বীর মুক্তিযোদ্ধার সমাধি সংরক্ষণে অবহেলা, সংশ্লিষ্টদের শাস্তি দাবি
শহীদ মুক্তিযোদ্ধা এবং অন্যান্য বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সমাধিস্থল সংরক্ষণ কাজে অবহেলা করায় ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছে সংসদীয় কমিটি। একই সঙ্গে সমাধির বাউন্ডারি নির্মাণ ও নামফলক স্থাপনে ক্রটি শনাক্ত করে প্রকল্প সংশ্লিষ্টদের দায়িত্বে অবহেলার জন্য কারণ দর্শানোর নোটিশ পাঠানোর সুপারিশ করা হয়েছে। এছাড়া দায়ী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনানুগ শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতে মতামত দিয়েছে কমিটি। নামফলক নির্মাণ প্রকল্পটি কমনওয়েলথ ওয়্যার সিমেট্রি’র আদলে করারও সুপারিশ করা হয়।
বৃহস্পতিবার (১৭ নভেম্বর) জাতীয় সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির ৩২তম বৈঠকে এই সুপারিশ করা হয়।
জানা যায়, মুক্তিযোদ্ধাদের সমাধিস্থল সংরক্ষণ সংক্রান্ত তিন বছর মেয়াদি একটি প্রকল্পের প্রায় আড়াই বছর পেরিয়েছে। এ সময়ে মাত্র ৪৩ জন বীর মুক্তিযোদ্ধার সমাধি সংরক্ষণের কাজ শেষ করতে পেরেছে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়। এর বাইরে ১১৪টির কাজ এগিয়েছে। যদিও প্রকল্পের আওতায় ২০ হাজার বীর মুক্তিযোদ্ধার সমাধি সংরক্ষণের কথা।
আজকের বৈঠকে এ নিয়ে আলোচনা করে কমিটি। এতে বিগত বৈঠকের সিদ্ধান্তসমূহ বাস্তবায়নের অগ্রগতি পর্যালোচনা করা হয়। এছাড়া দেশের কয়েকটি এলাকায় বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সমাধির নামফলকের লেখা মুছে যাওয়া এবং সমাধির দেওয়াল ভেঙে পড়ার বিষয়ে সরেজমিনে তদন্ত করে প্রতিবেদন দিতে গঠিত সাব-কমিটি বাতিল করে সংসদীয় কমিটির সদস্যদের সমন্বয়ে নতুন সাব-কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত হয়। একই সঙ্গে রাজধানী সুপার মার্কেট উন্নয়ন এবং গুলিস্তান শপিং কমপ্লেক্স বিষয়ে বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা কল্যাণ ট্রাস্ট ও ডেভলপার প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তি বাস্তবায়নের অগ্রগতি সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা হয়।
বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা কল্যাণ ট্রাস্টের আওতাভুক্ত গুলিস্তান শপিং কমপ্লেক্সে যারা চুক্তির শর্ত ভঙ্গ করে দোকান পরিচালনা এবং অবৈধভাবে মামলা দায়ের করে হয়রানির চেষ্টা করছেন, তাদেরকে উচ্ছেদ করে কঠোর আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করা হয় বৈঠকে। একই সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধা কল্যাণ ট্রাস্টের মামলা পরিচালনাকারী আইনি উপদেষ্টার নিয়োগপত্র অবিলম্বে বাতিলের সুপারিশ করা হয়।
‘অসচ্ছল বীর মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য আবাসন’- শীর্ষক বীরনিবাস নির্মাণ প্রকল্পটি স্থানীয় পর্যায়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তারা মনিটর করবেন। একই সঙ্গে তারা ভিজিট বই সংরক্ষণ করবেন বলেও মতামত ব্যক্ত করে কমিটি।
বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন কমিটির সভাপতি শাজাহান খান। এতে কমিটির সদস্য মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক, সংসদ সদস্য মেজর (অব.) রফিকুল ইসলাম বীর উত্তম এবং মোছলেম উদ্দিন আহমদ অংশগ্রহণ করেন।
এ সময় মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব, অতিরিক্ত সচিব, বিভিন্ন সংস্থার প্রধানসহ মন্ত্রণালয় এবং সংসদ সচিবালয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
এইচএস/কেএসআর/এমএস