আরপিও সংশোধনী প্রস্তাব
তৃতীয়বারের মতো সরকারকে চিঠি ইসির
জাতীয় নির্বাচন সংক্রান্ত আইন ‘গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশে (আরপিও)’ সংশোধনী বিলের অগ্রগতি জানতে আবারও সরকারকে চিঠি দিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এ নিয়ে তৃতীয়বারের মতো সরকারকে চিঠি দিল সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানটি।
চিঠিতে আগামী ১৫ ডিসেম্বরের মধ্যে আরপিও সংশোধনীর খসড়া বিলের অগ্রগতি সম্পর্কে জানাতে ‘শেষবারের মতো’ সরকারের প্রতি অনুরোধ জানানো হয়েছে।
এতে বলা হয়েছে, অনুরোধ ও চাহিদা উপেক্ষিত হলে কমিশন দায়িত্ব পালনে আবশ্যক সক্ষমতা অর্জন করতে পারবে না। এতে নির্বাচন কমিশনের সক্ষমতা, স্বাধীনতা এবং সরকারের সদিচ্ছা প্রশ্নে জনমনে অনাকাঙ্ক্ষিত সংশয়ের সৃষ্টি হতে পারে।
নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের উপ-সচিব আব্দুল হালিম খান স্বাক্ষরিত এ সংক্রান্ত একটি চিঠি রোববার (২৭ নভেম্বর) সরকারের আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের লেজিসলেটিভ ও সংসদবিষয়ক বিভাগে পাঠানো হয়েছে।
দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে এর আগে গত ২৮ সেপ্টেম্বর ও ১০ অক্টোবর আরপিও সংশোধনী আনার প্রস্তাব দিয়ে সরকারকে একই ধরনের পৃথক তাগাদাপত্র দিয়েছিল ইসি। তাতে সাড়া না পেয়ে এবার তৃতীয়বারের মতো চিঠি পাঠালো কমিশন।
এবারের চিঠিতে বলা হয়েছে, নির্বাচন কমিশনের কাছে রিপ্রেসেন্টেশন অব দ্য পিপল অর্ডার, ১৯৭২ বা ‘গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশে (আরপিও)’ কিছু সংশোধন/সংযোজনের প্রয়োজনীয়তা অনুভূত হওয়ায় তার সংশোধন সংক্রান্ত খসড়া বিল তৈরি করে গত ৮ আগস্ট লেজিসলেটিভ ও সংসদ বিভাগকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য পাঠানো হয়। কিন্তু দীর্ঘ সময়েও খসড়া বিলের বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ বা সাধিত অগ্রগতি সম্পর্কে অবহিত না হওয়ায় ২৮ সেপ্টেম্বর লেজিসলেটিভ ও সংসদ বিষয়ক বিভাগকে জরুরি চিঠি দিয়ে অগ্রগতির বিষয়ে নির্বাচন কমিশনকে জানাতে অনুরোধ করা হয়। এরপরও ওই বিষয়ে ইসিকে অবহিত না করায় ১০ অক্টোবর এ বিষয়ে ইসিকে অবগত করতে আবারও বিশেষভাবে অনুরোধ করা হয়। এরপরও ওই বিষয়ে নির্বাচন কমিশনকে এখন পর্যন্ত অবহিত করা হয়নি।
সংবিধানের বিধান মতে, দায়িত্ব পালনে নির্বাচন কমিশনকে সহায়তা করা সব নির্বাহী কর্তৃপক্ষের কর্তব্য উল্লেখ করে রোববারের (২৭ নভেম্বর) চিঠিতে বলা হয়েছে, ‘গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশে (আরপিও)’ এর ৫ (২) অনুচ্ছেদেও দায়িত্ব পালনে নির্বাচন কমিশনকে সহায়তা দেওয়ার জন্য সরকারের সব নির্বাহী কর্তৃপক্ষকে সুস্পষ্ট নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। দীর্ঘ ৩ মাস ১৫ দিনের বেশি সময় অতিবাহিত হওয়া এবং বারবার পত্র মারফত অনুরোধ করা সত্ত্বেও লেজিসলেটিভ ও সংসদ বিষয়ক বিভাগ উল্লিখিত বিলের বিষয়ে নেওয়া ব্যবস্থা বা অগ্রগতি সম্পর্কে কোনো তথ্য আজ পর্যন্ত কমিশনকে জানায়নি।
আইন মন্ত্রণালয় রাষ্ট্র এবং সরকারের নির্বাহী বিভাগের একাংশ উল্লেখ করে চিঠিতে আরও বলা হয়, দায়িত্ব পালনে নির্বাচন কমিশনকে সহায়তা করা সাংবিধানিক ও সংবিধিবদ্ধ দায়িত্ব। নির্বাচন কমিশন মনে করে সংবিধান ও আইনের সুস্পষ্ট বিধানের ব্যত্যয়ে কমিশনের যাচিত অনুরোধ ও চাহিদা উপেক্ষিত হলে কমিশন স্বীয় দায়িত্ব পালনে আবশ্যক সক্ষমতা অর্জন করতে পারবে না। তাছাড়া, এতে নির্বাচন বিষয়ে কমিশনের সক্ষমতা, স্বাধীনতা এবং সরকারের সদিচ্ছা প্রশ্নে জনমনে অনাকাঙ্ক্ষিত সংশয়ের উদ্রেক হতে পারে।
এইচএস/এমকেআর/জিকেএস