ভিডিও EN
  1. Home/
  2. জাতীয়

ডিবি পুলিশ পরিচয়ে ডাকাতি করতেন তারা

নিজস্ব প্রতিবেদক | প্রকাশিত: ০১:৪৯ পিএম, ১১ অক্টোবর ২০২২

রাসেল মোল্লা। পেশায় একজন গাড়িচালক। এই পেশার আড়ালে ডাকাতদলের গোয়েন্দা হিসেবে কাজ করতেন। রাসেল ডাকাত সরদার সবুজের আদেশ অনুযায়ী বিভিন্ন ব্যাংক ও জনবহুল এলাকায় অবস্থান করে ব্যাংক থেকে মোটা অঙ্কের টাকা উত্তোলনকারী ব্যক্তিদের শনাক্ত করে অনুসরণ করেন। পরে ভিকটিমের বর্ণনা ও অবস্থান সম্পর্কে তাদের সমন্বয়ক মিন্টুকে জানান।

এরপর মিন্টু ও রাসেলের দেওয়া তথ্যে ভিকটিমের কাছে উপস্থিত হয়ে নিজেদের ডিবি পুলিশ পরিচয় দিয়ে মাইক্রোবাসে উঠিয়ে নিয়ে সর্বস্ব লুটে নিতো চক্রটি।

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন

রাজধানীর যাত্রাবাড়ী থেকে ভুয়া ডিবি পরিচয় দেওয়া ছয়জনকে গ্রেফতারের পর এসব তথ্য বেরিয়ে এসেছে।

ডিবি পুলিশ পরিচয়ে ডাকাতি করতেন তারা

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন

ভুয়া ডিবি পরিচয় দেওয়া একটি চক্র যাত্রাবাড়ী এলাকার বিভিন্ন ব্যাংক থেকে টাকা উত্তোলনকারী ব্যক্তি ও পথচারীদের মিথ্যা মামলা ও ভয়ভীতি দেখিয়ে ডাকাতি করার উদ্দেশ্যে রাজধানীর ধলপুর এলাকায় অবস্থান করছে- এমন সংবাদের ভিত্তিতে সোমবার (১১ অক্টোবর) রাতে র‌্যাব-১০ এর একটি দল ধলপুর কমিউনিটি সেন্টার এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করে র‌্যাব-১০।

গ্রেফতাররা হলেন- সবুজ খান, মিন্টু পাটোয়ারী, রাসেল মোল্লা, ইকবাল মিয়া, মনিরুল ইসলাম ও খোকন মিয়া।

বিজ্ঞাপন

এসময় তাদের কাছ থেকে ৩টি ভুয়া ডিবি পুলিশের জ্যাকেট, ২টি ওয়াকিটকি সেট, ১টি হাতকড়া, ১টি খেলনা পিস্তল, ১টি হ্যান্ড ফ্লাশ লাইট, ১টি পুলিশ মনোগ্রাম সংবলিত স্টিকার, ৭টি মোবাইল ফোন ও ১০ হাজার ৯৫০ টাকা জব্দ করা হয়।

মঙ্গলবার (১১ অক্টোবর) দুপুরে কারওয়ান বাজার র‌্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে র‌্যাব-১০ এর অধিনায়ক (সিও) অতিরিক্ত ডিআইজি মোহাম্মদ ফরিদ উদ্দিন এ কথা জানান।

তিনি বলেন, গ্রেফতাররা একটি সংঘবদ্ধ ডাকাত চক্রের সদস্য। তারা নিজেদের ডিবি পুলিশ পরিচয় দিয়ে রাজধানীর যাত্রাবাড়ী, গুলিস্তান, মতিঝিল ও বাইতুল মোকারমসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় ব্যাংক থেকে মোটা অঙ্কের টাকা উত্তোলনকারী ব্যক্তি ও বিভিন্ন প্রয়োজনে টাকা নিয়ে চলাচলকারী ব্যক্তিদের টাকা ও অন্যান্য মূল্যবান সম্পদ ডাকাতি করে আসছিলেন।

বিজ্ঞাপন

গ্রেফতাররা মূলত ব্যাংক থেকে টাকা উত্তোলনকারী ও টাকা বহনকারী ব্যক্তিদের টার্গেট করতেন। এই কাজের জন্য গ্রেফতার রাসেল ব্যাংক ও জনবহুল এলাকায় অবস্থান করে ভিকটিম শনাক্ত করে অনুসরণ করতেন এবং ভিকটিমের বর্ণনা ও অবস্থান সম্পর্কে তাদের সমন্বয়ক মিন্টুকে জানান। পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী মিন্টু ও তার অন্যান্য সহযোগী ডিবি পুলিশের জ্যাকেট সদৃশ পোশাক পরে ওয়াকিটকি ও হ্যান্ডকাপ নিয়ে ভাড়া করা মাইক্রোবাসে ভিকটিমকে নিজেদের ডিবি পুলিশের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তা হিসেবে পরিচয় দিতেন।

