পেপালে ১১২ টাকার ডলার ৮৫ টাকায় বিক্রি, গ্রেফতার ২
বিদেশিদের আইডেন্টিটি হ্যাক করে ভুয়া পেপাল অ্যাকাউন্ট খুলে অর্থ হাতিয়ে নেওয়া প্রতারক চক্রের দুই সদস্যকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।
ডিবি জানায়, গ্রেফতাররা পেপাল অ্যাকাউন্টের ডলার ফ্রিল্যান্সার ও জুয়াড়িদের কাছে সস্তায় বিক্রি করতেন। ১১২ টাকার ডলার ৮৫ টাকায় কিনে জুয়াড়িরা জুয়ার ডলারে বিনিয়োগ করতেন।
সোমবার (৩১ অক্টোবর) রাতে রাজধানী হাতিরঝিলের মহানগর প্রজেক্ট এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করে। গ্রেফতাররা হলেন- ফয়সাল শেখ (৩০) ও রাজ মোহাম্মদ শেখ (৩১)। এসময় তাদের কাছ থেকে ৯২ লাখ টাকা, ৫৯টি মোবাইলফোন, একটি পকেট রাউটার ও দুটি ল্যাপটপ উদ্ধার করা হয়।
মঙ্গলবার (১ নভেম্বর) দুপুরে রাজধানীর ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান গোয়েন্দা পুলিশ প্রধান মোহাম্মদ মোহাতহারুন অর রশিদ।
তিনি বলেন, গোয়েন্দা মতিঝিল বিভাগ গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানতে পারে হাতিরঝিলের মহানগর প্রজেক্ট এলাকায় কয়েকজন প্রতারক সদস্য বিদেশিদের পরিচয় চুরি করে পেপাল অ্যাকাউন্ট খুলে অবৈধভাবে অর্থ উপার্জন করছেন। যা বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক অনুমোদিত নয়। পরে অভিযান চালিয়ে চক্রের দুই সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়।
প্রতারণার কৌশল সম্পর্কে হারুন অর রশীদ বলেন, গ্রেফতাররা পারস্পরিক যোগসাজশে ভুয়া লিংক ব্যবহার করে বিদেশিদের তথ্য চুরি করতেন। এরপর সেসব তথ্য ব্যবহার করে পেপাল অ্যাকাউন্ট খুলে অবৈধভাবে অর্থ উপার্জন করে আসছিলেন। বাংলাদেশি ফ্রিল্যান্সাররা যে ইনকাম করেন তা অনেকেই সহজে ডলার থেকে টাকায় রূপান্তর করতে পারেন না। তারা তখন গ্রেফতারদের মাধ্যমে সস্তায় ডলার পেপাল অ্যাকাউন্টে স্থানান্তর করতেন।
তিনি আরও বলেন, গ্রেফতাররা পেপাল অ্যাকাউন্টের ডলার আবার জুয়াড়িদের কাছে সস্তায় বিক্রি করতেন। ১১২ টাকার ডলার ৮৫ টাকায় কিনে জুয়াড়িরা জুয়ার ডলারে বিনিয়োগ করতেন। এতে করে ফ্রিল্যান্সাররা যেমন ন্যায্যমূল্য পাচ্ছেন না, তেমনি বাংলাদেশ সরকারও রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।
‘কখনো আবার গ্রেফতাররা পেপাল অ্যাকাউন্ট থেকে ডলার টাকায় রূপান্তর করতে নগদ, বিকাশ ও বিভিন্ন ব্যাংকের অ্যাকাউন্ট ও অ্যাপ ব্যবহার করতেন।’
এক প্রশ্নের জবাবে গোয়েন্দা প্রধান হারুন বলেন, বিদেশি আইডেন্টিটি চুরি করে তা ব্যবহার তো অবৈধ। পেপাল বাংলাদেশে ব্যবহারও অবৈধ। গ্রেফতার ফয়সাল শেখ নিজেই ৫৯টি মোবাইল ব্যবহার করেন। একেক মোবাইলে একেক লেনদেন হতো। যা এক রকম ডিজিটাল হুন্ডি।
তিনি আরও বলেন, গ্রেফতারদের বিরুদ্ধে মতিঝিল থানায় একটি মামলা করা হয়েছে। তাদের আমরা রিমান্ড চেয়ে আদালতে পাঠাবো। তাদের মতো আর কারা বাংলাদেশে বসে এরকম অপরাধ করছেন তা জানার চেষ্টা করবো। কিছু নাম এরই মধ্যে আমরা জেনেছি। আমরা সবাইকে আইনের আওতায় আনবো।
টিটি/আরএডি/এমএস