ভিডিও EN
  1. Home/
  2. জাতীয়

‘বিশুদ্ধ পানির সংকটে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত দেশের নারীরা’

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক | প্রকাশিত: ০৫:০৪ এএম, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২২

‘জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে দেশের পানিতে লবণাক্ততা বৃদ্ধি ও বিশুদ্ধ পানির সংকট বেড়েছে। আর এতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছেন আমাদের দেশের নারীরা।’

গত শনিবার ও রোববার (১৭ ও ১৮ সেপ্টেম্বর) দুই দিনের ‘বাংলাদেশ ইয়ুথকপ-২০২২' শীর্ষক ভার্চুয়াল প্রি-কপ সম্মেলনে তরুণ জনগোষ্ঠীর প্রতিনিধি জান্নাতুল মাওয়া এসব কথা বলেন।

বৈশ্বিক স্তরে জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে আলোচনাসহ এ বিষয়ে তরুণদের উৎসাহিত করতে অ্যাকশন এইড বাংলাদেশ ও ব্রাইটার্স সোসাইটি অব বাংলাদেশ যৌথভাবে এ সম্মেলনের আয়োজন করে।

সম্মেলনে মাওয়া বলেন, নারীর জলবায়ু ন্যায্যতা নিশ্চিত করতে হলে নারীদের অধিকার নিশ্চিত করতে হবে। এ দুটি বিষয় পারষ্পারিক সম্পর্কযুক্ত। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত নারীদের জন্য বিশেষ বরাদ্দ থাকা উচিত।

‘গত কপ-২৭ সম্মেলনে জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত নারীদের নিয়ে বিশেষ আলাপ ও তাদের অবস্থার উন্নতির লক্ষ্যে তেমন কোনো অগ্রগতি দেখা যায়নি। আগামী সম্মেলনে এ বিষয়টিকে গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করতে হবে।’  

আসন্ন কপ সম্মেলনে তরুণদের প্রতিনিধিত্ব করার আহ্বান জানিয়ে আন্তর্জাতিক শিশুশান্তি পুরস্কার বিজয়ী ও যুব আইকন গ্রেটাথুনবার্গ বিশেষ অতিথি হিসেবে বলেন, এ বিশ্বে ক্ষমতাধর যারা, তারাই জলবায়ুকে ধ্বংস করছে। গ্লোবাল নর্থের দেশগুলো ২০৫০ সালের মধ্যে জলবায়ু নিরপেক্ষ হওয়ার প্রতিশ্রুতি দিলেও বাস্তবে তার প্রতিফলন সীমিত।

‘তারা উদ্যোগী হলে কোটি কোটি মানুষের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে অবিলম্বে তাদের কার্বন নির্গমন কমিয়ে দিত। কিন্তু তারা উদ্যোগী নন, বরং তারা ইচ্ছা করে প্রয়োজনীয় পরিবর্তনগুলো ধীর গতিতে বাস্তবায়ন করছে। শুধুমাত্র নিজদের সুবিধা, ব্যবসা ও অতিরিক্ত মুনাফার জন্য তারা এমনটি করছে।

তিনি আরও বলেন, আমরা যদি আজকের মতো চলতে থাকি, তাহলে কপ-২৭ সম্মেলন তাদের জন্য বিশ্বকে দূষিত করার আরেকটি সুযোগ হবে। আমরা এর পুনরাবৃত্তি ঘটতে দিতে পারি না।

বিশেষ অতিথি হিসেবে বাংলাদেশে জাতিসংঘের নতুন আবাসিক সমন্বয়কারী জিন লুইস বলেন, আমরা যখন কথা বলছি, তখনও জলবায়ুর পরিবর্তন ঘটছে। প্রশমন ও খাপ খাওয়ানোর জন্য অনেক অনেক পরিকল্পনা ও জায়গা রয়েছে। তবে এখন আলোচনার চেয়ে পদক্ষেপ জরুরি। এ ক্ষেত্রে আমাদের অবশ্যই তরুণদের দৃষ্টিভঙ্গি জানতে হবে।

বাংলাদেশ সেন্টার ফর ক্লাইমেট চেইঞ্জ অ্যান্ড ডেভলপমেন্টের পরিচালক অধ্যাপক সালিমুল হক বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষেত্রে তরুণদের উদ্বেগের বিষয়গুলো কপ-২৭ সম্মেলনে তুলে ধরা যেতে পারে। আমি বিশ্বাস করি, বাংলাদেশের এ ইয়ুথ কপ জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ের নীতি-নির্ধারকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করবে।

সম্মেলনের সমাপনী অধিবেশনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ঢাকা-৯ আসনের সংসদ সদস্য সাবের হোসেন চৌধুরী বলেন, জলবায়ু পরিবর্তন হলো তরুণদের একটি এজেন্ডা, যার সমাধান তরুণদের দ্বারা ও তরুণদের জন্যই হবে।

‘তরুণদের সামনে থেকে নেতৃত্ব দেওয়ার উপযুক্ত সময় এসেছে। জলবায়ু সমস্যা সমাধানের ফ্রন্টলাইনার তরুণরা হলেও, প্রায়ই নীতি-নির্ধারণী পর্যায়ে তাদের উদ্বেগ প্রতিফলিত হয় না।’

তিনি আরও বলেন, আমরা তরুণদের কণ্ঠস্বর ও তাদের সুপারিশগুলোকপ সম্মেলনে তুলে ধরার চেষ্টা করি। আমরা তরুণদের সঙ্গে ক্রমান্বয়ে সম্পৃক্ত হচ্ছি।

এ সম্মেলনে বাংলাদেশসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের তরুণ প্রতিনিধিরা ছয়দফা দাবি তুলে ধরেন।

দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে- গড় তাপমাত্রা ১.৫ ডিগ্রির মধ্যে রাখা, জীবাশ্ম জ্বালানি না পুড়িয়ে নবায়নযোগ্য জ্বালানি ব্যবহার করা, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোকে ক্ষতিপূরণ দেওয়া।

দাবিগুলোর মধ্যে আরও রয়েছে- উন্নত দেশগুলোর বাসিন্দাদের জলবায়ু রক্ষার দায়িত্ব দেওয়া, জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে প্রভাবিত নারী-শিশুদের সুরক্ষা নিশ্চিত করা ও পর্যাপ্ত অর্থায়ন নিশ্চিত করাসহ অভিযোজনের জন্য প্রযুক্তিগত সহায়তা দেওয়া।

এফএইচ/এসএএইচ