ডিবি পুলিশ পরিচয়ে ডাকাতি করতেন তারা

র‌্যাব-১০ এর অধিনায়ক ফরিদ উদ্দিন বলেন, ভিকটিম কিছু বুঝে ওঠার আগেই তাকে মাদককারবারি বা মামলার আসামিসহ বিভিন্ন অজুহাত দেখিয়ে তাদের সঙ্গে থাকা মাইক্রোবাসে উঠিয়ে মারধর করতেন এবং দ্রুত স্থান ত্যাগ করতেন। পরে ভিকটিমের কাছে থাকা টাকা, মোবাইল ও স্বর্ণালংকারসহ মূল্যবান সব জিনিসপত্র নিয়ে ভিকটিমকে সুবিধাজনক স্থানে ফেলে পালিয়ে যেতেন।

বিজ্ঞাপন

গ্রেফতার সবুজ খান ভুয়া ডিবি পুলিশ চক্রের মূলহোতা। তিনি ডাকাতি পরিচালনার জন্য প্রয়োজনীয় সরঞ্জামাদি (ডিবি পুলিশের জ্যাকেট, ওয়াকিটকি, হাতকড়া, খেলনা পিস্তল ইত্যাদি) সরবারহকারী হিসেবে কাজ করতেন। ডাকাত দল তার সরবারহকৃত সরঞ্জামাদি ব্যবহার করে দেশের বিভিন্ন এলাকায় ডিবি পুলিশ পরিচয়ে ডাকাতি করতো। সবুজ খানের বিরুদ্ধে যাত্রাবাড়ী ও পল্টন থানায় একই অপরাধে ৩টি মামলা রয়েছে।

গ্রেফতার মো. মিন্টু পাটোয়ারী সিএনজি অটোরিক চালান। এই পেশার আড়ালে তিনি বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে ঘুরে ডাকাতির জন্য তথ্য সংগ্রহ করতেন। তার দেওয়া তথ্য অনুযায়ী সুবিধাজনক সময় বাসা/দোকান/ব্যাংক/ব্যাংক থেকে টাকা উত্তোলনকারী ব্যক্তিদের পথরোধ করে তাদের সর্বস্ব লুটে নিতেন চক্রের সদস্যরা।

গ্রেফতার মো. রাসেল মোল্লা পেশায় গাড়িচালক। এর আড়ালে ডাকাতদলের গোয়েন্দা হিসেবে কাজ করতেন। তিনি ডাকাত সরদার সবুজের আদেশ অনুযায়ী বিভিন্ন ব্যাংক ও জনবহুল এলাকায় অবস্থান করে ব্যাংক থেকে মোটা অঙ্কের টাকা উত্তোলনকারী ব্যক্তিদের শনাক্ত করে অনুসরণ করতেন। এরপর ভিকটিমের বর্ণনা ও অবস্থান সম্পর্কে তাদের সমন্বয়ক মিন্টুকে জানাতেন। রাসেলের বিরুদ্ধে ফরিদপুরের বোয়ালমারী ও গোপালগঞ্জের কাশিয়ানি থানায় একাধিক মামলা রয়েছে।

বিজ্ঞাপন

ফরিদ উদ্দিন বলেন, গ্রেফতার ইকবাল মিয়া ডাকাতির জন্য সবুজের অন্যতম সহযোগী হিসেবে কাজ করতেন। তিনি প্রায় তিন বছর ধরে ডিবি পুলিশ পরিচয়ে ডাকাতির সঙ্গে যুক্ত। নিজ বাড়ি মাদারীপুর জেলার শিবচর থেকে ঢাকায় এসে ডাকাতি করে আবার শিবচর চলে যেতেন। তার বিরুদ্ধে বগুড়ার শেরপুর থানায় ১টি দস্যুতার মামলা রয়েছে।

গ্রেফতার মনিরুল ইসলাম পেশায় একজন দর্জি। গত এক বছর ধরে তিনি এই পেশা ছেড়ে ডাকাতদলের সঙ্গে যুক্ত হয়ে মিন্টুর অন্যতম সহযোগী হিসেবে কাজ করে আসছিলেন। এছাড়া তার বিরুদ্ধে বগুড়া শেরপুর থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে ধর্ষণ মামলা রয়েছে বলেও জানান র‌্যাব-১০ এর অধিনায়ক।

টিটি/ইএ/জেআইএম

বিজ্ঞাপন