে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) অতিরিক্ত কমিশনার এ কে এম হাফিজ আক্তার এসব তথ্য জানান।

গত ২২ জানুয়ারি ভোরে যাত্রাবাড়ী থানার ধলপুর কমিউনিটি সেন্টারের পাশের সড়কে ছুরিকাঘাতে খুন হন খলু মিয়া (২৮)।

ঘটনার বিবরণে এ কে এম হাফিজ আক্তার বলেন, গত ২২ জানুয়ারি ভোরে যাত্রাবাড়ী থানা পুলিশ জানতে পারে, ধলপুর এলাকায় একজন অজ্ঞাত ব্যক্তি ছুরিকাঘাতে আহত হয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে (ঢামেক) ভর্তি আছে। এ খবরের ভিত্তিতে পুলিশ ঢামেকে পৌঁছালে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন বলে জানতে পারে।

আরও পড়ুন: রাজধানীর ২ হত্যা মামলার রহস্য উদঘাটন, গ্রেফতার ১৪

এরপর পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে রক্তাক্ত স্থানটি দেখতে পায়। ঘটনাস্থলের সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণে দেখা যায়, অভিযুক্ত গোলাপবাগ থেকে পাঁয়ে হেঁটে ধলপুর কমিউনিটি সেন্টারের সামনে দিয়ে যাওয়ার সময় ওতপেতে থাকা অজ্ঞাতনামা কয়েকজন তাকে উপর্যুপরি ছুরিকাঘাত করে দৌড়ে পালিয়ে যায়।

অভিযুক্তের কাছে পাওয়া জিনিসপত্র ও প্রযুক্তিগত সহায়তায় জানা যায়, তার নাম খলু মিয়া (২৮)। তিনি নারায়ণগঞ্জের রূপসী এলাকায় গার্মেন্টকর্মী হিসাবে কর্মরত ছিলেন। তিনি সেদিন গাইবান্ধা থেকে সোনালী পরিবহনে করে রাত আনুমানিক সাড়ে ৩টায় গোলাপবাগে পৌঁছান। সেখান থেকে পায়ে হেঁটে যাওয়ার সময় ছুরিকাঘাতের শিকার হন তিনি।

Police2.jpg

ডিএমপির এই কর্মকর্তা বলেন, ক্লুলেস এ ঘটনার তদন্তে নেমে বেশকিছু ছিনতাইকারীকে গ্রেফতার করেও কোনো কূলকিনারা পাচ্ছিল না পুলিশ। ২৬ জানুয়ারি একটি ওয়ারেন্টের ভিত্তিতে যাত্রাবাড়ী এলাকার নিজ বাসা থেকে আরিফকে গ্রেফতার করে জেলহাজতে পাঠানো হয়। গ্রেফতারের পর আরিফ তার মায়ের সঙ্গে ফোনালাপে জানায়, অন্যকোনো ঘটনায় তাকে গ্রেফতার করা হয়নি, আগের ওয়ারেন্টের ভিত্তিতে গ্রেফতার করা হয়েছে।

আরও পড়ুন: শিশু পরশমণি হত্যার ৪ বছর পর রহস্য উদঘাটন

গ্রেফতার আরিফের এই বক্তব্যটি সন্দেহজনক হওয়ায় খলু মিয়া হত্যা মামলায় তাকে শোন অ্যারেস্ট দেখিয়ে ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করে পুলিশ। এর ভিত্তিতে আরিফের তিনদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত। রিমান্ডে আরিফকে জিজ্ঞাসাবাদেই বেরিয়ে আসে খলু মিয়া হত্যাকাণ্ডের রহস্য। একপর্যায়ে খলু মিয়াকে খুনের দায় স্বীকার করেন আরিফ, পরে তার হেফাজত থেকে খলু মিয়ার খোয়া যাওয়া মোবাইল ফোনটি উদ্ধার করা হয়।

আরিফকে জিজ্ঞাসাবাদের ভিত্তিতে তিনি বলেন, একাধিক ছিনতাই মামলার ওয়ারেন্টভুক্ত আসামি হওয়ায় আরিফ দীর্ঘদিন ধরে তার নিজ বাসায় অবস্থান না করে পলাতক ছিলেন। কিন্তু খুনের ঘটনার পরপর পুলিশি তৎপরতা দেখে হত্যার ঘটনা থেকে নিজেকে রক্ষা করতে আগের ওয়ারেন্টে গ্রেফতার হতে সে বাসায় অবস্থান করছিল।

আরও পড়ুন: ভাইকে খুন করে নিজেই মামলার বাদী, হত্যার রহস্য উদঘাটন

ঘটনার সময় আরিফ অন্য সহযোগীদের নিয়ে একটি ছুরিসহ ধলপুর নতুন রাস্তায় একটি ব্যাটারির দোকানের সামনে দাঁড়িয়ে ছিল। অভিযুক্ত রাস্তা দিয়ে আসার পথে তারা তার গলায় ছুরি ধরলে তাদের প্রতিহত করার চেষ্টা করে। ঘটনার একপর্যায়ে তারা বুকে উপর্যপুরি ছুরিকাঘাত করে মোবাইল ও মানিব্যাগ নিয়ে দৌড়ে পালিয়ে যায়।

গ্রেফতার আরিফ নিজের দায় স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন। তার অন্য সহযোগীদের নাম-ঠিকানাও জানিয়েছেন। হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত অন্য আসামিদের গ্রেফতারের অভিযান অব্যাহত বলেও জানান তিনি।

আরএসএম/এমআরএম/এমএস