আমরণ অনশনে যাচ্ছেন সিএইচসিপি কর্মচারীরা
চাকরি জাতীয়করণ ও ট্রাস্ট আইন বাতিল করে রাজস্ব খাতে নেয়ার দাবিতে ডাক কমিউনিটি ক্লিনিক প্রকল্পের কর্মরত কমিউনিটি হেলথ কেয়ার প্রভাইডাররা (সিএইচসিপি) শহীদ মিনারে অবস্থান নিচ্ছেন।
মঙ্গলবার দিন ভর রাজধানীর মহাখালীস্থ প্রকল্প অফিস ঘেরাও ও প্রতীকী অনশন কর্মসূচি পালন করেন তারা। তবে সারা দিন কর্মসূচি পালন স্বত্ত্বেও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় কিংবা প্রকল্প কর্তৃপক্ষ দবি আদায়ের বিষয়ে কোনো আশ্বাস না দেয়ায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে অবস্থান নেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তারা।
বিকেলের পর থেকে বনানী থানা পুলিশও তাদের সরিয়ে দেয়ার চেষ্টা করতে থাকে। এজন্য জলকামান, সাজোয়া যান (এপিসি) নিয়ে অবস্থান নেয় পুলিশ।
অবশেষে পুলিশী বাধায় অনশন ও ঘেরাও কর্মসূচি শেষে সিএইচসিপি কর্মচারীরা পায়ে হেঁটে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের দিকে রওয়ানা হন। এতে শহীদ তাজ উদ্দিন স্মরনীসহ তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল সড়কে যানজট দেখা দেয়। সর্বশেষ সন্ধ্যা সোয়া ৬টার খবর অনুযায়ী, সিএইচসিপি কর্মচারীরা রমনা থানার সামনে দিয়ে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের দিকে যাচ্ছেন।
সিএইচসিপি কর্মচারীরা জানান, চাকরি জাতীয়করণ, ট্রাস্ট আইন বাতিল, সকল সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিতকরণ ও বৈষম্যের অবসানের দাবিতে মূলত: এই কর্মসূচি। সারাদেশ থেকে ১৩ হাজার সিএইচসিপি কর্মচারীর মধ্যে কমপক্ষে ১০ হাজার কর্মচারী এই কর্মসূচিতে অংশ নিতে ঢাকায় আসেন।
এর আগে একাধিকবার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে দাবি জানানোর পরও কোনো সাড়া না পাওয়ায় এই কর্মসূচি দিতে বাধ্য হয়েছেন বলে জানান তারা। একই দাবিতে গত সপ্তাহে ২ থেকে ৩ দিন করে কর্মবিরতি কর্মসূচিও পালন করেছেন কমিউনিটি ক্লিনিকের হেলথ কেয়ার প্রোভাইডাররা।
জানা গেছে, সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় এই হেলথ কেয়ারগুলোকে রাজস্ব খাত থেকে একটি ট্রাস্ট আইনে নেয়ার সিদ্ধান্ত নিচ্ছে।
সিএইচসিপির সদস্যরা জানান, জাতীয় বেতন কাঠামোয় সবার বেতন বাড়লেও তাদের বেতন বৃদ্ধি না করে ১৪ নম্বর গ্র্রেডেই রাখাতে তাদের মধ্যে ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছে। এছাড়া সময় মতো বেতন-ভাতা পান না বলেও অভিযোগ তাদের।
বাংলাদেশ কমিউনিটি হেলথ কেয়ার প্রভাইডার অ্যাসোসিয়েশনের দাবি আদায় বাস্তবায়ন কমিটির আহ্বায়ক শহীদুল ইসলাম জানান, আমাদের পুলিশ জোর করে মহাখালীতে অবস্থিত প্রকল্প অফিসের সামনে থেকে উঠিয়ে দিয়েছে।
তবে আমরা দাবি আদায়ের কর্মসূচিতে থেকে এবার পিছ পা হচ্ছি না। আমরা এখন পায়ে হেঁটে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের দিকে যাচ্ছি। সেখানে আমরণ অনশন কর্মসূচিতে যাচ্ছি আমরা। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় আমাদের কথা দিয়ে কথা রাখেনি। আমরা আর মিথ্যে আশ্বাসে প্রলুব্ধ হচ্ছি না। ন্যায্য দাবির বাস্তবায়ন দেখতে চাই।
সিএইচসিপি সূত্রে জানা গেছে, ২০১৩ সালে তাদের চাকরি জাতীয়করণের আশ্বাসে এসিআর লেখা ও সার্ভিস বুক খোলার নির্দেশ দেয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। অথচ এখন পর্যন্ত তা বাস্তবায়িত হয়নি। দেশের ১৩ হাজার ৬৮১টি কমিউনিটি ক্লিনিকে কর্মরত সিএইচসিপি কর্মবচারীরা এতে সুবিধা বঞিত হচ্ছেন।
১৯৯৬ সালে সরকার দেশে মোট ১৩ হাজার ৬৮১টি কমিউনিটি ক্লিনিক প্রতিষ্ঠা করে। সরকার পরিবর্তনের পর ২০০১ সালে তা বন্ধ করে দেয়া হয়। ২০০৮ সালে কমিউিনিটি ক্লিনিকগুলো ফের চালু হলে আশার আলো দেখেন তারা। সে সময় কমিউনিটি হেলথ প্রোভাইডারদের নিয়োগ দেয়া হয়। তখন থেকে তারা সীমিত সুযোগ-সুবিধার পরও স্বাস্থ্যসেবা দিয়ে দেশে মা ও শিশু মৃত্যুর হার শূন্যের কোটায় নামিয়ে আনতে চেষ্টা চলছে।
২০১৩ সালে চাকরি জাতীয়করণের আশ্বাস দেয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। এজন্য বার্ষিক গোপনীয় অনুবেদন (এসিআর) লেখা ও সার্ভিস বুক খোলার নির্দেশ থাকা স্বত্ত্বেও ৩ বছর ধরে দাবি আদায়ের বিষয়টি ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে।
এর আগে দু’বার প্রেসক্লাব ও কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে দাবি আদায়ে কর্মসূচি দেয়া হয়েছিল। সে সময় মন্ত্রণালয় দাবি পূরণের আশ্বাস দিয়ে চাকরিতে যোগদানের অনুরোধ করলে কর্মসূচি প্রত্যাহার করা হয়।
জেইউ/এসকেডি/আরআইপি
সর্বশেষ - জাতীয়
- ১ ৪৭তম বিসিএসের বিজ্ঞপ্তি এ সপ্তাহে, ক্যাডার-ননক্যাডারে পদ ৩৭০১
- ২ সংসার চালাতে হিমশিম খাচ্ছে নিম্ন আয়ের মানুষ, ওষুধে ব্যয় ২০ শতাংশ
- ৩ জাপান গার্ডেন সিটিতে বিষ প্রয়োগে কুকুর হত্যার অভিযোগে থানায় জিডি
- ৪ ‘রক্তের বিনিময়ে অর্জিত নতুন বাংলাদেশ যেন হারিয়ে না যায়’
- ৫ স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদরাসা জাতীয়করণের দাবি অত্যন্ত যৌক্তিক