ভিডিও EN
  1. Home/
  2. জাতীয়

জীবনে কখনো নীতি-নৈতিকতার সঙ্গে আপস করিনি: মকবুল হোসেন

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক | প্রকাশিত: ০২:১৩ পিএম, ১৭ অক্টোবর ২০২২

মেয়াদ শেষ হওয়ার এক বছর আগেই অবসর দেওয়া তথ্য ও সম্প্রচার সচিব মো. মকবুল হোসেন বলেছেন, জীবনে কখনো নীতি-নৈতিকতার সঙ্গে আপস করিনি।

সোমবার (১৭ অক্টোবর) সচিবালয়ে নিজ দপ্তরে সাংবাদিকদের এ কথা জানান মকবুল হোসেন।

এরপর দুপুর দেড়টার দিকে তিনি সচিবালয়ে তার দপ্তরে আসেন। খবর পেয়ে সাংবাদিকরা যান তার কক্ষে। তিনি তার চেয়ারে না বসে পাশে দাঁড়িয়ে ৩০ মিনিটের মতো কথা বলেন সাংবাদিকদের সঙ্গে। কথা বলতে বলতে মাঝে মধ্যেই আবেগ তাড়িত হয়ে যাচ্ছিলেন।

আপনি কি মনে করতে পারছেন, কী কারণে এটি ঘটতে পারে। দুর্নীতির অভিযোগের কথাও শোনা যাচ্ছে— এ বিষয়ে মকবুল হোসেন বলেন, ‘আমার জানামতে (দুর্নীতির অভিযোগ) নেই। আমি যতদিন এখানে কাজ করেছি, সততার ও নিষ্ঠার সঙ্গে করেছি, সরকারকে সহযোগিতা করার চেষ্টা করেছি।’

তিনি বলেন, ‘আমার জানা নেই, আমার জ্ঞানের ভেতর নেই, আমার কোনো অপরাধ ছিল কি না বা কোন অপরাধের কারণে অবসরে দেওয়া হয়েছে, সেটি আমার জানা নেই। যেহেতু এটি সরকার পারেন, আইনের ভেতরেই পারেন সেজন্য এটি কার্যকর। আমি সরকার ও প্রধানমন্ত্রীর প্রতি খুবই শ্রদ্ধাশীল।’

অন্যান্য দলের সঙ্গে কানেক্টেড থাকার একটি অভিযোগ এসেছে। এ বিষয়ে আপনার বক্তব্য কী— এ প্রশ্নের জবাবে বিদায় নেওয়া সচিব বলেন, ‘এটি আপনারা সাংবাদিক হিসেবে অনুসন্ধান করতে পারেন। সরকারবিরোধী কোন অ্যাক্টিভিটিজের আমার কোনো সম্পৃক্ততা ছিল কি না। যদি থেকে থাকে সেটি আপনারা প্রচার করতে পারেন, আমার পক্ষ থেকে কোনো অসুবিধা নেই।’

আপনার কি সম্পৃক্ততা ছিল— জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘নিশ্চয়ই ছিল না। আমার আপন বড় ভাই আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ছিলেন। আমার ভাই আমার ফ্যামিলির। যদি ওখানকার এমপিকে জিজ্ঞেস করতেন, আমার রাজনৈতিক ব্যাকগ্রাউন্ড কি। তাহলে সবচাইতে ভালো। আমি হলে ছাত্রলীগের সহ-সভাপতিও ছিলাম।’

আরও পড়ুন>> সচিবকে অবসরে পাঠানোর কারণ জানি না: তথ্যমন্ত্রী

একটা কথা শোনা যাচ্ছে, মন্ত্রীর সঙ্গে আপনার একটা দূরত্ব তৈরি হয়েছিল। আপনি অনেক কাজেই মন্ত্রীকে অবহিত করেননি—এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘মানুষ অনেক কথাই বলে। অনেক কিছুই শোনা যায়। শোনা কথা বিশ্বাস না করাই ভালো। আমার পক্ষ থেকে মন্ত্রীর সঙ্গে কেন দূরত্ব থাকবে? আমরাতো সবাই মিলেই কাজ করি। দূরত্বের কথা কেন আসছে আমি জানি না। আমি উনাকে সম্মান করি।’

‘আমরা এখানে চেষ্টা করেছি, আমাদের অফিস টাইমের পরেও সরকারকে সহযোগিতা করার জন্য, এ মন্ত্রণালয়ের মানসম্মান-ইজ্জত বাড়ানোর জন্য আমি ব্যক্তিগতভাবে উদ্যোগী ছিলাম। আমি এমন কোনো দিন নেই যে ২ ঘণ্টা বেশি কাজ করিনি’ বলতে বলতে গলা ধরে আসে তার।

এরপর বলেন, ‘আমি একটি কথা শুধু বলতে পারি, জীবনে কখনো নীতি-নৈতিকতার সঙ্গে কম্প্রোমাইজ (আপস) করিনি। এ রকম একটি অবস্থার জন্য প্রস্তত ছিলেন না। কারো বিরুদ্ধে কোনো অনুযোগ নেই বলেও এ সময় জানান বিদায়ী সচিব।

আপনি লন্ডনে গিয়েছিলেন। সেখানে গিয়ে কারো সঙ্গে বৈঠক করেছেন বলে একটা কথা শোনা যাচ্ছে— এ বিষয়ে সচিব বলেন, ‘আমরা লন্ডনে গিয়েছি গত মার্চ মাসে। আমরা একটা টিম নিয়ে গিয়েছিলাম। সেখানে আমাদের আশিকুন্নবী আছেন, আমাদের প্রেস। তাকে জিজ্ঞাসা করেন তাহলে বিষয়টি পরিষ্কার হয়ে যাবে।’

বিএনপির ভাইস-চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সঙ্গে হয়তো আপনারা যোগাযোগ তৈরি হয়েছে বলা হচ্ছে— এ বিষয়ে তিনি বলেন, ‘হয় কি হাতি যখন খাদে পড়ে, চামচিকাও লাথি মারে- এমন একটা কথা আছে না। সেটা তো মার্চ মাসে হয়েছে। এখন সেই প্রশ্নটা আসে কী করে। আমি তারেক রহমানকে কোনো দিন দেখেছি বলে মনে হয় না। তারেক রহমানকে দেখার ইচ্ছাও আমার নেই।’

যেসব অভিযোগ এসেছে, সেগুলো বস্তুনিষ্ঠ হলে তা প্রকাশ করার অনুরোধও জানান মকবুল হোসেন। তিনি বলেন, ‘যদি প্রমাণ হয় বিএনপির সঙ্গে আমার যোগাযোগ ছিল আমি যেখানে থাকি না কেন আমাকে আসামির কাঠগড়ায় দাঁড় করাবেন।’

‘যে সারাজীবন একটাকে বিলং করলো, যে বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ধারণ করে, সে বিএনপির লোকের সঙ্গে কানেকশন রাখবে, এটা হয় না। এটা হতে পারে?’

মকবুল হোসেন বলেন, ‘কারণটা আমি জানি না কেন আমাকে অবসরে পাঠানো হলো। কিন্তু সরকারের এ রাইট আছে। এ বিষয়ে কথা বলার কোনো সুযোগ নেই। এ বিষয়ে অতৃপ্তি দেখানোর কোনো সুযোগ নেই।’

তিনি আরও বলেন, ‘প্রত্যেকটি মানুষ নিজেই সবচেয়ে বড় বিচারক। সুতরাং আমি সেই বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড়াতে সবসময় প্রস্তুত।’

আরএমএম/এমএএইচ/জেআইএম