ভিডিও EN
  1. Home/
  2. জাতীয়

গুলশানের ফজলে রাব্বি পার্ক চালু হবে কবে?

মুসা আহমেদ | প্রকাশিত: ০৮:০৩ পিএম, ০৮ জানুয়ারি ২০২৩

সমগ্র ঢাকা শহরের মতো গুলশানেও সবার জন্য উন্মুক্ত পার্ক বা বিনোদনকেন্দ্র কম। প্রাতঃভ্রমণ, সান্ধ্যভ্রমণ, সাইক্লিং করা, শিশুদের জন্য খোলামেলা খেলার জায়গা নেই বললেই চলে। গুলশান শুটিং ফেডারেশনের বিপরীত পাশে ডা. ফজলে রাব্বি পার্কটি কিছুটা প্রাণের সঞ্চার করছিল এলাকাবাসীর। প্রায় আড়াই বছর আগে শুরু হয় পার্কটির আধুনিকায়নের কাজ। বন্ধ রাখা হয় মানুষের আনাগোনা। কথা ছিল দশ মাসের মধ্যে সংস্কারকাজ শেষ হবে। অথচ কেটে গেছে আড়াই বছর। এলাকাবাসী আন্দোলন-সংগ্রাম করেও ফিরে পায়নি তাদের প্রাণের পার্কটি। এখনো খুঁড়িয়ে চলছে সংস্কারকাজ। ঠিক কবে ফের উন্মুক্ত করে দেওয়া হবে তাও ঠিক করে বলতে পারছেন না সংশ্লিষ্টরা।

স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, আধুনিকায়নের নামে আড়াই বছর ধরে পার্কটির চারপাশ টিন দিয়ে ঘিরে রাখা হয়েছে। ফলে প্রাতঃভ্রমণে প্রতিনিয়ত সমস্যায় পড়তে হচ্ছে এলাকার বাসিন্দাদের। প্রতিবাদে মানববন্ধন, বিক্ষোভও করেছেন স্থানীয়রা। লাভ হয়নি তাতেও। কাজটি দ্রুত সময়ের মধ্যে শেষ করতে সিটি করপোরেশনও তদারকি করছে না।

jagonews24

আরও পড়ুন>> দুই বছর বন্ধ গুলশানের ডা. ফজলে রাব্বি পার্ক 

তবে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের সংশ্লিষ্টরা জানান, পার্কটির কাজ গড়ে ৯৫ শতাংশ শেষ হয়েছে। আগামী ফেব্রুয়ারির মধ্যে পার্কটি উদ্বোধন করার প্রস্তুতি চলছে। তবে ২০২০ সালে কার্যাদেশ দেওয়ার পর করোনা পরিস্থিতির কারণে পার্কটির অবকাঠামো উন্নয়নের কাজ বন্ধ ছিল। এছাড়া যে পরিকল্পনা ও নকশা অনুযায়ী কাজ শুরু হয়েছিল, পরবর্তীসময়ে তা বেশ কয়েকবার পরিবর্তন হয়েছে। তাই দেরি হয়েছে সংস্কারকাজ শেষ করতে। কাজ শেষ হলেই পার্কটি নাগরিকদের জন্য খুলে দেওয়া হবে।

jagonews24

ডিএনসিসির প্রকৌশল বিভাগ সূত্র জানায়, ‘উন্মুক্ত স্থানসমূহের আধুনিকায়ন, উন্নয়ন ও সবুজায়ন’ প্রকল্পের আওতায় গুলশান-১ নম্বরের শহীদ ডা. ফজলে রাব্বি পার্ক সংস্কারে কার্যাদেশ দেওয়া হয় ২০২০ সালের জুলাইয়ে। এজন্য প্রাথমিক ব্যয় ধরা হয় ১১ কোটি ৫২ লাখ ৭২ হাজার টাকা। ২০২১ সালের এপ্রিলে কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল। তবে করোনার কারণে অনেকদিন কাজ বন্ধ থাকায় প্রকল্পের মেয়াদ আরও ছয় মাস বাড়ানো হয়েছে। এখন এই মেয়াদও শেষ। কিন্তু এখনো চলছে সংস্কারকাজ।

