ভিডিও EN
  1. Home/
  2. জাতীয়

শরীফকে দুদকের চাকরিতে ফেরানোর দাবিতে চট্টগ্রামে মানববন্ধন

নিজস্ব প্রতিবেদক | চট্টগ্রাম | প্রকাশিত: ০৪:১২ পিএম, ১৩ অক্টোবর ২০২২

দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চাকরিচ্যুত উপ-সহকারী পরিচালক মো. শরীফ উদ্দিনের চাকরি ফিরিয়ে দেওয়ার দাবিতে চট্টগ্রামে মানববন্ধন করেছেন স্থানীয় রহমানিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের বর্তমান ও সাবেক শিক্ষার্থীরা। শরীফ উদ্দিন এ বিদ্যালয়ের সাবেক ছাত্র।

বৃহস্পতিবার (১৩ অক্টোবর) দুপুরে চট্টগ্রাম-হাটহাজারি সড়কের বিবির হাটসংলগ্ন রহমানিয়া স্কুলের সামনে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।

বিদ্যালয়ের সিনিয়র সহকারী শিক্ষক মো. আলমগীরের সভাপতিত্বে মানববন্ধনে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন প্রধান শিক্ষক আবু তৈয়ব। এছাড়া সিনিয়র সহকারী শিক্ষক সজল আচার্য্য, নুর হোসেন, শিক্ষার্থী হাসান, রাহুল, জাবেদ, বাদশা, অপু, আকতারসহ সাবেক ও বর্তমান শিক্ষার্থীরাও বক্তব্য দেন।

প্রধান শিক্ষক আবু তৈয়ব বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঘোষিত দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স বাস্তবায়ন করতে গিয়ে দুর্নীতিবাজদের রোষানলের শিকার হয়েছেন শরীফ উদ্দিন। তিনি রহমানিয়া স্কুলের সাবেক ছাত্র। শরীফ একজন সৎ, যোগ্য, মেধাবী, সাহসী ও আপসহীন কর্মকর্তা এবং বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ার একনিষ্ঠ সৈনিক। কিন্তু দুর্নীতিবাজদের রোষানলে শরীফ উদ্দিনকে অসাংবিধানিক চাকরি থেকে অপসারণ করা হয়েছে।

jagonews24

তিনি আরও বলেন, শরীফ আমাদের স্কুলের মেধাবী ছাত্র ছিল। তাকে স্কুল থেকেই প্রতিবাদী ও সাহসী হিসেবে দেখেছি। চট্টগ্রামে চাকরিকালীন তার বিভিন্ন অভিযান, গ্রেফতার, মামলার বিষয়ে প্রায়ই পত্রিকায় সংবাদ প্রচারিত হতো। বিশেষ করে রোহিঙ্গা এনআইডি ও পাসপোর্ট, কর্ণফুলী গ্যাসের বিভিন্ন দুর্নীতি, স্বাস্থ্য খাতের দুর্নীতি, কক্সবাজারে সাড়ে তিন লাখ কোটি টাকার জমি অধিগ্রহণের দুর্নীতির বিরুদ্ধে শরীফের পদক্ষেপ সুধী মহলে বেশ প্রশংসা কুড়িয়েছে। তখন পত্রিকায় পাতা খুললে, টিভিতে শরীফের ভালো কাজের খবর প্রকাশ হলে শিক্ষক হিসেবে আমাদের বুকটা বড় হয়ে যেতো। কিন্তু ভাগ্যের নির্মম পরিহাস— প্রধানমন্ত্রীর জিরো টলারেন্স বাস্তবায়ন করতে গিয়ে তিনি প্রথমে বদলি, পদোন্নতি বঞ্চিত, হুমকি ও চাকরিচ্যুত হয়েছে।

তিনি প্রশ্ন রেখে বলেন, শরীফকে যে বিধিতে অপসারণ করা হয়েছে, সেটা তো বিচারাধীন। এ বিধিতে দুদক একজন কর্মকর্তাকে চাকরিচ্যুতি করা কি আদালত অবমাননায় পড়ে না? তার পরিবার রয়েছে। তার সামাজিক গ্রহণযোগ্যতা রয়েছে। গত ২০১১ সাল থেকে ওই মামলা চলমান, কবে নাগাদ শেষ হবে, তা নিশ্চিত নয়। একজন তরুণ কর্মকর্তার মেধা ও সময় এইভাবে নষ্টের ভার কে নেবে? আমরা তাকে চাকরিতে ফেরত চাই। আমরা চাই অসাংবিধানিক এ বিধি দ্রুত বাতিল করা হউক এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঘোষিত দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স বাস্তবায়নে শরীফকে অনতিবিলম্বে চাকরিতে পুর্নবহাল করা হোক।

চলতি বছরের ১৬ ফেব্রুয়ারি দুদকের উপসহকারী পরিচালক মো. শরীফ উদ্দিনকে চাকরি থেকে অপসারণ করা হয়। আর মো. শরীফ উদ্দিনকে অপসারণের প্রতিবাদে পরের দিন সংস্থাটির কর্মকর্তা-কর্মচারীরা দুদক প্রধান কার্যালয় চত্বরে মানববন্ধন করেন। এর আগে যে ধারায় শরীফকে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে, সেই বিতর্কিত ধারা বাতিলের দাবিতে দুদকের সচিব মো. মাহবুব হোসেনের একটি স্মারকলিপি পেশ করেন তারা। চাকরিচ্যুতির মাধ্যমে দুর্নীতিবাজদের পৃষ্ঠপোষকতা করা হয়েছে বলেও দাবি করা হয় সহকর্মীদের পক্ষ থেকে।

jagonews24

মূলত চট্টগ্রাম কার্যালয়ে কর্মরত থাকাকালে বেশ কিছু বড় দুর্নীতি মামলার তদন্ত কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। এরপরই একাধিক মহলের রোষানলে পড়েন বলে অভিযোগ ওঠে। চাকরিচ্যুত হওয়ার আগে সর্বশেষ গত ৩০ জানুয়ারি পরিবারসহ হত্যার হুমকি পান শরীফ। পরিবারসহ হত্যার হুমকি পাওয়ায় কর্ণফুলী গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আইয়ুব খান চৌধুরী ও তার সঙ্গীদের বিরুদ্ধে সিসিটিভির ফুটেজসহ চট্টগ্রামের খুলশী থানায় সাধারণ ডায়েরিও (জিডি) করেন।

কক্সবাজারে কয়েকটি মেগাপ্রকল্পে ভূমি অধিগ্রহণ বাবদ কয়েকশ কোটি টাকা আত্মসাৎ, চট্টগ্রাম মেডিকেলে অনিয়ম-দুর্নীতি, কর্ণফুলী গ্যাসে নিয়োগ দুর্নীতি, এনআইডি জালিয়াতি, রোহিঙ্গাদের ভোটার করা নিয়ে দুর্নীতি, ইয়াবা কারবারিদের সম্পদ গোপন ইত্যাদি। এসব মামলার সূত্র ধরেই আলোচিত-সমালোচিত হন শরীফ। অভিযোগ রয়েছে— এসব প্রভাবশালীদের নানামুখী চেষ্টায় তাকে চট্টগ্রাম থেকে বদলি করা হয় পটুয়াখালীতে। এরপর আটকে দেওয়া হয়েছিল পদোন্নতিও।

ইকবাল হোসেন/এমএএইচ/এমএস