দুর্গম অঞ্চলে জঙ্গি প্রশিক্ষণ, ‘পরিবার জানে সন্তান বিদেশে’
দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে নিরুদ্দেশ হওয়া তরুণের সংখ্যা ৫০ এর বেশি। এরা প্রায় দেড় মাস থেকে দুই বছরের বেশি সময় ধরে নিখোঁজ। তবে এদের মধ্যে কয়েকজনের পরিবার জানে যে, তাদের সন্তান চাকরির জন্য বিদেশে অবস্থান করছেন। তারা আবার নিয়মিত পরিবারকে অর্থও দেন। মূলত এদের মধ্যে অনেকে বিভিন্ন জঙ্গি সংগঠনের সঙ্গে জড়িত। তারা দেশের দুর্গম অঞ্চলে আত্মগোপনে থেকে প্রশিক্ষণ নিচ্ছেন বলে জানায় র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)।
র্যাব বলছে, পার্বত্য চট্টগ্রামে দুর্গম অঞ্চলে বিভিন্ন জঙ্গি সংগঠনের ছত্রছায়ায় আত্মগোপনে থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে সংগঠনের কার্যক্রম পরিচালনা করছেন নিখোঁজ তরুণরা। এ বিষয়ে পাওয়া প্রাথমিক তথ্যগুলো দেশের সব গোয়েন্দা সংস্থাসহ বিভিন্ন বাহিনীকে জানানো হয়েছে। বর্তমানে পার্বত্য চট্টগ্রাম এলাকায় সম্মিলিত অভিযান চলমান রয়েছে বলে জানায় র্যাব।
সোমবার (১০ অক্টোবর) দুপুরে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র্যাব মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন র্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।
তিনি বলেন, জঙ্গি সম্পৃক্ততায় কুমিল্লা ও দেশের অন্যান্য অঞ্চল থেকে বাড়ি ছেড়ে যাওয়ার সঙ্গে জড়িত সংগঠনের দাওয়াতি ও অন্যতম অর্থ সরবরাহকারী শাহ মো. হাবিবুল্লাহ ও বাড়ি ছেড়ে যাওয়া তিনজনসহ মোট পাঁচজনকে ঢাকার যাত্রাবাড়ী এবং কেরানীগঞ্জ থেকে গ্রেফতার করে র্যাব।
গত ২৩ আগস্ট কুমিল্লা সদর এলাকা থেকে আট তরুণের নিখোঁজের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় নিখোঁজের বিষয়ে ২৫ আগস্ট কুমিল্লার কোতোয়ালি থানায় সাধারণ ডায়েরি করা হয়।
এরপর র্যাব নিখোঁজের ঘটনায় ভুক্তভোগীদের উদ্ধারে ও জড়িতদের গ্রেফতারে গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ায়।
এরমধ্যে গত ১ সেপ্টেম্বর কুমিল্লা থেকে নিখোঁজ হওয়া আট তরুণের মধ্যে শারতাজ ইসলাম নিলয় (২২) রাজধানীর কল্যাণপুরে নিজ বাড়িতে ফিরে আসেন। নিলয় থেকে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে ৬ অক্টোবর মুন্সিগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জ ও ময়মনসিংহ থেকে জঙ্গি সংগঠনের দাওয়াতি, তত্ত্বাবধানকারী, আশ্রয় প্রদান কার্যক্রমের সঙ্গে যুক্ত তিনজন ও নিরুদ্দেশ চার তরুণসহ মোট সাতজনকে গ্রেফতার করে র্যাব। গ্রেফতাররা উগ্রবাদী সংগঠন সম্পর্কে তথ্য দেয় র্যাবকে।
এরই ধারাবাহিকতায় গতকাল রাতে র্যাব সদরদপ্তরের গোয়েন্দা শাখা ও র্যাব-১০ এর যৌথ অভিযানে যাত্রাবাড়ী ও কেরানীগঞ্জ থেকে শাহ মো. হাবিবুল্লাহ ওরফে হাবিব (৩২), নেয়ামত উল্লাহ (৪৩), মো. হোসাইন (২২), রাকিব হাসনাত ওরফে নিলয় (২৮) ও মো. সাইফুল ইসলাম ওরফে রণি ওরফে জায়দ চৌধুরীকে (১৯) গ্রেফতার করা হয়।
এসময় তাদের কাছ থেকে পাঁচটি উগ্রবাদী বই, প্রায় তিনশ লিফলেট এবং পাঁচটি ব্যাগ উদ্ধার করা হয়।
টিটি/জেডএইচ/জিকেএস