আরও পড়ুন>> নতুন রূপে সাজছে গুলশান লেক 

গুলশান শুটিং ফেডারেশনের বিপরীত পাশে শহীদ ডা. ফজলে রাব্বি পার্ক। সরেজমিনে দেখা যায়, পার্কটির প্রধান ফটকসহ চারপাশ সবুজ টিনে ঘেরা। ভেতরেও চারপাশে সীমানা প্রাচীরের খুঁটি, চলাচলের পথে টাইলস বসাচ্ছেন শ্রমিকরা। উত্তর পাশে নির্মাণ করা হচ্ছে বড় একটি ফটক। পশ্চিম পাশে ছোট পুকুর তৈরি করতে মাটি খুঁড়ে রাখা হয়েছে। ভেতরে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রাখা হয়েছে যন্ত্রপাতি ও মালামাল। ২০ থেকে ২৫ জন শ্রমিক কাজ করছেন। এমন চিত্র দীর্ঘদিন ধরেই।

jagonews24

পার্কটি খুলে দেওয়ার দাবিতে ২০২১ সালের ৩১ ডিসেম্বর মানববন্ধন করেছিলেন গুলশান, বাড্ডা ও নিকেতন এলাকার বাসিন্দারা। ওই মানববন্ধনে অংশ নিয়েছিলেন গুলশান-১ এর বাসিন্দা মাসুম হাসান। তিনি জাগো নিউজকে বলেন, পার্কের অবকাঠামো উন্নয়ন হোক, এটা সবাই চায়। কিন্তু এজন্য বছরের পর বছর পার্কটি বন্ধ রাখার কোনো মানে হয় না। দ্রুত কাজ শেষ করে এটি জনগণের জন্য খুলে দিতে হবে।

দক্ষিণ বাড্ডার বাসিন্দা আরাফাত বলেন, ঢাকায় শিশুদের খেলাধুলার তেমন কোনো পরিবেশ নেই। এর মধ্যে এই পার্কটি দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ করে রাখা হয়েছে। ভেতরে কী কাজ চলছে, বাইরে থাকে তা বোঝারও উপায় নেই। দ্রুত পার্কটি খুলে দিতে সিটি করপোরেশনকে তদারকি করতে হবে।

পার্কটির অবকাঠামো উন্নয়নে কাজ করছে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান মেসার্স এম আর কনস্ট্রাকশন। এই প্রতিষ্ঠানের ঠিকাদার মো. শাজাহান জাগোনিউজকে বলেন, পার্কটিতে প্রচুর গাছ রয়েছে। যথাসম্ভব গাছগুলো রক্ষা করেই পার্কের অবকাঠামো উন্নয়নকাজ করা হচ্ছে। এতে কাজ শেষ করতে কিছুটা সময় লাগছে।

jagonews24

তিনি বলেন, পার্কটিতে হাঁটাচলার জন্য ওয়াকওয়ে, সাইকেল ট্র্যাক, ফোয়ারা, শিশুদের খেলনা, শরীরচর্চার জন্য যন্ত্রপাতি, নারীদের বসার আলাদা স্থান নির্মাণ করা হচ্ছে। এছাড়া পার্কটিতে আরও গাছ লাগানোর পাশাপাশি থাকছে পানি নিষ্কাশন, উন্নত টয়লেট নির্মাণ, সুপেয় পানির ব্যবস্থা। সন্ধ্যার পর নির্বিঘ্নে চলাচলের জন্য পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থা থাকবে। আর বাইরে থেকে যাতে পার্কটি দৃশ্যমান হয় এবং শব্দ না আসে সেজন্য চারপাশে ১৫ ফুট উঁচু প্লাস্টিকের স্বচ্ছ দেওয়াল বসানো হচ্ছে।

এই পার্কের প্রকল্প পরিচালক ডিএনসিসির পরিবেশ, জলবায়ু ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সার্কেলের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মোহাম্মদ আবুল কাশেম। তিনি জাগোনিউজকে বলেন, পার্কটির সংস্কারকাজ শেষ পর্যায়ে। দ্রুততম সময়ের মধ্যে পার্কটি নাগরিকদের জন্য খুলে দেওয়া হবে।

কিন্তু ঠিক কবে খুলে দেওয়া হবে, স্পষ্ট করে বলতে পারেননি তিনি।

এমএমএ/এএসএ/জিকেএস