ভিডিও EN
  1. Home/
  2. জাতীয়

‘আমরা সিরিয়া থেকে এসেছি, একটু সহযোগিতা করুন’

নিজস্ব প্রতিবেদক | প্রকাশিত: ০৯:১৪ পিএম, ১৪ নভেম্বর ২০২২

সোমবার সন্ধ্যা ৭টার দিকের ঘটনা। এশার নামাজের পর রাজধানীর সেগুনবাগিচা নুর মসজিদের সামনে মানুষের জটলা দূর থেকে চোখে পড়ে। একটু এগিয়ে গিয়ে দেখা যায়, সেখানে যুদ্ধবিধ্বস্ত সিরিয়া থেকে আসা একটি পরিবারের একজন কর্তাব্যক্তি মুসল্লিদের কাছ থেকে সাহায্য নিচ্ছেন। সঙ্গে তার স্ত্রী ও তিন শিশুসন্তান।

হাতে প্ল্যাকার্ড নিয়ে দাঁড়ানো সেই পরিবারকে ঘিরে সেখানে বহু মানুষের ভিড়। প্ল্যাকার্ডে লেখা- ‘আমরা সিরিয়া থেকে এসেছি। আমাদের দেশে যুদ্ধ চলছে। আমার পরিবার এবং সন্তানরা আমার সাথে আছে। আমি মুসলিম ভাইদের কাছে সাহায্য চাই। আমাকে আল্লাহর রহমতের দিকে তাকিয়ে একটু সহযোগিতা করুন। আল্লাহ আপনাদের সবার মঙ্গল করুন।’

হাতে একটি শপিং ব্যাগ নিয়ে মুসল্লিদের দেওয়া সাহায্যের অর্থ সংগ্রহ করছিলেন জন্মভূমি ছেড়ে আসা পরিবারের ওই কর্তাব্যক্তিটি। পাশে দু-তিন বছরের কন্যা সন্তানকে কোলে নিয়ে দাঁড়ানো স্ত্রী। সঙ্গে আরও দুই ছেলে-মেয়ে। তাদের বয়সও অনুমানিক সাত-আট বছরের মতো।

তবে ওই পরিবারটির কোনো সদস্য ইংরেজি বলতে পারেন না। তারা শুধু আরবি জানেন। সে কারণে কেউ তাদের সঙ্গে স্বাচ্ছন্দ্যে কথা বলতে পারছেন না।

কিছুক্ষণের মধ্যেই সেখানে হাজির হন জালাল মিয়া নামের এক মুসল্লি। তিনি আরবিতে তাদের সঙ্গে সামান্য কথা বলেন। জালাল মিয়া কয়েক বছর আরব দেশে ছিলেন। পরিবারটি তাকে জানায়, তারা গত এক সপ্তাহ আগে সিরিয়া থেকে এসেছেন। সেগুনবাগিচার আশপাশে একটি কক্ষে থাকছেন। তাদের জীবনে এখন ঘোর অমানিশা। বাঁচার জন্য তারা সাহায্য চাইছেন।

এরপর দোভাষির মাধ্যমে সাংবাদিক পরিচয়ে কথা বলতে চাইলে ওই পরিবারটি তাতে অস্বীকৃতি জানায়। শুধু জানিয়েছে, তারা সাহায্য চান। দেশে ফিরতে চান। তবে সেজন্য কোনো সহযোগিতার প্রয়োজন নেই। এর কিছুক্ষণ পরই পরিবারটি সেই মসজিদের সামনে থেকে চলে যায়।

এদিকে সিরিয়া থেকে আসা একটি পরিবার সম্পর্কে আহম্মদ ফয়েজ নামে এক সংবাদকর্মী ফেসবুকে ছবি পোস্ট করে লিখেছেন- এই দম্পতি দুটি শিশু বাচ্চা নিয়ে যুদ্ধবিধ্বস্ত সিরিয়ার রাজধানী দামেস্ক থেকে পালিয়ে এসেছেন বাংলাদেশে। আজকে একটা জরুরি কাজে এদিকে যাওয়ার পথে তাদের দেখলাম একটি মসজিদের সামনে বাংলায় লেখা প্ল্যাকার্ড হাতে মানুষের কাছে আর্থিক সাহায্য চাইছেন। তাদের সাথে কথা বলার চেষ্টা করলাম। দেখলাম চোখেমুখে ভীষণ আতঙ্ক। মুশকিল হলো তারা আরবি ছাড়া কোনো ভাষা জানেন না। স্থানীয় মসজিদের ঈমামের সাহায্যে অল্প কিছু কথা জানতে পেরেছি, কিন্তু মোটেও নিউজ করার জন্য পর্যাপ্ত নয়। এবং লোকটি এর চাইতে বেশি কথা বলতে আগ্রহীও ছিলেন না। তাই বিষয়টা ফেসবুকে শেয়ার করছি।

তিনি আরও লিখেন- ঢাকা বিমানবন্দর হয়ে দেশে প্রবেশ করেছেন পরিবারটি। তবে কবে এসেছেন তা জানতে পারিনি। ঢাকায় একটি হোটেলে উঠেছেন, তবে কোন হোটেলে তাও জানতে পারিনি। লোকটির নাম আহমেদ। তাদের বাড়িতে প্রচুর বোমা বিস্ফোরণ হয়েছে বলে পালিয়েছেন। যুদ্ধ বড় খারাপ জিনিস। মানুষকে মুহূর্তে রাস্তার ভিক্ষুক বানিয়ে দেয়, করে দেয় রিফিউজি। #দেখি_লিখি

এনএইচ/এমকেআর/এএসএম